বেশির ভাগ ছেলেকে সহ্যই হয় না

তাদের সঙ্গে আবার আড্ডা কী! পুরুষদের এক হাত নিলেন সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়সত্যি বলতে ছেলেদের নিয়ে ভাবা বেকার। ছেলেরা চিরদিনই সবাই এক রকমের, দু-দশ দিন পরই কেমন বোরিং টাইপ হয়ে যায়। আর বেশির ভাগ ছেলেই মূলত, উমেন-সেন্ট্রিক। সে কালে পুরুষরা যখন মেয়েদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল, তখন মেয়েদের ফিশফাশ, গুজগুজ, ফুশফুশ, চিকের আড়াল, ঘোমটার আব়ডাল এ সবের মধ্যে থেকে একটা বিভ্রান্তিকর দীর্ঘশ্বাস ছেলেদের ধুতির কোষির কাছে গিঁট খেয়ে পড়ে থাকত। তখন ছিল পাপ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০০:০৬
Share:

সত্যি বলতে ছেলেদের নিয়ে ভাবা বেকার। ছেলেরা চিরদিনই সবাই এক রকমের, দু-দশ দিন পরই কেমন বোরিং টাইপ হয়ে যায়।

Advertisement

আর বেশির ভাগ ছেলেই মূলত, উমেন-সেন্ট্রিক। সে কালে পুরুষরা যখন মেয়েদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল, তখন মেয়েদের ফিশফাশ, গুজগুজ, ফুশফুশ, চিকের আড়াল, ঘোমটার আব়ডাল এ সবের মধ্যে থেকে একটা বিভ্রান্তিকর দীর্ঘশ্বাস ছেলেদের ধুতির কোষির কাছে গিঁট খেয়ে পড়ে থাকত। তখন ছিল পাপ।

যে সব মেয়ে তখন পাপ করতে ভয় পায়নি, তারাই তো নব্য যুগের মেয়েদের নিজস্ব আইন তৈরি করতে শিখিয়েছে।

Advertisement

সে কাল গিয়ে মাঝে একটা সময় ছিল শুধু প্রেমের। নারী-পুরুষ বনাম সমাজ-সংসার-পরিবার।

এরা মিলন চায়। আর ওরা মানব সভ্যতার সব চেয়ে বেসিক বিষয়টাকে গ্রিক নাটকের মতো ট্র্যাজিক করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করে যায়।

ব্যস, তার পরই ছেলেমেয়েদের মেলামেশাটা কেমন এলিয়ে গেল।

সংবেদনশীল পুরুষ বন্ধুটন্ধুদের দিয়ে কোনও কাজের কাজ হয় না। আর অষ্টনাগের ফণার মতো বহুমাত্রিক বুদ্ধিবৃত্তিতে দলায়িত পুরুষরাও শেষ অবধি হঠাৎ কোথায় কখন পা ফাঁক করে দাঁড়িয়ে যাবে, ঠিক নেই।

শেষমেশ পুরুষদের সঙ্গে কখনও কমফর্টেবল লাগে না আমার মতো অনেক মেয়েদেরই।

স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটির ছেলে-বন্ধুরা তবু ঠিক আছে। কিন্তু এই চল্লিশের জীবনে বেশির ভাগ ছেলেদের সহ্যই হয় না। বেশির ভাগকেই তো বৌ ছাড়া দেখলে চিনতেই চেষ্টা করি না। আট পেগ করে রোজ মদ খায়, এ দিকে মেয়েদের দেখলেই লাবড়া-ঘ্যাঁট হয়ে যায়।

তুলনায় আমার মেয়েবন্ধুরা? চল্লিশে পৌঁছে সব এক-এক জন সেক্স গডেস! হাড়-কাঁপানো তাদের সেক্স-অ্যাপিল। সঙ্গে পুরনো তেঁতুলের মতো তাদের গৃহিণীপনা, ভিখারিনীর সমান মাতৃত্ববোধ। আর বাকি গুণাবলি নাই’বা বললাম। মনে, অনুভবে, চেতনায় তারা কতই না ঝকঝকে, গর্জাস, সমসাময়িক, পুরুষদের তুলনায়।

এ রকম মেয়েদের দিকে তাকিয়ে থাকতে কত ভাল লাগে। এদের সঙ্গে মেলামেশায় কোথাও বিপদে পড়ার কোনও সম্ভাবনা থাকে না।

চল্লিশে পৌঁছনোর অনেক আগেই অবশ্য আমি বুঝেছি মেয়েরাই মেয়েদের ভাল বন্ধু হতে পারে।

ছেলেদেরটা তো দূর অবধি টানাই যায় না, যেখানে জাম খাওয়ার পর জামের কষের মতো লেগে থাকবে তারা আঙুলে, জামায়।

ছেলেদের সঙ্গে ‘সোল এক্সচেঞ্জ’ হয় না। ওটা শুধু মেয়েদের সঙ্গে হতে পারে মেয়েদের। মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে দেখতে বেশি ভাল হয়, সাজগোজ করে, প্রচুর কথা বলতে পারে, ভীষণ ‘অবজারভেন্ট’ হয়। নতুন লিপস্টিক লাগালে ধরে ফেলে, আবার অ্যাবরশন করিয়ে এলেও বুঝে ফেলে। বেশি বোঝে, আবার বোঝাটা ব্যক্তও করে বেশি। যেমন উইটি, তেমনি ফাজিল, তেমনই ন্যাস্টি হতে পারে মেয়েরা।

পিএনপিসি-টা তো মেয়েরা একটা আর্টের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। বারো হাত কাঁকুড়ের তেরো হাত বিচির মতো ইন্টারেস্টিং হয় মেয়েরা।

চারটে ছেলে এক জায়গায় হলে একটা কার্নিভাল হয় না কখনওই। চারটে মেয়ে এক জায়গায় হলে মনে হয় একটা ফেস্টিভ্যাল শুরু হয়ে গেল। এত ভাইভ্রেন্ট হয় মেয়েদের শুধু উপস্থিতিটুকুই।

সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং-এর দৌলতে জীবনে যখন স্কুল লাইফের বন্ধুরা ফিরে এল, তখন নিজেকে ভীষণ লাকি মনে হল। অবশ্য তার আগে থেকেই পুরোপুরি মেয়েদের দিকে ঢলে পড়েছিলাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন