ফার্স্ট স্লিপ

পার্টিতে রেখার চেয়েও বেশি পাত্তা পেত ইমরান

বাইশ গজের দশ বন্ধুর গল্প। আজ পর্ব ৫। লিখছেন কিশোর ভিমানীআটাত্তরের পাকিস্তান সফর। প্রথম দিনই ইমরান খানের সঙ্গে আলাপ হল। লাহৌর বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সিতে ফয়সালাবাদ যাওয়ার পথে ওর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল খালিদ বাট। খালিদ ছিল পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের পিআরও। পাহাড়ের মতো চেহারা। রসিকতা আর দুষ্টু-দুষ্টু গল্পে ভরপুর। ও আর লিয়াজঁর দায়িত্বে থাকা শফকত রানার জন্য ওই স্পর্শকাতর সফরটা দারুণ স্মরণীয় হয়ে উঠেছিল। বছর সতেরো পর পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল ভারত। তাই মাঠে বা মাঠের বাইরের যাবতীয় ব্যাপার-স্যাপারের উপর সবার চোখ ছিল। কিছু নজর ক্রিকেটীয়, কিছু আবার অক্রিকেটীয়-ও।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৪ ০০:০০
Share:

আটাত্তরের পাকিস্তান সফর। প্রথম দিনই ইমরান খানের সঙ্গে আলাপ হল। লাহৌর বিমানবন্দর থেকে ট্যাক্সিতে ফয়সালাবাদ যাওয়ার পথে ওর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল খালিদ বাট।

Advertisement

খালিদ ছিল পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের পিআরও। পাহাড়ের মতো চেহারা। রসিকতা আর দুষ্টু-দুষ্টু গল্পে ভরপুর। ও আর লিয়াজঁর দায়িত্বে থাকা শফকত রানার জন্য ওই স্পর্শকাতর সফরটা দারুণ স্মরণীয় হয়ে উঠেছিল।

বছর সতেরো পর পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল ভারত। তাই মাঠে বা মাঠের বাইরের যাবতীয় ব্যাপার-স্যাপারের উপর সবার চোখ ছিল। কিছু নজর ক্রিকেটীয়, কিছু আবার অক্রিকেটীয়-ও।

Advertisement

ফয়সালাবাদ (আগে নাম ছিল লায়ালপুর) বস্ত্রশিল্পর শহর। ধুলোয় ভরা, একটুও গ্ল্যামারাস নয়। আমরা উঠলাম ওখানকার মাঝারি মানের একটা হোটেলে। ‘রেজ হোটেল’।

চেক ইন করার পর আমাদের একটা এয়ার কন্ডিশন কোচে করে স্থানীয় ক্রিকেট সংস্থার অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হল। অক্টোবর মাস। অসহ্য গরম। ওই ঠা ঠা দুপুরে এসি-টা ভীষণ ভাবেই স্বাগত জানানোর মতো।

অনুষ্ঠানে পুরো পাকিস্তান টিম তো ছিলই, তার সঙ্গে স্থানীয় তারকারাও। ফজল মেহমুদ, দুই অভিনেতা নাদিম এবং বাবরা শরিফ আর অতুলনীয় সঙ্গীতশিল্পী নুরজাহান।

কমিউনিটি হলের এক দিকে দাঁড়িয়ে ইমরান। ওকে ঘিরে স্থানীয় ক্রিকেট-উৎসাহীদের ভিড়। খালিদ আমাকে সেখানে নিয়ে গেল। ইমরানকে প্রথম দেখে মনে হয়েছিল, একটু লাজুক গোছের। কিন্তু অসম্ভব কেতাদুরস্ত অসাধারণ সুন্দর এক তরুণ, যে কি না ক্রিকেট নিয়ে প্রচণ্ড প্যাশনের সঙ্গে কথা বলে।

প্রথম টেস্টের প্রথম দিন পুরোটাই কেটে গেল তরুণ কপিল দেবের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে। আঠারো বছর বয়সে অভিষেক হচ্ছিল কপিলের।

লাঞ্চের সময় ড্রেসিংরুমে গিয়েছিলাম ইমরানের সঙ্গে একটু আড্ডা মারতে। ও আর মুদস্সর নজর তখন টিমের দুই অলরাউন্ডার। মনে রাখবেন, তখন শুধু ইনফর্ম্যালিটির যুগই ছিল না, প্রচণ্ড মার্জিত ইমরান অতিথি সাংবাদিকের জন্য ঠান্ডা অরেঞ্জ জুসের অর্ডারও দিয়েছিল!

আমার কাগজের জন্য ওর ইন্টারভিউ নিলাম। কয়েকটা ‘কোট’ পেয়েছিলাম। ঘটনাটার কথা ভুলেও গিয়েছি। পরে সব সময়ই কথা বলার জন্য ইমরানকে পেয়েছি। প্রতি মুহূর্তে ‘কোট’ নিয়ে হাজির। বেশ ভাল বন্ধু হয়ে গিয়েছিল ও।

পরের বছর। ছ’টেস্টের সিরিজ খেলতে ভারতে এল পাকিস্তান। অধিনায়ক আসিফ ইকবাল। ওদের টিম তখন তারকায় ঠাসা জাহির আব্বাস, সরফরাজ, ইমরান, মুদস্সর, ওয়াসিম রাজা, সাদিক, মিয়াঁদাদ আর আসিফ নিজে।

গুয়াহাটি যাওয়ার পথে ট্রানজিটে আমাদের শহরে একটা রাত কাটানোর সময় ওদের সঙ্গে আবার দেখা। বাড়িতে একটা পার্টি দিয়েছিলাম। আশা ছিল, ক্রিকেটীয় অতিথিদের মতোই তারকাখচিত হবে পার্টিটা। কেউ কেউ বলেছিল, টিমের ছেলেরা নাকি ভাবতেই পারেনি যে মুম্বই (তখন বম্বে) পৌঁছনোর আগেই এত সুন্দরী মহিলার সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে!

ইমরান ছিল খুব স্বাভাবিক ভাবেই যাবতীয় আকর্ষণের কেন্দ্রে। ওই পার্টির কয়েকটা ছবি এখনও আমাদের কাছে আছে, যেখানে ইমরানকে ঘিরে ধরেছেন টলিউড এবং অন্যান্য পেজ থ্রি সুন্দরীর দল। তার চেয়েও প্রাসঙ্গিক আর একটা ছবি, যেখানে বিরিয়ানিতে টইটম্বুর প্লেট নিয়ে বসে ইমরান। ও কোনও দিন মদ্যপান করেনি, কিন্তু বরাবর ভাল খাবারের ভক্ত ইমরান। এখনও।

মুম্বইয়ের টেস্ট ম্যাচটা ভারত শেষ পর্যন্ত জিতেছিল। ম্যাচ চলাকালীন রোজ রাতে পাকিস্তানিরা পার্টি করত। দিলীপ কুমারের পালি হিলের বাড়িতে একটা সন্ধে মনে আছে। ওখানে ইমরান আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিল।

আর একটা স্মরণীয় পার্টির কথা মনে পড়ে। সেখানে আমরা গিয়েছিলাম অমিতাভ বচ্চনের অতিথি হিসেবে। তারকায় ঠাসা। শ্যাম্পেনের ফোয়ারা। প্রায় ভোররাত পর্যন্ত চলল পার্টি। পরমেশ্বর গোদরেজের সঙ্গীরা সে দিন বুঝতে পেরেছিলেন, সঞ্জীব কুমার বা ঋ

ষি কপূর, এমনকী রেখার চেয়েও বেশি ‘পাত্তা’ দেওয়া হচ্ছিল ইমরানকে।

চেন্নাই আর মুম্বইয়ে ভারত যে দুটো টেস্ট জিতেছিল, তার দুটোতেই আমি দূরদর্শনের হয়ে কমেন্ট্রি করছিলাম। তার পরেও বেশ হালকা ভাবেই পাকিস্তানিরা আমাকে বলেছিল, আমি নাকি ওদের জন্য অশুভ!

ভারত ২-০ এগিয়ে থাকায় ইডেন গার্ডেন্সের শেষ টেস্টটা নিয়মরক্ষার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ইমরান কিন্তু ওর সেরাটা শেষবেলার জন্য তুলে রেখেছিল। ড্র ম্যাচে সুনীল গাওস্করকে করা স্পেলটা ওর অন্যতম সেরা। সে দিন সন্ধেয় মুনমুন সেনের পার্টিতে ইমরানের সঙ্গে কথা হচ্ছিল।

খুব বেশি কিছু না বললেও ও স্বীকার করেছিল, ওটা সম্ভবত ওর দ্রুততম স্পেল। মনে আছে, আমাদের দু’জনেরই পরিচিত এক বন্ধু, কমবয়সি মিষ্টি এক জন, ওই পার্টিতেই ইমরানকে জিজ্ঞেস করেছিল ও “ব্যাটার না বোলার?” চোখের নিমেষে ইমরানের উত্তর ছিল, ও দুটোই একটু একটু করে!

আশির দশকের মাঝামাঝি শিনের স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের জন্য বছরদুয়েক মিস করে গিয়েছিল ইমরান। তখন মাঝে মধ্যে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলত ও।

পঁচাশির গ্রীষ্মে ইংল্যান্ডে বেড়াতে গিয়ে ওর সঙ্গে সময় কাটিয়েছিলাম। সাসেক্সের হয়ে কাউন্টি ম্যাচ খেলতে যাওয়ার সময় ইমরান আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেত। বার্মিংহাম, ব্রিস্টল আর ডার্বি-যাত্রা থেকে ক্রিকেট নিয়ে আমার অনেক কিছু শেখা।

লন্ডনে ওর সঙ্গে মাঝে মাঝে দেখা হত। যে শহর বাইরের লোকজনদের প্রতি চূড়ান্ত উন্নাসিক, সেই শহরে ইমরান তখন তো বটেই, এখনও সমান জনপ্রিয়। সোসাইটির অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্বও।

প্যাডিংটনে যে-ভিক্টোরিয়া পাবে বড় এক গ্লাস অরেঞ্জ জুস নিয়ে বসে থাকত ইমরান, সেখানে তো ওর অসংখ্য ভক্ত।

ইমরান আমাকে এতটাই কাছের মানুষ ভাবত যে, গ্লস্টার স্ট্রিটে ওর তখনকার সেলিব্রিটি বান্ধবীর বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। এমা সার্জেন্ট নামের সেই কোর্ট পেন্টার এবং প্রখর প্রতিভাশালী তরুণী একটা হেরিটেজ হাউসে থাকত। ওদের সম্পর্কটা ছিল খুব ঘনিষ্ঠ। আমি তো নিশ্চিত ছিলাম যে, ব্যাপারটা অনেক দূর যাবে। তখন ওখানকার কাগজে ইমরানকে নিয়ে প্রচুর লেখা বেরত।

কলকাতার এক ক্রিকেট-উৎসাহী, বিনু নাথ, আমাদের দু’জনেরই বন্ধু ছিল। কলকাতায় এলে ইমরান মাঝে মাঝে ওর বাড়িতে যেত।

ইমরান মাঝে মাঝেই এই শহরে আসত। আর আমাদের পার্টির নেমন্তন্ন পেতে লোকজনের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যেত।

ইমরান এক জন দুর্দান্ত সঙ্গী বুদ্ধিমান আর মার্জিত। কলকাতায় ড্রাইভিংয়ের মান নিয়ে ওর একটা মুগ্ধ বিস্ময় ছিল। ‘নিরাপত্তার শেষ সীমা পর্যন্ত একটা বিপজ্জনক নীতি অনুসরণ করা’ ব্যাপারটাকে এ ভাবেই বর্ণনা করত ও। শহরের বিহারি মুসলিম রেস্তোরাঁর বিরিয়ানি আর মাংসের পদ দুর্দান্ত ভালবাসত।

স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের ওই সময়টায় মেলবোর্নে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ ক্রিকেট ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলল ভারত। হারা ম্যাচটায় ইমরান সহযাত্রী ছাড়া আর কিছু হতে পারেনি।

পরের দিন সকালে হিল্টনে ওর ঘরে বসে কফি খেতে খেতে জিজ্ঞেস করলাম, কেমন লাগছে? দার্শনিকের মতো কয়েকটা কথা বলে ইমরান বলল, সময় বদলে যাবে। সেই মেলবোর্নেই ১৯৯২-এ বিশ্বকাপ হাতে যখন ইমরান দাঁড়াল, তখন ওই মুহূর্তটা মনে পড়ে গিয়েছিল!

নাহ, বড্ড এগিয়ে গেলাম।

১৯৮৭। সালটা স্মরণীয় একাধিক কারণে। চোট সারিয়ে উঠে রিলায়্যান্স ওয়ার্ল্ড কাপে সেরা ফর্মে ফিরে এসেছিল ইমরান। আমি টুর্নামেন্টের পার্কিস্তান-পর্বটা কভার করছিলাম। ইমরান, মিয়াঁদাদ, ওয়াসিম বারি আর জাহির আব্বাসের মতো প্রচুর তারকার সঙ্গে থাকতাম। যারা আবার আমার বন্ধুও। লাহৌরের যে সেমিফাইনালে বর্ডারের অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নেমেছিল ইমরানের টিম, সেই ম্যাচে আমি ছিলাম অতিথি ধারাভাষ্যকার।

গোটা পাকিস্তান এবং মিডিয়ার বেশির ভাগ ধরেই নিয়েছিল পাকিস্তান জিতবে। আর ফাইনাল খেলবে ভারতের বিরুদ্ধে। মুম্বইয়ে অন্য সেমিফাইনালে গ্রাহাম গুচের ইংরেজ টিমের মোকাবিলা ছিল ভারতের সঙ্গে।

কিন্তু কী হল? লাহৌরে পাকিস্তান হারল, মুম্বইয়ে ভারত। সেমিফাইনাল কভার করে যখন বাড়ি ফিরলাম, গোটা ক্রিকেটমহল তখন শোকাহত। আকাশছোঁয়া দামে যাঁরা ইডেনের টিকিট কিনেছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগই অ্যাশেজ ফাইনালের টিকিট দিয়ে দিলেন পাড়াপড়শির ছেলে বা ড্রাইভারকে। আর এখান থেকেই ১০ নভেম্বরের ভারত-পাকিস্তান প্রদর্শনী ম্যাচের ভাবনার সূচনা।

৮ নভেম্বরের ফাইনালের ঠিক দু’দিন পরেই ম্যাচ, তাই সেটা নিয়ে উত্তেজনা থাকাটা খুব স্বাভাবিক। জগমোহন ডালমিয়া আমাকে বললেন, ইমরানকে ফোন করে একটা মোটা টাকার অফার দিতে। আর বলতে, টিমের বাকিরাও যথেষ্ট টাকা পাবে। ভারতীয়দেরও একই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

পাকিস্তানিরা রাজি হওয়ায় প্রস্তুতি বেশ ভাল ভাবেই এগোচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে চরম বিভ্রান্তি তৈরি হয়ে গেল। কেউ একজন ইমরানকে বলল, ওকে নাকি যথেষ্ট পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে না। ইমরান সেটা বিশ্বাসও করে ফেলল। নিজের জন্য দ্বিগুণেরও বেশি টাকা দাবি করার পাশাপাশি বলল, সতীর্থদের পারিশ্রমিকও বাড়িয়ে দিতে হবে।

ভারতীয় ক্রিকেটারদের কেউ কেউও ব্যাপারটার মধ্যে ঢুকে গেল। বুঝতেই পারছেন, অবস্থাটা কী চরম পর্যায়ে পৌঁছেছিল। বিতর্কের ঝড়ের মধ্যে ম্যাচটা বাতিল হয়ে গেল।

সিএবি-র তরফ থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা আর একটু ভাল হলে ব্যাপারটা হয়তো অত দূর গড়াত না। ‘স্পোর্টস-উইক’-এ একটা সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেছিল, আমি নাকি ওর দেখা ‘নিকৃষ্টতম মানুষ’। বলেছিল, আমি নাকি ওকে ব্ল্যাঙ্ক চেক অফার করে কথা রাখিনি।

আমিও ম্যাগাজিনের কাছে দাবি করলাম, আমার নিজের বক্তব্য রাখার জন্য আমাকেও একই রকম জায়গা দাও। বললাম, জবাবটার সঙ্গে যেন আমার ছবি যায়। যেহেতু ইমরানের তোলা অভিযোগের সঙ্গে ওর ছবিও বেরিয়েছে! আমি বলেছিলাম, আমি নিরামিষাশী বলে ‘মাছের বাজারের দর কষাকষি’ করতে পারি না! খুবই অপ্রীতিকর ব্যাপার। ইস্যুটা সহজে মেটেনি। ‘লন্ডন টাইমস’-এও বেরিয়েছিল!

ইমরান কিন্তু পুরোদস্তুর ভদ্রলোক এবং খেলোয়াড়োচিত। বছরখানেক পরে যখন স্ত্রীর সঙ্গে লাহৌর গেলাম, ইমরান আমার স্ত্রী সঙ্গে আন্তরিক ভাবে কথা বলেছিল।

আর আমার সঙ্গে? বিদ্রুপ মেশানো হাসি আর একটা হ্যান্ডশেক!

১৯৯২-এ পাকিস্তান বিশ্বকাপ জয়ের পরও কিন্তু বিতর্ক ছিল। ইমরানের কিছু টিমমেট পরের কয়েকটা দিন খুব অসন্তোষ দেখিয়ে বিড়বিড় করতে লাগল। তাদের কথা, অধিনায়ক ক্যানসার হাসপাতাল আর ব্যক্তিগত জয় নিয়েই আবেগে ভাসছে। জয়ের জন্য যে দু’জন মুখ্য কারিগর, সেই ওয়াসিম আক্রম আর ইনজামাম-উল-হককে যথাযথ ধন্যবাদ জানাতেও ভুলে গেছে।

দলের অন্যরা, যারা ইমরানের প্রতি সহাভূতিশীল ছিল, তারা হাসপাতালটি ঘিরে ওর গভীর আবেগের কথা বলাবলি করত। তাদের বক্তব্য ছিল, ইমরানকে এই সব ব্যাপারগুলোর জন্য মাপ করে দেওয়াই যায়। হাসপাতালটির নামকরণ করা হয় ইমরানের প্রয়াত মা শাওকত খানুমের নামে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ইমরান নিজেকে রাজনীতিক হিসেবে পুনরাবিষ্কার করল। তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের প্রধান হয়ে উঠল। যদিও গত নির্বাচনে খুব দুঃখজনক ভাবেই ওর দল একেবারে মিইয়ে যায়। কিন্তু এমনিতে পাকিস্তানের ম্যাড়ম্যাড়ে ভোটে ইমরানের উপস্থিতিই এক রকম গ্ল্যামার এনে দিয়েছিল।

অনুবাদ: প্রিয়দর্শনী রক্ষিত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন