অসময়ে মুটেগিরিও করেছেন

সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তীর বিচিত্র জীবনের অলিগলিতে হাঁটলেন দৌহিত্র শ্রীজাত

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ০৯:২০
Share:

খবর শুনে স্টেশন ডিরেক্টরের মাথায় হাত! গান গাইতে আসতে পারছেন না জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ গোস্বামী। অথচ আর কিছুক্ষণের মধ্যে আকাশবাণী থেকে তাঁর গান সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার কথা। আগে থেকে ঘোষণা করা আছে, সেইমতো অপেক্ষায় থাকবেন তামাম বাংলার শ্রোতারা।

Advertisement

এমন সময়ে এই খবরে মূহ্যমান হয়ে পড়াই স্বাভাবিক। হঠাৎ এক কর্মকর্তার খেয়াল পড়ল, একটি ছেলে আছে, যাকে তিনি মাঝেমধ্যেই গুনগুন করতে শুনেছেন।

ছেলেটি কমবয়সি, আকাশবাণীতে নিয়মিত তবলা বাজায়, ইতিমধ্যেই তার সাথসঙ্গত ও লয়জ্ঞানের খ্যাতি ওস্তাদ গাইয়েদের কানে পৌঁছেছে। তাঁরা আকাশবাণীতে সিটিং দিতে এসে খোঁজ করছেন সেই ছোকরা তবলিয়ার। কিন্তু সে–ছেলের গানের গলাও মন্দ নয় বলেই মনে হয়েছে সেই বয়স্ক কর্মকর্তার।

Advertisement

স্টেশন ডিরেক্টরকে তিনি জানালেন সে-কথা। প্রস্তাব বেশ অলীক হলেও, অভিজ্ঞ সেই মানুষটির কথায় আস্থা রেখে রাজি হলেন স্টেশন ডিরেক্টর মশায়।

শিশুপুত্র মানসের সঙ্গে তারাপদ চক্রবর্তী

ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া তখন উপায়ই বা কী? তরুণ সেই তবলিয়া কিন্তু দিব্যি রাজি হয়ে গেল প্রস্তাবে। সে-সময়ে জ্ঞান গোঁসাই-এর খ্যাতি আকাশছোঁয়া। তাঁর পরিবর্তে অখ্যাত গাইয়ে হিসেবে আকাশবাণীতে গাইতে বসা যে কত বড় পরীক্ষার শামিল, তা সহজেই অনুমেয়।

শুরু হল গান। মুহূর্তের মধ্যে স্টেশন ডিরেক্টর মশায় বুঝলেন, তাঁর কোনও ভুল হয়নি। অবিকল জ্ঞান গোঁসাই-এর গায়কিতেই গেয়ে চলেছে কমবয়সি সেই তবলিয়া, চোখ বন্ধ করলে তফাত বোঝার উপায় নেই একবিন্দু!

গান শেষ হওয়ার পর ছেলেটিকে জাপটে ধরে তারিফে ভরিয়ে দিলেন তিনি। আর ঘরে-বাইরে গান শুনে মোহিত হওয়া আকাশবাণীর সমস্ত শ্রোতাকেই চমকে দিয়ে ঘোষিত হল নতুন এক গাইয়ের নাম, তারাপদ চক্রবর্তী। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের ইতিহাসে ওই একটি দিনের গুরুত্ব অপরিসীম।

এই দৈব দুর্বিপাক না ঘটলে হয়তো আরও কিছু দিন সময় লেগে যেত তরুণ সেই শিল্পীকে চিনে নিতে। কিন্তু আকাশবাণীতে একজন তবলিয়া হিসেবে বহাল হওয়ার ঘটনাও সে-সময়ে তারাপদ’র কাছে দৈবের চেয়ে কিছু কম ছিল না!

যে-রুক্ষ প্রান্তর একা হেঁটে পেরোতে হয়েছে তাঁকে, যে-প্রতিকূল সমুদ্রের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে প্রত্যেক দিন, তার পর ওইটেই ছিল তার কাছে অত্যাশ্চর্যেরও বেশি কিছু।

গাইয়ে হিসেবে পরিচিত হওয়া বা প্রতিষ্ঠা পাওয়া তো অনেক দূরের ব্যাপার। যদিও, এ কথা পরে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি, খেয়ালের গাইয়ে হিসেবেই নিজের ভবিষ্যৎ তৈরি করতে চেয়েছিলেন বরাবর।

মুখচোরা ছেলেটির চোয়ালে, একেবারে প্রথম কৈশোর থেকেই ধরে রাখা ছিল সেই অদম্য জেদ।

দেশ ভাগ হওয়ার সময়ে ছাড়তে হয়েছিল ফরিদপুর জেলার ভিটেমাটি। কোটালিপাড়ার ছায়াঘেরা উঠোন ছেড়ে ঢুকে পড়তে হয়েছিল কলকাতার বিরাট অরণ্য-আস্তানায়, যেখানে সব কিছু এবং সকলেই তারাপদ’র অপরিচিত।

কেবল একটা বিষয় ছাড়া। গানবাজনা! কলকাতা তখন শাস্ত্রীয় সংগীতের মহাতীর্থ। সারা দেশের তাবড় গাইয়ে বাজিয়েরা হামেশাই কলকাতার শ্রোতাদের মাত করে দিয়ে যাচ্ছেন। সেই অসংখ্য শ্রোতার দলে কোনও রকমে নিজের নাম লিখিয়ে নিলেন এক চালচুলোহীন তরুণ তারাপদ।

টিকিট কাটার পয়সা নেই, তাই রাতের পর রাত নামজাদা আসরে শামিয়ানার বাইরে ব’সে পড়লেন কাগজ পেতে। শুরু হল শোনা। শোনা আর শুনতে শুনতে শেখা।

কে জানে, সেই সব জাগরণের রাত্রে তিনি কখনও এমন ভেবেছিলেন কি না যে, আর কিছু বছর পর তাঁর গানও শ্রোতারা ঠিক এইভাবেই শুনবেন!

শ্রবণ তাঁর এক গুরু ঠিকই, কিন্তু অপর গুরু অবধি পৌঁছতে কম বেগ পেতে হয়নি তারাপদকে।

দীর্ঘদিন জানালার বাইরে দাঁড়িয়ে শুনে শুনেই তালিম নিয়েছেন সেকালের গাইয়ে সাতকড়ি মালাকারের কাছে। সেই অর্থে, গুরুর সম্পূর্ণ অজান্তেই। ঠিক যেভাবে তালিম নিতেন একলব্য।

পণ্ডিত রবিশঙ্কর

তখন পেশা কী তারাপদ’র?

কখনও মুটেগিরি, কখনও বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল বিক্রি করা।

ভিটে নেই, ঠিকানা নেই, নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। কিন্তু দু’চোখে গানের স্বপ্নটুকু ধরে রেখেছেন প্রাণপণ। সাতকড়িবাবু অবশ্য বাকি শাগরেদদের বাঁচাতে গিয়ে দ্রোণসুলভ ব্যবহার করেননি, বরং একদিন যখন জানালার বাইরে আবিষ্কার করলেন নিভৃত ও নিবিষ্ট এই ছাত্রটিকে, ঘরে ডেকে এনে শোনাতে বললেন গান। তার পর, টেনে নিলেন বুকে।

তারাপদ’র তালিম অবশ্য আরও পরিপূর্ণ মাত্রা পেয়েছিল সংগীতাচার্য গিরিজাশঙ্কর চক্রবর্তীর হাতে, যিনি তারাপদকে নিজের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার বলে গিয়েছেন আমৃত্যু।

বিষ্ণুপুরের গায়নে এসে মিশেছিল কিরানার প্রভাব, আরও নানান শাখানদীর জল। সেভাবেই মোহনায় পৌঁছন তারাপদ।

কিন্তু সে তো শিক্ষার মোহনা। জীবন তাঁকে দেখিয়েছে আরও বহু ঘুরপথ, নানান চড়াই উতরাই। সে সবের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ অনামী, উদ্বাস্তু এক দরিদ্র বঙ্গসন্তান কীভাবে অবিসংবাদিত শিল্পী হয়ে উঠলেন, সে কাহিনি আজকের দিনে রূপকথাকেও হার মানাবে। জেদ যেমন ছিল শিখরে পৌঁছনোর, তেমনই প্রত্যয় ছিল নিজের অবস্থানে কায়েম থাকার। এই দুইয়ের মধ্যে সম্পর্ক যে অনেক সময়েই ব্যস্তানুপাতিক, তা মানতে চাইতেন না জেদি তারাপদ। কিন্তু সেই টানাপড়েনকে সঙ্গী করেই কলকাতা শহরকে নিজের অদ্বিতীয় পরিচিতি উপহার দিয়ে গিয়েছেন তিনি, পরিস্থিতির হাতে মার খেতে খেতে একদিন ঘুরে দাঁড়িয়ে ছিনিয়ে নিয়েছেন যাবতীয় প্রতিষ্ঠা।

সে সব আসরের কথা আজও নিশ্চয়ই মনে থাকবে হাতেগোনা কয়েক জন অভিজ্ঞ শ্রোতার, যেখানে তারাপদ চক্রবর্তী’র অব্যবহিত পরে মঞ্চে উঠে উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খান সাহেব বলছেন, ‘আজ তারাবাবু নে যো গানা সুনা দিয়া, উসকে বাদ গানা বহত মুশকিল হ্যায়। ফিরভি হম কোশিশ করেঙ্গে।’ ছদ্মবেশী বিনয় আর মেকি কথা বলার যুগটা তখনও আসেনি। স্বতঃস্ফূর্ত এই শৈল্পিক নতিস্বীকার কেবল তখনকার দিনেই হতো। শিল্পীদের সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো মানুষজন ছিলেন অনেকে, ছিলেন গ্রিনরুমে ভিড় করে শুনতে আসা আকুল শ্রোতার দলও।

তাঁদেরই কারও কারও হয়তো মনে থাকবে, এই শহরেরই এক আসরের গ্রিনরুমে তানপুরা বেঁধে তৈরি হচ্ছেন তারাপদ চক্রবর্তী। তিনি তখন খ্যাতি ও উপস্থাপনার মধ্যগগনে। মঞ্চে ওঠার আগে দেখে নিচ্ছেন বন্দিশ, খেলিয়ে নিচ্ছেন গলা। আর গ্রিনরুমের দরজার বাইরে, একা দাঁড়িয়ে কান পেতে আছেন খোদ উস্তাদ আমির খান সাহেব। পারস্পরিক নীরব শ্রদ্ধার এই অকৃপণ লেনদেন কবেই শেষ হয়ে গিয়েছে এ দেশে।

সে সব আসরই বা কোথায় আর, যেখানে দ্রুত খেয়ালে সঙ্গত করতে করতে লয়কারির দাপটে টুপি খুলে তারাপদ’র পায়ে নামিয়ে রাখছেন তবলা সম্রাট আহমেদজান থেরাকুয়া? কোথায় সে সব মজলিশ, যেখানে নিজের বাজনা হয়ে যাওয়ার পরেও তারাপদবাবুর গান শুনে যাবেন বলে প্লেনের টিকিট বাতিল করে দিয়ে শ্রোতার আসনে বসে থাকছেন তরুণ রবিশঙ্কর? কোথায় তেমন সব জলসা, যেখানে তারাপদ চক্রবর্তীর গান শেষ হওয়ার পর দেখা করতে এসে তাঁর দু’হাত ধরে অঝোরে কেঁদে ফেলছেন হীরাবাঈ? কোথায় সেই যুগ, যেখানে মাইহার থেকে অনুজ তারাপদকে চিঠি লিখছেন বাবা আলাউদ্দিন খান সাহেব, মুগ্ধতা স্বীকার করে
নিয়ে তাঁকে নির্দ্বিধায় ডাকছেন ‘ভারতের রত্ন’ বলে?

সে সব নেহাত ইতিহাসের উজ্জ্বল মলিনতায় ঠিকানা খুঁজে নিয়েছে। কিন্তু ইতিহাস তো বহুমুখী, সে নানা ধরনের আখ্যান ধরে রাখে। দোর্দণ্ডপ্রতাপ সেই সব গানবাজনার দিনগুলো পেরিয়ে আসার পরেও এ কথা মেনে না নিয়ে উপায় নেই যে, জাতীয় স্তরে যে-স্বীকৃতি বা প্রতিষ্ঠা সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তী’র পাওনা ছিল, তার সিকিভাগও তিনি পাননি। অথচ, এই যেমন দেখছি, সমকালীন তাবড় শিল্পীদের ঝুলি উজাড় করা ভালবাসা ও শ্রদ্ধা ঠিকই আদায় করে নিয়েছেন। যে-সময়ে যে-আসরে গেয়েছেন, অবিস্মরণীয় হয়ে থেকেছেন।

তবু, মৃত্যুর এই এত বছর পর ততখানিও যেন স্মরণীয় নন তিনি। পুরনো রসিক শ্রোতারা আজও নাম শুনলে কপালে হাত ঠেকান ঠিকই, কিন্তু গানবাজনার মূলস্রোতের ইতিহাস তাঁকে খানিক ব্রাত্য করেই রেখেছে। বিস্মরণের এই মোলায়েম রাজনীতিই হয়ে উঠেছে তারাপদ’র মতো বিরল শিল্পীর মাথায় কাঁটার মুকুট। অথচ ভেবে দেখতে গেলে, বাংলা থেকে তিনিই প্রথম বড় ঘেরের খেয়াল গাওয়া চালু করেন। নিজে বন্দিশ বেঁধে আসরে গাওয়ার মতো ব্যতিক্রমী ব্যাপার শুরু করেন তিনিই। রাগ বাহার-এ, আড়া চৌতাল-এর দমবন্ধ ঝুঁকির বন্দিশ তাতে শামিল যেমন, তেমনই গুর্জরী টোড়ি-তে দ্রুত তিনতালের নিরীহ বন্দিশ, যার চাল বিলকুল ১২ মাত্রার দ্রুত একতালের মতো।

নামজাদা তবলিয়ারাও এই সব বন্দিশের কূল পেতেন না অনেক সময়ে, যদি-না তারাপদবাবু নিজে দেখিয়ে দিতেন হদিশ। আলাপ হোক বা লয়কারী, বোলবাঁট হোক বা তানকর্তব, সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা এই মানুষটি ভবিষ্যতের দৌড়ে পিছিয়ে গেলেন কেন তা হলে? কেন কেবলই বাংলার শিল্পী হয়ে থাকলেন? তাঁর ‘ভারতের রত্ন’ খেতাব থেকে গেল কেবল বাবা আলাউদ্দিনের চিঠিতেই?

উস্তাদ বড়ে গোলাম আলি

ইতিহাসের এই ছক কিন্তু অচেনা নয়। ভারতবর্ষে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুস্তানি খেয়ালের প্রধান পীঠস্থান ছিল মুঘল দরবার। স্বভাবতই উত্তর ও পশ্চিম ভারতের শিল্পীরা তখন খেয়ালে অগ্রগণ্য ছিলেন, যাঁদের ভাষা হিন্দি, উর্দু, পঞ্জাবি, বা কিছু ক্ষেত্রে ফারসিও। তাঁদের তালিমের, রুজি-রোজগারের পথও ছিল ঢের প্রশস্ত। পূর্ব ভারতে খেয়ালের এমন চল ছিল না। যত দিনে এল, তত দিনে এই মনোভাব তৈরিই হয়ে গিয়েছে যে, হিন্দুস্তানি খেয়াল মানেই উত্তর, পশ্চিম বা বড়জোর মধ্য ভারতের হিন্দি-উর্দু বলিয়ে শিল্পীকুল। তাই একজন বাঙালি খেয়াল-শিল্পী যত দাপটেই ভারতবর্ষ জুড়ে গেয়ে বেড়ান না কেন, তাঁকে বরাবর এই মনোভাবের শিকার হয়েই থাকতে হয়।

যেমন তার বহুযুগ পরেও জাতীয় ক্রীড়া বা রাজনীতিতে বাঙালি কূটনীতির সম্মুখীন হয়, তেমন। তাঁর নিজের কি তা হলে কোনও খামতিই ছিল না?

আজকের নিরিখে ভেবে দেখতে গেলে একখানা বিরাট খামতি অবশ্যই ছিল। জনসংযোগের প্রতি তুমুল অনীহা। সেই সঙ্গে প্রখর আত্মসম্মান বোধ এবং একগুঁয়ে, অনাপসি মনোভাব। যেখানে বিন্দুমাত্র স্খলনের সম্ভাবনা টের পেয়েছেন, সে-সুযোগ যত বড়ই হোক না কেন, তখনই তার মুখের উপর বন্ধ করে দিয়েছেন দরজা।

সেই কারণেই কলকাতার রাস্তায় চালের বস্তা পিঠে বয়ে বেড়ানো মানুষটি বার্ধক্যে এসে হেলায় ফিরিয়ে দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় সরকারের ‘পদ্মশ্রী’ খেতাব, সেইসঙ্গে লিখছেন কড়া এক চিঠিও।

বাইরে থেকে একে অনেকে উন্নাসিকতা বললেও, বাঙালির প্রিয় গাইয়ে নাকুবাবুকে এটুকু স্বকীয় বর্জন মানাত। পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকেও মেনে নিতে হয়েছে বহু বর্জনের আঘাত। কিন্তু দিনের শেষে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকাই ছিল তাঁর কাছে সবচাইতে বেশি জরুরি।

তবে হ্যাঁ, আজ যে বেশ কিছু বাঙালি খেয়াল-গাইয়ে দেশে ও তার বাইরে স্বচ্ছন্দে নাম কিনছেন, তার ভিত্তি কিন্তু এই মানুষেরাই স্থাপন করে গিয়েছেন। এক দিকে তারাপদ চক্রবর্তী, এক দিকে ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, অন্য দিকে চিন্ময় লাহিড়ি। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে এঁরা আপ্রাণ লড়েছিলেন বলেই আজ স্রোতের অভিমুখে বাঙালি শিল্পীরাও সাঁতার কাটতে পারছেন। বহুতল বাড়ির ছাদ অনেকেই উপভোগ করেন, তার ভিতের কথা মনে করেন কতজন? সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তী সেই ভিতেরই এক অপরিহার্য স্তম্ভ।

আজ যখন দক্ষিণ কলকাতায় তাঁরই নামাঙ্কিত রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাই কখনও, কোথাও একটু হলেও চাপা গর্ব হয় এই ভেবে যে, এ আসলে শহর কলকাতার আর- পাঁচটা রাস্তার একখানা নয়। এ আদতে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের বিরল এক রাজপথ, যাকে একটু একটু করে নিজের হাতে গড়ে তুলেছিলেন সংগীতাচার্য তারাপদ চক্রবর্তী। যেখানে আজ নানা শাখায় ধরেছে নানা রঙের ফুল। আমরা, এত দিনে তাদের সুগন্ধ পাচ্ছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন