তিন সপ্তকেই অনায়াস

রবীন্দ্রসদনে রজনীকান্তের সার্ধশত জন্মবর্ষের প্রাক্কালে শ্রদ্ধা নিবেদিত হল সঙ্গীত পরিষদ-এর আয়োজনে। শিল্পী ছিলেন নীলা মজুমদার। গান পরিবেশনের ফাঁকে তিনি রজনীকান্ত, অতুলপ্রসাদ ও দ্বিজেন্দ্রলালের গানের বৈশিষ্ট্য এবং এঁদের কোথায় কোথায় সাদৃশ্য বা পার্থক্য রয়েছে তা বিশ্লেষণ করলেন। এই অনুষ্ঠানে আগাগোড়াই ছিল শিল্পীর তিন সপ্তকে অনায়াস স্বরক্ষেপণ।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০৫
Share:

রবীন্দ্রসদনে রজনীকান্তের সার্ধশত জন্মবর্ষের প্রাক্কালে শ্রদ্ধা নিবেদিত হল সঙ্গীত পরিষদ-এর আয়োজনে। শিল্পী ছিলেন নীলা মজুমদার। গান পরিবেশনের ফাঁকে তিনি রজনীকান্ত, অতুলপ্রসাদ ও দ্বিজেন্দ্রলালের গানের বৈশিষ্ট্য এবং এঁদের কোথায় কোথায় সাদৃশ্য বা পার্থক্য রয়েছে তা বিশ্লেষণ করলেন। এই অনুষ্ঠানে আগাগোড়াই ছিল শিল্পীর তিন সপ্তকে অনায়াস স্বরক্ষেপণ। যেমন তিনি গাইলেন চারটি রজনীকান্তের গান। ইমনকল্যাণ রাগে ‘ঐ বধির যবনিকা’, ভৈরবীতে ‘তুমি নির্মল করো’ প্রভৃতি। পুত্রের মৃত্যুতে রজনীকান্ত ঈশ্বরের কাছেই আত্মনিবেদন করেছেন যা নীলার গানে মর্মস্পর্শী হয়ে ওঠে ‘তোমারি দেওয়া প্রাণে’।

Advertisement

এর পরে শিল্পী রজনীকান্তের গানের সঙ্গে দ্বিজেন্দ্রলালের গানের একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলেন। রজনীকান্তের গানে প্রশান্তি, গভীরতা, আত্মসমাহিতি। ভারতীয় রাগরাগিণী ও লোকসঙ্গীত নির্ভর। দ্বিজেন্দ্রলালের গান প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের যেন গঙ্গা যমুনা সঙ্গম। কখনও দ্বিজেন্দ্রলালের ‘আমরা মলয় বাতাসে’, ‘আজি এসেছি বধু হে’, কখনও বা রজনীকান্তের ‘স্বপনে তাহারে কুড়ায়ে পেয়েছি’। অতুলপ্রসাদ ও রজনীকান্ত-এই দুই কবির মানসিকতার মিল এক দিক দিয়ে এই যে, তাঁরা দুজনেই রবীন্দ্রভক্ত। কী ভাবে তাঁরা গান লিখে নিজে সুর না দিয়ে রবীন্দ্রগানের গানের সুরটি তাতে ব্যবহার করেছেন, নীলা গান গেয়ে তা বিশ্লেষণ করেছেন। যেমন, রবীন্দ্রনাথের ‘দাঁড়াও আমার আঁখির আগে’র সুরটি নিয়ে রজনীকান্ত গান বাঁধলেন ‘শুনাও তোমার অমৃতবাণী’। আবার রবীন্দ্র-সৃষ্ট ‘মধুর রূপে বিরাজিত’ গানখানির আদলে অতুলপ্রসাদ গান বেঁধেছেন ‘মিলনসভা মাতাও আনন্দগানে’। অনুষ্ঠান শেষ করলেন অতুলপ্রসাদ ও রজনীকান্তের গানের পার্থক্য কোথায় ও কী ভাবে তা শুনিয়ে। কখনও অতুলপ্রসাদের ‘ওগো নিঠুর দরদী’, ‘নিদ নাহি আঁখিপাতে’, ‘রুমক ঝুমক রুম’, কখনও রজনীকান্তের ‘যদি কুমড়োর মতো’, ‘আমি তো তোমারে চাহিনি জীবনে’।

Advertisement

প্রেমে অপ্রেমে

সম্প্রতি আইসিসিআর-এ অনুষ্ঠিত হল ‘শ্রুতিবৃত্ত’ আয়োজিত ‘প্রেমে অপ্রেমে রবীন্দ্রনাথ’ শীর্ষক গীতিআলেখ্য। এই অনুষ্ঠানে প্রবুদ্ধ রাহার ‘এমনি দিনে তারে বলা যায়’ মনে রাখার মতো। শান্তিনিকেতনে শিক্ষাপ্রাপ্ত মাধবী দত্তের গাওয়া চারটি গানেই অন্য মাধুর্য প্রকাশ পেয়েছে। তার মধ্যে ‘কার মিলন চাও বিরহী’ এবং ‘বন্ধু রহো সাথে’ গান দুটি অনবদ্য। এছাড়া ম্যাডোনা চট্টোপাধ্যায়, সুরঞ্জনা সেনগুপ্ত এবং প্রিয়ঙ্কর মজুমদার যথাযথ। ভাষ্যপাঠে মধুমিতা বসু এবং শুভদীপ চক্রবর্তী।

গান ও কথায়

সম্প্রতি রোটারি সদনে ‘মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানের প্রথমার্ধে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করলেন বলাকা গুপ্ত। ‘তোমায় গান শোনাবো’ দিয়ে শুরু করে পর পর দশটি রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইলেন তিনি। ‘রাত্রি এসে যেথায় মেশে দিনের পারাপারে’ গানে গভীর আন্তরিকতা ও দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়। দ্বিতীয়ার্ধে ছিলেন কবি সুবোধ সরকার, রাজা ও অন্যান্যরা।

স্মরণে তিনি

সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে রাধাকান্ত নন্দী স্মৃতিসংস্থা আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত হলেন প্রবীণ শিল্পী অমর পাল। প্রদীপ প্রজ্বলন করেন সংস্থার সভাপতি পণ্ডিত গোবিন্দ বসু। পরে গানে রাজা রায়ের ‘ক্ষতি কি না হয়’, সুদেব দে-র ‘মা গো মা’ অনুষ্ঠানে অন্য মাত্রা এনে দেয়। শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়ও শোনালেন ‘মায়াবতী মেঘে এল তন্দ্রা’। অপূর্ব গায়কি। অনুষ্ঠান শেষ হল মধু বর্মন ও গোপাল বর্মনের খোল-তবলার যুগলবন্দিতে। অপূর্ব পরিবেশনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন