স্বামীজির জীবন দর্শন

‘আনন্দ তুমি স্বামী’ ওড়িশি নৃত্যে। লিখছেন চৈতি ঘোষ।সম্প্রতি জ্ঞানমঞ্চে ‘সাউথ গুরুকুল সোসাইটি’র উদ্যোগে পরিবেশিত হল ওড়িশি নৃত্যের এক মনোগ্রাহী নৃত্যসন্ধ্যা ‘আনন্দ তুমি স্বামী’। ওড়িশি নৃত্যের ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রেখে প্রথাগত নৃত্যপদগুলি থেকে ভিন্ন হয়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব ঘরানায় স্বামীজির জীবন-দর্শন ও আদর্শগুলিকে দর্শকদের সামনে সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। অত্যন্ত পরিশীলিত ও পরিমার্জিত রূপে। এ জন্য সুতপা তালুকদারের এই অভিনব প্রয়াসকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০৫
Share:

সম্প্রতি জ্ঞানমঞ্চে ‘সাউথ গুরুকুল সোসাইটি’র উদ্যোগে পরিবেশিত হল ওড়িশি নৃত্যের এক মনোগ্রাহী নৃত্যসন্ধ্যা ‘আনন্দ তুমি স্বামী’। ওড়িশি নৃত্যের ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রেখে প্রথাগত নৃত্যপদগুলি থেকে ভিন্ন হয়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব ঘরানায় স্বামীজির জীবন-দর্শন ও আদর্শগুলিকে দর্শকদের সামনে সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। অত্যন্ত পরিশীলিত ও পরিমার্জিত রূপে। এ জন্য সুতপা তালুকদারের এই অভিনব প্রয়াসকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। অনুষ্ঠানের সূচনাপর্বে মঞ্চে স্বামী সর্ভগানন্দ মহারাজ, স্বামী ভ্রমণানন্দ মহারাজ সহ সমাজের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির উজ্জ্বল উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। সুতপা তালুকদারের অপূর্ব নৃত্যবিন্যাসের মাধমে স্বামীজির জন্ম, তাঁর শৈশবকাল, সঙ্গীতপ্রেম, রামকৃষ্ণদেবের সান্নিধ্যলাভ, আধ্যাত্মিক চেতনার উন্মেষ প্রভৃতি পর্যায় চিত্রের মতো একের পর এক দর্শকের কাছে ফুটিয়ে তোলে গুরুকুলের নৃত্যশিল্পীরা। স্বামীজির রচিত গানগুলি বিশেষত রাধা, কৃষ্ণ, কালী ও শিবের উপর আধারিত গানগুলির সুচারু ব্যবহার। যেমন ‘তাথৈয়া তাথৈয়া নাচে ভোলা’ গানটির সঙ্গে সাবর্ণিকের তাণ্ডব নৃত্য।

Advertisement

তেমনই রামকৃষ্ণদেবের মৃত্যুশয্যায় ‘মদমত্ত মাতঙ্গিনী উলঙ্গিনী নেচে ধায়’ গানটির মধ্য দিয়ে কালীর উগ্র রূপ ও নরেনের আকুতি পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া ‘স্তিমিত চিত সিন্ধুভেদী’ গানটির সঙ্গে স্বামীজির বিশ্ব পরিব্রাজন, ‘চিদানন্দ সিন্ধুনীরে’ গানটির সঙ্গে তাঁর শিকাগো বক্তৃতা ও রামকৃষ্ণের বাণী প্রচারের দৃশ্যগুলি মনে দাগ কেটে যায়। বিশেষত রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠা ও নৃত্যের মাধ্যমে তার প্রতীকচিহ্নের অন্তর্নিহিত অর্থের সুন্দর ব্যাখ্যা ছিল বিশেষ প্রশংসনীয়। সর্বোপরি তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদারের সঙ্গীত পরিচালনা, অমিত দাশগুপ্তের গ্রন্থনা ও সুতপা তালুকদারের পোশাক, অলঙ্কার ও মঞ্চসজ্জায় মাঙ্গলিক বস্তু ও চিহ্নের প্রয়োগ অনুষ্ঠানে এক স্বর্গীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে। যার সঙ্গে একাত্ম হয়ে দর্শকমনের কোথাও যেন ‘আত্মানম্ মোক্ষর্থম্ জগদ্বিতায়চ’ উক্তিটি অনুরণিত হয়।

দ্বিতীয় পর্যায়ে দেবলীনা কুমারের নির্দেশনায় পরিবেশিত হয় রবিঠাকুরের ‘বিবাহ’। ‘কথা ও কাহিনি’র অন্তর্গত এই রচনাটির সঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীতের অপূর্ব মেলবন্ধনের মাধ্যমে রচিত এই নৃত্যনাট্যে দেবলীনার লাবণ্যমণ্ডিত ভঙ্গিমা ও সুন্দর মুখজ অভিনয় নজর কাড়ে। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন