যে বলি অভিনেতার ছবি বার বার দেখে স্বপ্ন দেখার সাহস পেয়েছিলেন, বর্তমানে সম্পত্তির পরিমাণের অঙ্কে সেই অভিনেতাকেই ছাপিয়ে গিয়েছেন ব্যবসায়ী। শুধু তা-ই নয়, মুম্বইয়ের ব্যবসায়ী হিসাবেও বেশ নামডাক রয়েছে আনন্দ পণ্ডিতের।
১৯৬৩ সালে জন্ম আনন্দের। কেরিয়ারের পথে কী ভাবে এগোবেন তা নিয়ে তেমন স্পষ্ট ধারণা ছিল না আনন্দের। কিন্তু তাঁর জীবনে দিশা দেখিয়েছিলেন বলিউডের ‘বিগ বি’ অমিতাভ বচ্চন। তিনিই নাকি আনন্দের পথপ্রদর্শক।
১৯৭৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে যশ চোপড়ার পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘ত্রিশূল’। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন অমিতাভ। তখন অবশ্য আনন্দের বয়স ২৫ বছর।
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে আনন্দ জানিয়েছিলেন, ‘ত্রিশূল’ মু্ক্তি পাওয়ার পর তিনি প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি দেখতে গিয়েছিলেন। সিনেমাটি দেখে তাঁর এত ভাল লেগে গিয়েছিল যে, কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ বার তিনি প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ‘ত্রিশূল’ দেখেছিলেন।
আনন্দ জানিয়েছিলেন, ‘ত্রিশূল’ ছবির চিত্রনাট্যের চেয়েও তাঁকে বেশি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন অমিতাভের অভিনয়। বিজয় চরিত্রটির প্রতি অন্য রকম বিশ্বাসযোগ্যতা জন্মেছিল আনন্দের। ছবিটি ক্রমাগত দেখার পর নিজের কেরিয়ার স্থির করে ফেলেছিলেন আনন্দ।
‘ত্রিশূল’ দেখার পর সব কিছু ছেড়ে মুম্বই চলে গিয়েছিলেন আনন্দ। সেখানে গিয়ে কেরিয়ার গড়ে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন বুনে ফেলেছিলেন তিনি। সেই স্বপ্ন সত্যিও হয়েছিল তাঁর।
মুম্বইয়ে গিয়ে রিয়্যাল এস্টেটের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন আনন্দ। বর্তমানে তিনি মুম্বইয়ের খ্যাতনামা রিয়্যাল এস্টেট সংস্থার মালিক। সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা উপার্জন হয় তাঁর।
আনন্দের উপার্জনের অন্য একটি সূত্রও রয়েছে। যে হিন্দি ছবি দেখে তিনি অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন, সেই হিন্দি চলচ্চিত্রজগৎ থেকেই রোজগারের সূত্রপাত আনন্দের।
২০১৫ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘প্যার কা পঞ্চনামা ২’। সেই ছবির চলচ্চিত্র পরিবেশক হিসাবে কাজ করেছিলেন আনন্দ। তার পর ধীরে ধীরে বলিপাড়ায় নিজের জায়গা তৈরি করে ফেলেন তিনি।
চলচ্চিত্র পরিবেশনার পাশাপাশি ছবির প্রযোজনার দায়িত্বও পালন করতে শুরু করেন আনন্দ। ‘গ্রেট গ্র্যান্ড মস্তি’, ‘টোটাল ধামাল’, ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’র মতো একাধিক ছবির প্রযোজক হিসাবে কাজ করেছেন তিনি।
অমিতাভের ছবিতেও কাজ করার সুযোগ পান আনন্দ। অমিতাভ অভিনীত ‘সরকার ৩’ এবং ‘চেহরে’ নামের দু’টি হিন্দি ছবি প্রযোজনা করেছেন আনন্দ।
সম্পত্তির তুলনায় অবশ্য অমিতাভকে টপকে গিয়েছেন আনন্দ। বলিপাড়া সূত্রে খবর, আনন্দের সম্পত্তির পরিমাণ ‘বিগ বি’র সম্পত্তির পাঁচ গুণ।
‘হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২৫’-এর তালিকা অনুযায়ী, অমিতাভের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১,৬৩০ কোটি টাকা। বলিউডের নক্ষত্রদের মধ্যে তিনি এই তালিকায় পঞ্চম স্থান অধিকার করেছেন।
একই তালিকায় অমিতাভকে টপকে অনেকটাই উপরে চলে গিয়েছেন আনন্দ। ‘হুরুন ইন্ডিয়া রিচ লিস্ট ২০২৫’-এর তালিকা অনুযায়ী, আনন্দের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৮,৬৬০ টাকা।