ভাস্কর্য: অ্যাকাডেমিতে প্রদর্শিত ভাস্কর্যটি প্রভাত মাঝি-র
সম্প্রতি ‘কলকাতা ভাস্কর’দের ২২তম বাৎসরিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হল অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে। এতে কিছু প্রথানির্ভর কাজ ছাড়াও বহু বিশিষ্ট শিল্পকর্ম রয়েছে, যা মনোমুগ্ধকর। প্রথমেই উল্লেখ্য, তরুণ ভাস্কর সুকান্ত চৌধুরীর একটি কাজ ‘থাবার ভেতরে’ যেটি এই বছরেই ‘ইয়ং স্কাল্পটর’ শীর্ষক পুরস্কারে যোগ্য রূপে স্বীকৃত। এতে মূর্ত হয়েছে উচ্ছেদের ভাবকল্পনা। কলকাতা এবং অন্যান্য শহরে ক্রমান্বয়ে আকাশচুম্বী বাড়িঘরের আবির্ভাবজনিত সাধারণ মানুষের জীবনধারণের সমস্যা এবং তারই সঙ্গে কীটপতঙ্গ, ব্যাং ইত্যাদি প্রাণিসমষ্টির বিলুপ্তি-বেদনার সুরটি ফুটে উঠেছে তাঁর কাজে। এঁরই অপর একটি শিল্পকর্ম ‘অচিন পাখি’ প্রশংসার দাবি রাখে। এখানেও নিহিত আছে প্রতিবাদের ভাষা।
এর পরই চোখ পড়ল চন্দন রায়ের ‘বাবু’ কাজটির উপর। এত সহজ সাবলীল ভঙ্গিতে বাবুর সেই চিরায়ত অভিব্যক্তিটি ফোটানো হয়েছে যা বিস্ময়কর। এটি ব্রোঞ্জের কাজ। সুব্রত বিশ্বাসের টেরাকোটায় দেওয়াল ভাস্কর্যটিও ভারী চিত্তাকর্ষক। ছোটবেলার স্মৃতিসমৃদ্ধ এই শিল্পকর্মটি দর্শককে আকৃষ্ট করে। সুব্রত পালের ‘মাছ’ শিল্পটি সংযুক্তির প্রক্রিয়ায় বানানো। কাঠ এবং ব্রোঞ্জের সমন্বয়। নিখুঁত প্রযুক্তি। অলংকরণ আছে। প্রবীণ শিল্পী প্রভাত মাঝির দুটি আলাদা মুখমণ্ডল দুই ভাবে করা। যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় ও প্রমাণ দেয়। শিল্পী কিঙ্কর সাহার ‘টরসো’ কাজটি ব্রোঞ্জে করা। আঙ্গিকে নতুনত্ব আছে। কাজটিতে উৎকর্ষের ছোঁয়া আছে। প্রবীর রায়ের ‘ড্রিম ইন মুনলিট নাইট’ দেওয়াল ভাস্কর্য। এই শিল্পীর ‘বাউলা’ চিরাচরিত বাউল যেন নন। যেন বীরভূমের গ্রামে-গঞ্জে কোনও বিদেশিনির প্রতিকৃতি।
ভাস্কর অনিল সেনের ‘প্রিন্সেস’ শিল্পকর্মটি কাঠ, ফাইবার গ্লাস এবং প্রিন্টের সমন্বয়ে দক্ষতার প্রমাণ দেয়। এ ছাড়া আছে শঙ্কর ঘোষের ভাস্কর্য। ব্রোঞ্জের কাজের মধ্যে একটি হচ্ছে ‘প্লে’। প্রবীণ শিল্পী তাপস সরকার।
বিগত তিরিশ বছরে বহু শহরেই তাঁর শিল্পকর্ম দর্শক দেখেছেন। তাঁর করা ‘দ্বারপাল’ বড়ই মনোহর। ভাস্কর সোমনাথ চক্রবর্তীর ‘টিউন অব লাভ’, ব্রোঞ্জের কাজ। কাজটি মনোহর। প্রেমের আর্তিটি বেশ প্রকটতা পেয়েছে।