Education Loan

Education loan: সন্তানের জন্য শিক্ষা ঋণ নিলে পেতে পারেন কর ছাড়ের সুবিধা, কিন্তু...

দেশ হোক বা বিদেশ, সব রকম ঋণে শিক্ষা ঋণেই কর মকুবের সুবিধা পাওয়া যায়।

Advertisement

তন্ময় দাস

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২২ ১৩:০৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

দেশ হোক কিংবা বিদেশ, সব জায়গাতেই পড়ুয়াদের শিক্ষা ঋণের সুবিধা রয়েছে। ব্যাঙ্কের যোগ্যতা বা চাহিদার সঙ্গে যদি পড়ুয়ার প্রয়োজনীয়তা মিলে যায় তা হলে খুব সহজেই এই ঋণ পাওয়া যায়। বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে টিউশন ফি থেকে শুরু করে পরীক্ষার ফি, হস্টেল ফি, যাতায়াতের খরচ-সহ কোর্স বা ডিগ্রি সম্পূর্ণ করতে যা যা খরচ দরকার, তার সমস্তটাই ব্যাঙ্ক বহন করে। মূলত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোর্সের ওপর ভিত্তি করেই ব্যাঙ্ক এই ঋণ অনুমোদন করে। এই ধরনের ঋণে সুদের হারের পাশাপাশি কর বা আয়কর রিটার্ন ফাইলের সময়েও বেশ ছাড় পাওয়া যায়। তবে সে ক্ষেত্রে আবেদনকারীর পারিবারিক আয় এবং কী ধরনের কোর্সের জন্য আবেদন করা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখে আবেদন মঞ্জুর করা হয়।

Advertisement

শিক্ষা ঋণের কী কী সুবিধা রয়েছে

আয়কর আইন, ১৯৬৭ সেকশন ৮০ই অনুযায়ী এই ঋণ শোধ করার সময় ঋণের সুদের ওপর কর ছাড়ের সুবিধা রয়েছে। তবে শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষার জন্য নেওয়া ঋণের ক্ষেত্রেই এই সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। দেশ হোক বা বিদেশ, সব রকম ঋণে শিক্ষা ঋণেই কর মকুবের সুবিধা পাওয়া যায়।

Advertisement

এই ঋণ পরিশোধ করার সময় কর ছাড় শুধুমাত্র প্রদত্ত ইএমআই-এর সুদের উপরেই প্রযোজ্য, মূল অর্থের উপর নয়। অর্থাৎ আপনার মাসিক কিস্তির পরিমাণ যদি ১০ হাজার টাকা হয় এবং নির্দিষ্ট হারে সুদের পরিমাণ যদি ৫০০ টাকা হয়, তা হলে সুদের ৫০০ টাকার ওপর কর ছাড় পাওয়া যাবে। আংশিক সময়ের হোক বা পূর্ণ সময়ের কোর্স, দুই ক্ষেত্রেই ঋণের উপর প্রদেয় সুদে কর ছাড় পাওয়া যায়।

এই ঋণ পরিশোধে কর ছাড়ের জন্য ব্যাঙ্ক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফ থেকে একটি শংসাপত্রের প্রয়োজন হয়। এই শংসাপত্রেই মাসিক কিস্তি এবং সুদের পরিমাণ আলাদা করে উল্লেখ করা থাকে।

এই ঋণ পরিশোধের প্রথম দিন থেকে সর্বোচ্চ আট বছর পর্যন্ত এই সুবিধা পাওয়া যায়। তবে মূল ঋণ শোধের আগে যদি সুদের টাকা শোধ হয়ে যায় তা হলে তার পরের কিস্তি থেকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী কর ছাড় পাবে না। সর্বোচ্চ ছ’বছর পর্যন্ত শিক্ষা ঋণের ইএমআই-এর সুদের উপরেই কর ছাড়ের সুবিধা রয়েছে।

এই ঋণ পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি নথির প্রয়োজন হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ভর্তির প্রমাণ, স্কুল বা কলেজের সর্বশেষ মার্কশিট, বয়সের প্রমাণপত্র, পরিচয়ের প্রমাণপত্র, ঠিকানা প্রমাণপত্র, স্বাক্ষরের প্রমাণপত্র, রোজগারের প্রমাণপত্র, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট, কর জমার প্রমাণ, ব্যাল্যান্স শিট, আয়ের প্রমাণ (সার্ভিস ট্যাক্স রিটার্ন/বিক্রয় রসিদ), স্বাক্ষর-সহ আবেদনপত্র, পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে উপযুক্ত ভিসা এবং আই-২০ ফর্ম প্রয়োজন হয়।

শিক্ষা ঋণ পাওয়ার জন্য ব্যাঙ্কে যে যোগ্যতার মাপকাঠির জন্য প্রয়োজন তা প্রথমটিই হল নাগরিকত্ব। অর্থাৎ শিক্ষার্থী ভারতীয় নাগরিক নাকি অনাবাসী ভারতীয়, নাকি ভারতীয় বিদেশি নাগরিক, নাকি ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি। এই সব কিছুই যাচাই করা হয়।

স্নাতক, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি, ডক্টরেট কোর্স এবং পিএইচডি-র সমস্ত কোর্সের ক্ষেত্রেই এই ঋণ পাওয়া সম্ভব। ৬ মাস বা তার বেশি সময়কালের সার্টিফিকেট কোর্স, চাকরি ভিত্তিক কোর্স, কারিগরী বা ডিপ্লোমা অথবা পেশাদার কোর্সের ক্ষেত্রেও এই ঋণ পাওয়া যায়।

কী ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই ঋণের সুবিধা পাবেন?

সরকারি বা বেসরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি কলেজ, সরকার দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পেশাগত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই ঋণের সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।

তবে বলা বাহুল্য এই দেশে শিক্ষা ঋণের ক্ষেত্রে গড়ে ১২ শতাংশ থেকে ১৬ শতাংশ সুদ ধার্য হয়। প্রত্যেকটি ব্যাঙ্কের বেস রেট আলাদা হওয়ার কারণে সুদের হারও আলাদা হয়। ঋণের জন্য আবেদন করার আগে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ঋণ, সুদের পরিমাণ এবং শর্তাবলী অবশ্যই একবার তুলনা করে দেখে নেওয়া ভাল। দেশের ভিতরে কোনও স্কুল বা কলেজে ভর্তি হলে গড়ে ১০ লক্ষ টাকা থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শিক্ষা ঋণ পাওয়া যায়। অন্য দিকে বিদেশে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে ২০ লক্ষ টাকা লোন পাওয়া যায়। যদিও এই অঙ্ক অনেকটাই নির্ভর করে কোর্সের ফির উপরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন