২০ বছরেরও বেশি ‘সুখী’ দাম্পত্য। ক্যামেরার সামনে হাসিমুখেই হাজির হন তারকা-দম্পতি। কিন্তু ক্যামেরা সরে গেলেই তাঁদের দাম্পত্য থেকে ‘সুখী’ শব্দটি কর্পূরের মতো উবে যায়। ২০ বছর ধরে স্ত্রীকে ঠকাচ্ছিলেন নায়ক। তাঁর মন পড়ে থাকে কমবয়সি অভিনেত্রীদের দিকে। শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দা ভাড়া করে হাতেনাতে স্বামীর পরকীয়ার প্রমাণ পান বলি নায়কের স্ত্রী।
সিদ্ধার্থ কন্ননের পডকাস্টে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গোয়েন্দা তান্যা পুরী। তান্যার দাবি, বলিপাড়ার একাধিক ‘হাই প্রোফাইল কেস’ সামলেছেন তিনি। সেই সূত্রে বলিউডের তারকাদের বহু গোপন কথা জানেন তান্যা। পডকাস্টে এসে গোপন কথার ঝুলি থেকে কিছু ঘটনা উল্লেখ করেন তিনি।
নামোল্লেখ না করে বলিউডের এক বহুল পরিচিত তারকা-দম্পতির ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চর্চা করেন তান্যা। ২০০০-এর প্রথম দশকে বিয়ে করেছিলেন বলি নায়ক। তাঁর স্ত্রী উচ্চশিক্ষিতা। বলি অভিনেতা কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ও করেছেন। পাপারাৎজ়িদের কাছে সেই দম্পতি বেশ প্রিয়।
২০ বছরের বেশি দাম্পত্যজীবন বলি নায়কের। দুই সন্তানও রয়েছে তাঁর। তবে সংসারে বিন্দুমাত্র মন থাকে না তাঁর। কমবয়সি নায়িকার সঙ্গে আলাপ হলেই মন উড়ু উড়ু হয়ে যায় অভিনেতার।
তান্যার দাবি, কোনও ছবির শুটিং না থাকলেও বাড়িতে মিথ্যা কথা বলে দীর্ঘ দিনের জন্য বাইরে চলে যেতেন অভিনেতা। এমনকি, যখন-তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়তেন তিনি। অভিনেতা স্বামীর এমন আচরণ দেখে সন্দেহ হয়েছিল তাঁর স্ত্রীর।
অভিনেতা যে কমবয়সি অভিনেত্রীদের সঙ্গে মধুর সম্পর্ক বজায় রেখে চলেন তা টের পেয়েছিলেন অভিনেতার স্ত্রী। এমনকি, নায়ক যে একের পর এক পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছিলেন, তা-ও বুঝতে পেরেছিলেন তিনি।
স্বামীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পেরেও মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন অভিনেতার স্ত্রী। তান্যার দাবি, সম্পর্কে থাকাকালীন তৃতীয় ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়লে তা প্রতারণা হিসাবে ধরা হয় না, এমনটাই মনে করতেন নায়কের স্ত্রী।
নায়কের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী মানসিক দিক দিয়ে অন্তরঙ্গ ছিলেন বেশি। অভিনেতার স্ত্রীর বিশ্বাস ছিল, যে সম্পর্কে মানসিক ঘনিষ্ঠতা বেশি রয়েছে সেই সম্পর্কই শ্রেষ্ঠ। এমনকি, এই ধরনের সম্পর্কে থেকে কেউ যদি অন্য কারও সঙ্গে শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন তা-ও অন্যায় নয়।
সংসারের বয়স একটু একটু করে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নায়কের পরকীয়া সম্পর্কের সংখ্যাও ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকে বলে তান্যার দাবি। সব জেনেশুনেও দুই সন্তানের কথা ভেবে চুপ করে ছিলেন অভিনেতার স্ত্রী।
নায়কের স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, তিনি একা সব যন্ত্রণা সহ্য করে নিতে পারবেন। কিন্তু যে মুহূর্তে বাবার পরকীয়ার কথা তাঁর সন্তানের কানে পৌঁছোবে, সেই মুহূর্তে পদক্ষেপ করবেন তিনি। ঠিক সেই ঘটনাই ঘটল তাঁদের সংসারে।
নায়কের পরকীয়ার কথা জানতে পারলেন তাঁর দুই সন্তান। আর হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারলেন না অভিনেতার স্ত্রী। নিজের ম্যানেজার মারফত এক মহিলা গোয়েন্দাকে ভাড়া করলেন নায়কের স্ত্রী। সেই মহিলা গোয়েন্দা আর কেউ নন, তান্যা পুরী।
অভিনেতা সারা দিনে কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন— খুঁটিনাটি জানতে চেয়েছিলেন নায়কের স্ত্রী। গোয়েন্দাগিরি কিছু দিন চালাতেই অভিনেতার সকল গোপন সত্য তাঁর স্ত্রীর কাছে ফাঁস হয়ে যায়। এত বছরের সন্দেহ বাস্তবে পরিণত হয়।
হাতেনাতে স্বামীর পরকীয়ার প্রমাণ পেয়ে নায়ককে সরাসরি প্রশ্ন করেছিলেন তাঁর স্ত্রী। ধরা পড়ে অভিনেতাও নিজের ভুল স্বীকার করেছিলেন। ২০ বছর ধরে তিনি যে তাঁর স্ত্রীকে ঠকিয়ে চলেছেন, তা স্বীকার করে নাকি ক্ষমাপ্রার্থনা করেন অভিনেতা।
স্বামীকে ক্ষমা চাইতে দেখে মন গলে যায় তাঁর স্ত্রীর। বিবাহবিচ্ছেদের পথে আর পা বাড়াতে চাননি দু’জনে। বরং দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নতুন ভাবে পথচলা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। অভিনেতাও প্রতিশ্রুতি দেন যে, আর কখনও পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়বেন না।