হাতে ‘ক্যাশ’ রাখব না
উফ্, যা ঝামেলা হল এ বছর। পুরনো পাঁচশো আর হাজার টাকার নোট বাতিলের পর দিনের বাজার থেকে শুরু করে রিকশার ভাড়া দেওয়া, ধুর ধুর। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা আছে ঠিকই, কিন্তু তোলার উপায় নেই। ঘণ্টা তিনেক লাইন দিয়ে যদি কিছু টাকা তোলা যায়, তাতেই বা কী! বেশিটাই তো দু’হাজারের নোট। আরে, দেড়শো টাকার সব্জি কিনে দু’হাজারের নোট দেব নাকি! নতুন বছরে তাই টাকার লেনদেন ই-ওয়ালেট আর কার্ডে বেশি করব। পেটিএমের মতো কোনও ই-ওয়ালেট ইন্সটল করে নেব। সবাই যাতে অনলাইনে লেনদেন করে, সেটা বোঝাব। পরের বছর হাতে বেশি ‘ক্যাশ’ রাখব না।
টিভি কম দেখব
ছেলে-মেয়ে ক’দিনের জন্য এসেছিল বাড়ি। তারা নিউ জার্সি ফিরে যাওয়ায় বাড়ি খালি খালি। মনখারাপের এমন সময়, ‘জয়জয়ন্তী’ দেখে নিলে কেমন হয়! তবে টিভিতে নয়। হটস্টারে। পুরোনো প্রেমের কথা মনে পড়ে চোখে জল আসতেই পারে। তাতে কী! সন্ধেবেলা বাড়ি ফিরে টিভির রিমোট নিয়েও কাড়াকাড়ি করতে হবে না। বেটার হাফ যখন সিরিয়াল দেখছেন, ফোনের হটস্টার অ্যাপে ক্রিকেট ম্যাচটা দেখে নিলেও হল।
স্মার্টফোন ব্যবহার শিখে নেব
স্মার্টফোন আছে ঠিকই, কিন্তু তার পুরো ব্যবহারটা আর শিখে ওঠা হয়নি। ছবি তোলা, হোয়াটসঅ্যাপ আর ফেসবুক — ব্যস। তবে এ বছর আর শুধু এই তিনটেয় আটকে থাকব না। বুকমাইশো থেকে সিনেমার টিকিট, সুইগি দিয়ে খাবার, উবের-ওলাতে ট্যাক্সি বা মেকমাইট্রিপ থেকে ফ্লাইটের টিকিট কেটে চমকে দেব। সবটা নিজে না-শিখতে পারলে পরের প্রজন্মের কারওকে বলব শিখিয়ে দিতে। পাড়ার আড্ডায় প্রতিবেশীর ‘এ বাবা, এটা পারেন না’ টিটকিরি শুনব না। সামনের বছর ফোনের সঙ্গে নিজেও স্মার্ট হয়ে উঠব। ল্যান্ড ফোন থেকে মোবাইলে সড়গড় যখন হয়ে গেছি, এটুকু তো শিখেই নেব!
পার্টি করব মেপে
এমনিতেই ভুঁড়িটা বাড়ছে। তার ওপর এ দিক ও দিক গেলেই হাজার কয়েকের ধাক্কা। অর্থ সঙ্কটের আবহে বছরের শুরু থেকেই তাই পার্টিটা করব একটু মেপে। বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় দেখা না করে বরং আড্ডাটা হোক বাড়িতেই। মাত্রাতিরিক্ত বিলও দিতে হবে না, আবার বাড়ির খাবার খেলে শরীরটাও
ঠিক থাকবে।
একে পয়সাকড়ির এই অবস্থা, তার ওপর বাইরের জাঙ্ক ফুড বেশি খেলেই পেটের সমস্যা। কিন্তু পার্টি তো করতেই হবে, তাই নতুন বছরে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাগুলো হবে বাড়িতেই।
এই কয়েক মাস আগেও যাঁরা নিয়মিত হাজির হতেন শহরের নাইটক্লাবগুলোয়, তাঁদের গলাতেও আজকাল সতর্কতার সুর। বন্ধুরা তো ঠিক করেছে যে, আগামী কয়েক মাস মেপে খরচা করবে। তাই উইক-এন্ড পার্টিগুলো না হয় বাড়িতেই করলাম।
ভেবে দেখলাম বছরের শুরু থেকেই মেপে চললে, ক্যাশও থাকবে, অথচ পার্টিও থামবে না!
অ্যান্টি ফিট পোশাক কিনব
নতুন বছরে ভাবছি স্টাইলটা একটু পাল্টাব। এ বার অ্যান্টি ফিট ড্রেস কিনব দীপিকা পাড়ুকোনের মতো। তাতে লুকটাও বদলাবে আবার চাইলে পরে ফিটিং করিয়ে নিতে পারব। তবে পিঙ্ক আর রেড-য়ের শেডস বড্ড একঘেয়ে হয়ে গেছে। তাই নতুন বছরে সবুজ রঙের পোশাক কেনার প্ল্যান করেছি।
হেয়ার স্টাইলটাও বদলানোর কথা ভাবছি। নীল অথবা পার্পল কালার দিয়ে স্ট্রিকস করাব পার্লারে গিয়ে। মেক আপ-য়ের রং বদলে বন্ধুদের চমকে দেব। ফ্রুটি কালার যেমন ট্যাঞ্জারিন অরেঞ্জে সাজব। স্মার্ট লুক পেতে পাম রেড লিপসে পার্টি করব ভাবছি। কিন্তু আর্থিক সঙ্কটের জেরে সমস্যাটা এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তাই ভাবছি পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল না করে বাড়িতেই সারব। আর সপ্তাহে একদিন বডি মাসাজ করাব।