নানা রকম...

তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা

রবীন্দ্রনাথ: ফিরে দেখা—এই শিরোনামে সুর ও সাধনা আয়োজন করেছিল গান, কবিতা ও নৃত্য। সংস্থার ত্রয়োদশ বার্ষিক এই অনুষ্ঠানে মনোময় ভট্টাচার্যের অসামান্য গায়নভঙ্গিতে প্রতিষ্ঠা পেল দুটি গানের নিহিত অবয়ব ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা’ এবং ‘পিনাকেতে লাগে টংকার’। এ ছাড়াও ছিলেন লোপামুদ্রা মিত্র, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত, জয়তী চক্রবর্তী প্রমুখ। মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিবেদনে ছিল অপরিণতির ছাপ।

Advertisement

সুলগ্না বসু

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০০:৩৫
Share:

রবীন্দ্রনাথ: ফিরে দেখা—এই শিরোনামে সুর ও সাধনা আয়োজন করেছিল গান, কবিতা ও নৃত্য। সংস্থার ত্রয়োদশ বার্ষিক এই অনুষ্ঠানে মনোময় ভট্টাচার্যের অসামান্য গায়নভঙ্গিতে প্রতিষ্ঠা পেল দুটি গানের নিহিত অবয়ব ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা’ এবং ‘পিনাকেতে লাগে টংকার’। এ ছাড়াও ছিলেন লোপামুদ্রা মিত্র, স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত, চন্দ্রাবলী রুদ্র দত্ত, জয়তী চক্রবর্তী প্রমুখ। মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিবেদনে ছিল অপরিণতির ছাপ। কঙ্কণা রায়ের ‘মেঘ ছায়ে সজল বায়ে’ ভাব প্রকাশে স্বাচ্ছন্দ্যের সামান্য অভাব ছিল। দেবলীনা কুমার ও সম্প্রদায়ের নৃত্য নিবেদনে ‘তোমার আনন্দ ওই’ নৃত্য নির্মাণ দক্ষতায় উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল। সেই সন্ধ্যার এক পরম প্রাপ্তি বিজয়লক্ষ্মী বর্মনের কণ্ঠে শোনা ‘ঝড়ের খেয়া’। ‘ভায়োলিন ব্রাদার্স’ খ্যাত দেবশঙ্কর ও জ্যোতিশঙ্কর-এর বাদনে ‘তোমার গীতি’ ও ‘মম চিত্তে’ গান দুটির সুরের মূর্ছনা এক চিরকালীন রেশ রেখে গেল। সব শেষে গাইলেন কিংশুক রায়। তবে অনুষ্ঠানের একটি মানবিক আবেদন ছিল। অসহায় গুণী শিল্পীদের আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের শিলান্যাস হল সেদিন। যা বেশ প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

Advertisement

সংহতি ও শ্রদ্ধা

Advertisement

‘সংহতির ছন্দমালা’। শিরোনামে শুধু সংহতি নয়, রয়েছে শ্রদ্ধাও। প্রয়াত তালবাদক রাধাকান্ত নন্দীর প্রতিভার রেশ এখনও এই প্রজন্মেও অমলিন হয়ে আছে। সে রকমই শিল্পীর যোগ্য শিষ্য কালিদাস নন্দীর পরিচালনাতেই এই উদ্যোগ। শুরুতেই তাই কালিদাসবাবু মনে করিয়ে দিলেন তাঁর গুরুর সেই আপ্তবাক্য ‘সঙ্গত হল নাটক, তাকে অনর্গল প্রবাহিত হতে দাও’। গুরু-শিষ্যের এই মেলবন্ধনে তাই সৃষ্টি হয়েছিল ‘রাধাকান্ত নন্দী ইনস্টিটিউট অব রিদম’।

এই রিদমের বৈশিষ্ট্য কি? পাখোয়াজ, তবলা, বাংলা ঢোল এবং খোল-এর সম্মিলিত বাদ্যবাদন। যা যন্ত্রসঙ্গীত ও নৃত্য দুটি ক্ষেত্রেই পরিবেশিত হয়। এর আরও বড় বৈশিষ্ট্য রাগের বিভিন্ন পর্যায়ে তা অনন্য হয়ে ওঠে। প্রয়োগে রয়েছে, স্তোত্র-মিশ্র ভূপালি, তবলা-লহড়া ও চন্দ্রকোষ, ঢাক-তিন তালের ওপর ফরমাসি বাদ্য, নেপালি লোকসঙ্গীত-নেপালি মাদল, সানাই-ভাটিয়ালি (ওপার বাংলা), খোল-কীর্তন অঙ্গে (রাগ ইমন), দক্ষিণী মৃদঙ্গম-রাগ মলয় মারুত্তম (সানাই, সন্তুর, সরোদ, সারেঙ্গি ৪/৪ ছন্দ), তবলা তরঙ্গ-চন্দ্রকোষ প্রভৃতি।

শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন কালিদাস নন্দী, দেবাশিস হালদার, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়, অপূর্বলাল মান্না, বাবলু বিশ্বাস, অনুপ চক্রবর্তী, চিরদীপ সরকার, সন্দীপ ঘোষ, গৌতম ভট্টাচার্য, তপন নট, শিবু নট, বাবুয়া লোধ প্রমুখ। সঙ্গীতায়োজনে ছিলেন কল্লোল সেন। আয়োজক ছিলেন পৃথ্বীশ দাশগুপ্ত।

অনুভবের গভীরতা

শতরূপা চক্রবর্তী

সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে ‘সারথী’র আয়োজনে শিল্পীরা ছিলেন শ্রীমন্তি দাশগুপ্ত ও স্বাগতা পাল। শ্রীমন্তি তাঁর অনুভবের গভীরতায় সুনিপুণ কণ্ঠে শোনালেন রবীন্দ্রনাথ থেকে বুদ্ধদেব বসুর বিভিন্ন কবিতা। বাছাই করা এই কবিতাগুলির মধ্যে ‘নববর্ষ’ কবিতাটি তাঁর কণ্ঠে উল্লেখযোগ্য। স্বাগতা শোনালেন ‘ফুলের গন্ধ’, সুকান্তর ‘রানার’। অনুষ্ঠানের সব শেষে বেশ কয়েকটি রবীন্দ্রগান শোনালেন রাখী সরকার। পরিশীলিত ও চর্চিত কণ্ঠে গানগুলি শুনতে মন্দ লাগে না। তবে এ দিন তাঁর গাওয়া গানগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য গানটি ছিল ‘শুধু যাওয়া আসা’।

অপরূপ নৃত্য

পিনাকী চৌধুরী

আদ্যা কলাতীথর্ম ও প্রয়াসের যৌথ উদ্যোগে আই সি সি আর-এ অনুষ্ঠিত নবম বার্ষিক অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল সিধু (ক্যাকটাস) ও দীপাবলীর কণ্ঠসঙ্গীত। সংস্কৃত শ্লোকউচ্চারণে নজর কাড়েন কোরক বসু। সমগ্র অনুষ্ঠানের নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন তরুণ ওড়িশি শিল্পী অভিরূপ সেনগুপ্ত। তাঁর কোরিওগ্রাফি ভবিষ্যতের প্রত্যাশা বাড়িয়ে তোলে। তবে এ দিন অনুষ্ঠানে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নৃত্য ভূমিকাও ছিল অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন