ওষধির বাগান

কিছু গাছ আছে, যা চিকিৎসাশাস্ত্রে বহু দিন ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। রইল এই ওষধি বাগানের খোঁজকিছু গাছ আছে, যা চিকিৎসাশাস্ত্রে বহু দিন ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। রইল এই ওষধি বাগানের খোঁজ

Advertisement

নবনীতা দত্ত

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০০:০০
Share:

বাড়িতে কয়েকটা গাছ লাগাতে কার না ইচ্ছে করে। কিন্তু বাড়ির ছাদে হোক বা বারান্দায়, বাগান করার সময় আমরা সাধারণত ফুলগাছ বা আনাজ লাগাই। কিন্তু তাদের মধ্যেই যদি দরকারি কিছু গাছ লাগানো যায়, তা হলে কত ভাল হয়! এমন অনেক গাছ আছে, যারা স্বাভাবিক ওষুধের কাজ করে। সাধারণ সর্দি, কাশি থেকে শুরু করে অ্যানিমিয়া, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও এ রকম ভেষজ গাছের জুড়ি মেলা ভার। দেখে নেওয়া যাক এ রকমই কয়েকটি ভেষজ গাছ, যা সহজেই জায়গা করে নিতে পারে আমাদের বাড়ির বাগানে।

Advertisement

তুলসী গাছ: আগেকার দিনে সব বাড়িতেই এই গাছ থাকত। তুলসী পাতার গুণও অনেক। রোজ সকালে দু’-চারটে তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তা ছাড়া ঠান্ডা লাগলে তুলসী পাতা গরম জলে ফুটিয়ে খাওয়া যায়। সর্দি কমে তাড়াতাড়ি। তুলসী ভাল অ্যান্টিসেপটিকের কাজও করে। মাথা ব্যথা, গ্যাসের সমস্যাতেও এর জুড়ি মেলা ভার। এই গাছের জন্য খুব বেশি রোদের প্রয়োজন পড়ে না। তুলসীর মঞ্জরি থেকে খুব সহজেই গাছ বেড়ে উঠতে পারে। একটা তুলসী গাছের মঞ্জরি থেকে আরও অনেক তুলসী গাছ জন্মাতে পারে।

Advertisement

ঘৃতকুমারী: একে আমরা সহজে চিনি অ্যালো ভেরা নামে। অ্যালো ভেরা আড়াআড়ি কাটলে এর মধ্য থেকে ঘন, তরল পদার্থ বের হয়, যা অনেক কাজে লাগে। হাত-পা কেটে গেলে বা ত্বকে কোনও পোকা কামড়ালে সেখানে অ্যালো ভেরার নির্যাস লাগালে সঙ্গে সঙ্গে কাজ করে। এর নির্যাস রোজ সকালে খালি পেটে খেলে হজমশক্তি বাড়ে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এ ছাড়া অ্যালো ভেরার জেল রূপচর্চা এবং সৌন্দর্য বাড়াতেও কাজে লাগে। রোদ আসে এমন জায়গায় টবে রাখলেই এই গাছ তরতর করে বাড়তে থাকবে।

কারি পাতা: এই গাছ এক দিকে ওষুধের কাজ করবে, অন্য দিকে রান্নার কাজেও ব্যবহার করা যাবে। কারি পাতার গাছের জন্য ছায়ার দরকার। দিনের প্রথমার্ধের রোদ পেলেই চলবে। কারি পাতা যেমন হজমশক্তি বাড়ায়, তেমনই মধুমেহ, রক্তাল্পতা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কারি পাতা চুলের অকালপক্বতাও রোধ করে।

গাঁদা গাছ: আমাদের অনেকের বাড়িতেই এই গাছটি আছে। কিন্তু এই ফুলের ভেষজ গুণ আমরা অনেকেই জানি না। শরীরের কোথাও কেটে, পুড়ে গেলে বা পোকা কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে গাঁদার পাপড়ি থেঁতো করে সেই রসটা ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দেওয়া যায়। তুলসীর মতো গাঁদাও অ্যান্টিসেপটিকের কাজ করে। আলসারের সমস্যায়ও গাঁদার রস উপকারী। অল্প মাটিতে রোদ-হাওয়া পেলেই গাঁদা গাছ বেড়ে উঠবে।

কালমেঘ: এই গাছটা ঝোপের মতো হয়। কালমেঘ খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে ও ছড়িয়ে গিয়ে ফলে ঝোপের আকার নেয়। চিনা চিকিৎসাশাস্ত্রে কালমেঘের ব্যবহার বহুল প্রচলিত। ভারতীয় চিকিৎসাতেও কালমেঘ অনেক দিন ধরে ব্যবহার করা হচ্ছে। জ্বর, গলা ব্যথা, শ্বাসনালীতে সংক্রমণে কালমেঘ খুব ভাল কাজে দেয়। লিভারের বিভিন্ন অসুখেও কালমেঘ উপকারী। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, হারপিস ইত্যাদি বিভিন্ন রোগে এবং হার্ট ভাল রাখতেও এর জুড়ি মেলা ভার।

এ ছাড়াও অশ্বগন্ধা, মেথি ইত্যাদি ভেষজ গাছ বাড়ির বারান্দা বা ছাদের বাগানে খুব সহজেই জায়গা করে নিতে পারে। তার জন্য প্রয়োজন শুধু সামান্য জায়গা এবং নিয়মিত যত্নআত্তি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন