Kanhaiya Lal Khatik

নেই কোনও নিরাপত্তারক্ষী, চার কোটি টাকার সোনায় মোড়া দেহ! একসময়ের সব্জিবিক্রেতা আজ মরুরাজ্যের ‘গোল্ডম্যান’

একসময়ের ফল ও সব্জিবিক্রেতার শরীর আজ মোড়া থাকে কেজি তিনেকেরও বেশি সোনা দিয়ে! সোনা কেনা যেন নেশায় পরিণত হয়েছে এই ব্যবসায়ীর!

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:৪৩
Share:
০১ ১৬

একসময় বন্ধুর কাছ থেকে ২০ গ্রামের সোনার হার ধার করে পরেছিলেন। তার থেকেই সোনার প্রতি অমোঘ আকর্ষণ তৈরি হয়। ইচ্ছে থাকলেও সোনা কেনার সামর্থ্য ছিল না তখন। কারণ একসময় ঠেলাগাড়ি নিয়ে ফল ও সব্জি বিক্রি করতেন। সোনার প্রতি নেশা তাঁকে আজ সফল ব্যবসায়ীতে পরিণত করেছে। ব্যবসায় লাভের অঙ্কের সমানুপাতিক হারে তাঁর শরীরে সোনা জমার পরিমাণ বেড়েছে।

০২ ১৬

একসময়ের ফল ও সব্জিবিক্রেতার শরীর আজ মোড়া থাকে কেজি তিনেকেরও বেশি সোনা দিয়ে! প্রতি দিন কেজি কেজি সোনা পরে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় এই ব্যবসায়ীকে। আর এই স্বর্ণপ্রীতিই তাঁর জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোনা পরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য তাঁর কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা।

Advertisement
০৩ ১৬

রোহিত গোদারা গ্যাংয়ের কাছ থেকে এমনই হুমকি পেয়েছেন রাজস্থানের ফল ও সব্জি ব্যবসায়ী কানহাইয়ালাল খটিক। চিতৌরগড়ের ‘গোল্ডম্যান’ নামেই তিনি অধিক পরিচিত। তাঁর সোনার অলঙ্কারের প্রাচুর্য দেখে চোখ টাটিয়েছে কুখ্যাত গ্যাংস্টারের। রোহিত গোদারা গ্যাংয়ের পক্ষ থেকে একাধিক বার হুমকির ফোন আসে বলে অভিযোগ কানহাইয়ালালের।

০৪ ১৬

পাঁচ কোটি টাকা গ্যাংয়ের হাতে তুলে না দিলে পরিণতি মারাত্মক হবে, সোনা পরে ঘুরে বেড়ানো চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া শুরু করে তারা। দু’বার ফোনে কোনও উত্তর না পেয়ে খটিককে পর পর আরও কয়েক বার ফোন করা হয় বলে অভিযোগ। কয়েক বার ফোন ও হোয়্যাট্‌সঅ্যাপ কল পাওয়ার পর শেষমেশ পুলিশের দ্বারস্থ হন কানহাইয়ালাল।

০৫ ১৬

পুলিশের হাতে একটি অডিয়ো রেকর্ডিং তুলে দেন কানহাইয়ালাল। সেখানে পাঁচ কোটি টাকা তোলাবাজি চাওয়ার কথা বলা হয়েছে বলে পুলিশকে জানান ‘গোল্ডম্যান’। এই হুমকি ফোন পাওয়ার পর থেকেই সন্ত্রস্ত হয়ে রয়েছেন কানহাইয়ালাল। তাঁর দাবি, এই হুমকির পর প্রাণহানির আশঙ্কাও করছেন তিনি।

০৬ ১৬

প্রথমে ঠেলাগাড়িতে সব্জি বেচলেও পরে শুধুমাত্র ফলের ব্যবসায় মনোনিবেশ করেন কানহাইয়ালাল। কাশ্মীর থেকে আপেল আমদানি করে চিতৌরগড়ে বিক্রি করতে শুরু করেন। সেই ব্যবসা ধীরে ধীরে ফুলেফেঁপে ওঠে। পাল্লা দিয়ে সোনার প্রতি তাঁর আগ্রহ বাড়তে থাকে। একের পর এক সোনার অলঙ্কার জমা হতে থাকে তাঁর সিন্দুকে। সোনা কেনা নেশায় পরিণত হয় চিতৌরের ফল ব্যবসায়ীর।

০৭ ১৬

বর্তমানে তিনি প্রায় সাড়ে তিন কেজি সোনার অলঙ্কার সব সময় পরে থাকেন। শিকলের মতো তিন-চারটি হার, হাতের আট আঙুলে মোটা মোটা আংটি এবং চওড়া পাতের ব্রেসলেট দিয়ে মোড়া থাকেন ৫০ বছর বয়সি ব্যবসায়ী। হলুদ ধাতুর বর্তমান মূল্য অনুসারে (২৪ ক্যারেট সোনার প্রতি ১০ গ্রাম ১.২৯ লক্ষ টাকা), তিনি প্রতি দিন প্রায় ৪.১ কোটি টাকার সোনা পরে ঘুরে বেড়ান। আজ পর্যন্ত কোনও ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করেননি স্থানীয় খটিক সম্প্রদায় সমিতির জেলা সভাপতি কানহাইয়া।

০৮ ১৬

কানহাইয়ালাল জানিয়েছেন, সুরকার, সঙ্গীতশিল্পী বাপ্পী লাহিড়ির বড় ভক্ত তিনি। ছেলেবেলা থেকেই তাঁর মতো সারা গায়ে সোনা পরার শখ ছিল। তার পর ২০ বছর ধরে ব্যবসায় ভাগ্যলক্ষ্মী তাঁর প্রতি প্রসন্ন থাকায় সেই শখ পূরণ করতে পেরেছেন তিনি।

০৯ ১৬

গ্যাংস্টার লরেন্স বিশ্নোইয়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রোহিত গোদারার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যাকাণ্ডের মামলা ঝুলছে দেশে। রোহিত বর্তমানে কানাডার বাসিন্দা। ২০২৩ সালে করণী সেনার প্রধান সুখদেব সিংহ গোগামেদিকে হত্যার দায় স্বীকার করেছিল এই রোহিত গোদারা গ্যাংই।

১০ ১৬

বিদেশের মাটিতে বসে ফোন করে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা চাওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে রোহিত গোদারার বিরুদ্ধে। বার বার আসতে থাকে হুমকি। টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় গ্যাংয়ের পক্ষ থেকে। এর মধ্যে রয়েছে গোল্ডি ব্রার (পঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালা হত্যাকাণ্ডের মূলচক্রী মনে করা হয় যাঁকে), রোহিত গোদারা এবং অনমোল বিশ্নোইয়ের মতো কুখ্যাত গ্যাংস্টারের নাম।

১১ ১৬

যাঁদের থেকে টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়, তাঁদের বেশির ভাগই নির্মাতা, ঠিকাদার, বড় ব্যবসায়ী, ক্লাব বা হোটেলের মালিক, অবৈধ কল সেন্টারের মালিক অথবা স্থানীয় রাজনীতিবিদ। বিদেশ থেকে ‘ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি)’, অর্থাৎ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফোন করে টাকা চায় কুখ্যাত অপরাধীরা। এই পদ্ধতিটি ‘ডাব্বা কলিং’ নামের পরিচিত পুলিশমহলে।

১২ ১৬

কানহাইয়ার দাবি, এই প্রথম নয়, এর আগেও প্রাণনাশ, তোলাবাজির হুমকি পেয়েছেন। তবে এই প্রথম কোনও গ্যাংস্টারের কাছ থেকে হুমকি ফোন পেলেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে যাতে হইচই না হয় তাই চুপচাপ টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁকে। পুলিশ আপাতত এই ঘটনার তদন্ত করছে বলে জানা গিয়েছে।

১৩ ১৬

কানহাইয়ালালের মতোই আরও এক ব্যবসায়ী রয়েছেন যাঁর সোনাপ্রীতি গোটা দেশে পরিচিত। তিনি বিহারের পটনার বাসিন্দা প্রেম সিংহ। কানহাইয়ার চেয়ে বেশি সোনা পরে থাকেন প্রেম। তাঁর গায়ে থাকে প্রায় পাঁচ কেজি সোনা। সারা শহর চষে বেড়ান সোনার মোড়া মোটরবাইক চড়ে। তাঁকে পথেঘাটে দেখে খানিকটা হাঁ করেই তাকিয়ে দেখেন পথচলতি মানুষ।

১৪ ১৬

বিহারের ‘গোল্ডম্যান’ নামে পরিচিত প্রেম। তাঁর গলায় থাকে ১৭টি সোনার হার, তার মধ্যে একটির লকেটে লেখা ‘গোল্ডম্যান অফ বিহার’। প্রেম আদতে ভোজপুর জেলার কল্যাণপুর পঞ্চায়েতের বাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন ঠিকাদার। কাজের সূত্রে সে রাজ্যের রাজধানী শহরে বাস করেন তিনি।

১৫ ১৬

প্রায়ই তাঁকে বিহারের রাস্তায় সোনার বুলেটে চেপে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। নিজেকে আপাদমস্তক সোনায় মুড়িয়ে রাখা প্রেমের রয়্যাল এনফিল্ড মোটরবাইকটির বেশ কিছু অংশ সোনার পাত দিয়ে মোড়ানো। তাঁর বাহনটিতেও ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম সোনা রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য ১২-১৪ লক্ষ টাকা। এই বিশেষ মোটরবাইকটি তিনি বেঙ্গালুরু থেকে তৈরি করিয়েছেন।

১৬ ১৬

পাঁচ কোটিরও বেশি মূল্যের সোনা দেহের নানা অংশে থাকে তাঁর। তা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করতে বিন্দুমাত্র ভয় পান না প্রেম। ডাকাতি বা প্রাণসংশয়ের কোনও আশঙ্কা করেন না তিনি। প্রেমের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এত সোনা সব সময়ে গায়ে থাকে, লুট হয়ে যাওয়ার ভয় নেই? উত্তরে তিনি জানান, বিহারের সুশাসনের প্রতি তাঁর ভরসা আছে।

সব ছবি:সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement