ট্যাক্স কর্নার

অবসর নেওয়ার পর আমি একটি কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করছি। মাসিক যে টাকাটা পাই, সেটিকে সংস্থা ‘কম্পেনসেশন’ হিসেবে উল্লেখ করে, বেতন বা ‘রেমুনারেশন’ হিসেবে নয়। আয়কর হিসাব করার জন্য ওই টাকাটা কি আমার মোট আয়ের সঙ্গে যোগ করতে হবে?

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৪ ০০:৩৮
Share:

অবসর নেওয়ার পর আমি একটি কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করছি। মাসিক যে টাকাটা পাই, সেটিকে সংস্থা ‘কম্পেনসেশন’ হিসেবে উল্লেখ করে, বেতন বা ‘রেমুনারেশন’ হিসেবে নয়। আয়কর হিসাব করার জন্য ওই টাকাটা কি আমার মোট আয়ের সঙ্গে যোগ করতে হবে?

Advertisement

প্রণব কুমার বিশুই, সত্যেন রায় রোড

হ্যাঁ, অবশ্যই। ওই টাকা আপনার মোট আয়ের সঙ্গে যোগ করেই আয়কর হিসাব করতে হবে।

Advertisement

আমি অবসরপ্রাপ্ত। মেয়েকে উপহার হিসেবে ৩ লক্ষ টাকা দিতে চাই। মেয়ে গৃহবধূ এবং এই মুহূর্তে নিজস্ব রোজগার নেই। তবে ওর প্যান কার্ড আছে। আমি জানতে চাই

১) ওই টাকাটা মেয়ের হাতে যাওয়ার পর কি তার উপর ওকে কর দিতে হবে?

২) মেয়ে যদি টাকাটা ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করে, তা হলে কি সেটার উপর জমা হওয়া সুদ করযোগ্য হবে?

৩) এ রকম কি কোনও সম্ভাবনা রয়েছে যে, মেয়ের ওই সুদ বাবদ আয় করা টাকাটা আমার আয়ের সঙ্গে যোগ হয়ে যাবে?

প্রদীপ দত্ত, বাগুইআটি

না, ওই টাকাটা উপহার হিসেবে আপনার মেয়ের হাতে যাওয়ার পর তা করযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।

তবে টাকাটা মেয়ে ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখলে তার উপর বছরে যে সুদ জমা হবে, সেটা ওঁর আয় হিসেবে গণ্য হবে। মেয়ের অন্য কোনও জায়গা থেকে আয় থাকলে, সেটার সঙ্গে ওই সুদ বাবদ আয় যোগ হবে এবং তার উপর আয়কর হিসেব হবে। অবশ্য সব মিলিয়ে আয়ের পরিমাণ যদি ২ লক্ষ টাকার কম হয় (যা করশূন্য আয়ের সীমা), তা হলে মেয়েকে আয়কর দিতে হবে না।

ফিক্সড ডিপোজিটের সুদ বাবদ মেয়ের ওই আয় আপনার আয়ের সঙ্গে যোগ হবে না। তবে এ ক্ষেত্রে আমি ধরে নিচ্ছি আপনার মেয়ের বয়স ১৮ বছরের উপরে। কারণ মেয়ের বয়স ১৮ বছরের কম হলে কিন্তু আপনার আয়ের সঙ্গে ওই আয় যোগ হওয়ার কথা।

বাবা ২০১২-র ১২ জুলাইয়ে মারা যান। রাজ্য সরকারি কর্মী ছিলেন। মাসে পেনশন পেতেন ১৬,০০০ টাকা। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে প্রায় ৩.৫ লক্ষ টাকার কয়েকটি ফিক্সড ডিপোজিট ছিল। এ ছাড়া অন্য রোজগার ছিল না। তবে ২০১০-এর নভেম্বরে বাবা একটি কমোডিটি ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। সেখানে লগ্নি করেন প্রায় ৫০,০০০ টাকা। ওই অ্যাকাউন্টে শেষ পর্যন্ত তাঁকে বড়সড় লোকসান গুনতে হয়। ২০১০-এর ডিসেম্বরে তিনি যখন কমোডিটি ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেন, তখন সেখান থেকে মাত্র ১৩,৬০০ টাকার মতো পেয়েছিলেন। উনি আয়কর রিটার্ন দিতেন না। তবে প্যান কার্ড ছিল।

এখন আমার সমস্যা হল, সম্প্রতি দিল্লির আয়কর দফতর থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। সেখানে বাবাকে ২০১০-১১, ২০১১-১২ এবং ২০১২-১৩ অ্যাসেসমেন্ট বছরের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে বলা হয়েছে। ওরা চিঠির মাধ্যমে কোনও জবাব চায় না। ওরা চায় ই-ফাইলিং পদ্ধতিতে রিটার্ন জমা করে দেওয়া হোক। এ বার আমি কী করব? কী ভাবে ওদের জানাব যে, আমার বাবা আর বেঁচে নেই?

অনিমেষ ভট্টাচার্য, হাওড়া

বাবার আইনি উত্তরাধিকারী হিসেবে আয়কর দফতরের সংশ্লিষ্ট অফিসারকে চিঠি লিখুন। জানান, তাঁর মারা যাওয়ার কথা। ডেথ সার্টিফিকেটির একটি কপিও সঙ্গে দিতে পারেন। সেই সঙ্গে ওই তিন অর্থবর্ষে বাবার আয়ের বিস্তারিত তথ্য দিন। প্রতিটি অর্থবর্ষের আয়ের হিসাবই পাঠাবেন। পাশাপাশি, বাবার পেনশন থেকে আয়ের বিষয়টি দেখিয়ে উত্তরাধিকারী হিসেবে আপনার ই-রিটার্ন জমা দেওয়াও উচিত। অন্য জায়গা থেকে যদি কোনও আয় হয়ে থাকে সেটাও দেখাতে হবে। যেমন আমরা ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের থেকে পাওয়া সুদ দেখিয়ে রিটার্ন জমা দিয়ে থাকি, তেমন ভাবেই। এ ক্ষেত্রে ২০১১-১২ অ্যাসেসমেন্ট বর্ষের রিটার্নে আপনার বাবার কমোডিটি ট্রেডিং অ্যাকাউন্টে হওয়া ৩৬,৪০০ টাকা ক্ষতির বিষয়টিও দেখানো উচিত।

পরামর্শদাতা কর বিশেষজ্ঞ নারায়ণ জৈন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন