অনুরাগ কাশ্যপের মতো পরিচালকের হাত ধরে বলিপাড়ায় পদার্পণ। ১৫ বছর ধরে বলিপাড়ার সঙ্গে যুক্ত। বর্তমানে জনপ্রিয় দক্ষিণী ছবিতে অভিনয় করে আরও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন বলি অভিনেতা গুলশন দেবইয়া। তবে, অভিনেতা তাঁর দাম্পত্যজীবনের টানাপড়েন নিয়ে আলোচনা না চাইলেও, সেই কারণে বার বার চর্চায় এসেছেন তিনি।
ফ্যাশন নিয়ে পড়াশোনা করে স্নাতক হন গুলশন। প্রায় ১০ বছর ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ফ্যাশন নিয়ে শিক্ষকতাও করেছেন গুলশন। তবে তাঁর আগ্রহ ছিল অভিনয়ের প্রতি। মঞ্চে বহু নাটকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সেখান থেকেই বড়পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ পান গুলশন।
২০১০ সালে অনুরাগ কাশ্যপের পরিচালনায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘দ্যাট গার্ল ইন ইয়েলো বুট্স’। এই ছবির হাত ধরে বলিউডে কেরিয়ার শুরু হয় গুলশনের। তার পর ‘দম মারো দম’, ‘শয়তান’, ‘হেট স্টোরি’, ‘গোলিয়োঁ কি রাসলীলা-রামলীলা’, ‘হান্টার’, ‘মর্দ কো দর্দ নহি হোতা’, ‘৮ এ.এম মেট্রো’, ‘উলঝ’-এর মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
চলতি বছরে ‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ১’ নামের দক্ষিণী ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করে দর্শকের বড় অংশের কাছে পৌঁছে গিয়েছেন। বড়পর্দার পাশাপাশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও নিজের জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। ‘আফসোস’, ‘দহাঢ়’, ‘গান্স অ্যান্ড গুলাব্স’-এর মতো একাধিক ওয়েব সিরিজ়েও অভিনয় করেছেন গুলশন।
ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করতে পছন্দ করেন না গুলশন। তিনি এক অভিনেত্রীর সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু আট বছরের সংসারের পর বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। বিয়ে-বিচ্ছেদ কোনও কিছু নিয়েই আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেননি গুলশন।
গুলশনের দাবি, সম্পর্ক-সংসার-বিবাহবিচ্ছেদ খুবই ব্যক্তিগত বিষয়। সেগুলি ব্যক্তিগত পরিসরের মধ্যে রাখতেই পছন্দ করেন অভিনেতা। তবে, বিবাহবিচ্ছেদের জন্য নিজের কর্মজীবনের কঠিন সময়কে দায়ী করেছেন তিনি।
২০১০ সালে অভিনেতা হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেন গুলশন। সেই সময় তাঁর আলাপ হয়েছিল বিদেশি অভিনেত্রী কালিররো টিয়াফেটার সঙ্গে। বন্ধু মারফত পরিচিতি হলেও তাঁদের বন্ধুত্ব ক্রমশ গাঢ় হতে থাকে। তাঁদের সম্পর্ক প্রেমে পরিণতি পায়।
দু’বছর ধরে কালিররোর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন গুলশন। দু’বছর প্রেম করার পর ২০১২ সালে বিদেশিনি নায়িকাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তাঁদের আট বছরের দাম্পত্যে চিড় ধরে যায়। ২০২০ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় দুই তারকার।
১৯৮৯ সালের জুলাই মাসে গ্রিসের আথেন্স শহরে জন্ম কালিররোর। গুলশনের চেয়ে ১১ বছরের ছোট তিনি।
‘পল পল দিল কে পাস’, ‘দিল ধড়কনে দো’-র মতো ছবির পাশাপাশি ‘মেড ইন হেভেন’-এর মতো ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে কালিররোকে। তবে, মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ তেমন পাননি তিনি।
বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, ২০২০ সালে বিবাহবিচ্ছেদের পর তিন বছর ‘সিঙ্গল’ ছিলেন গুলশন। কিন্তু তিন বছর পর আবার প্রাক্তন স্ত্রীকেই ডেট করা শুরু করেন অভিনেতা।
গুলশনের দাবি, কালিররোর সঙ্গে ফের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বলেই যে তাঁরা আবার বিয়ে করে ফেলবেন— তার কোনও অর্থ নেই। গুলশন এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘আমরা কোনও ভাল রেস্তরাঁ খুঁজে সেখানে খেতে যাই। আমরা একসঙ্গে ছুটি কাটাতেও যাই। অতীতের ভুলগুলো থেকে আমরা শিখছি। ভবিষ্যতে যেন একই ভুল না হয়, সেই চেষ্টায় থাকি।’’
বিবাহবিচ্ছেদের জন্য কর্মজীবনের ব্যস্ততা এবং কঠিন সময়কে দায়ী করেছেন গুলশন। তাঁর দাবি, কেরিয়ার শুরুর সময়েই বিয়ে করে ফেলেছিলেন তিনি। পর পর কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করলেও তেমন সাফল্য পাচ্ছিলেন না। তাই কেরিয়ার নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
গুলশন সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘কেরিয়ারে কী ভাবে উন্নতি করতে পারি, তা নিয়ে সারাদিন চিন্তা করতাম আমি। কেরিয়ারের দিকে মন দিতে গিয়ে আমি জীবনের অন্য কোনও দিকে মন দিতে পারিনি। দাম্পত্যেও তাঁর প্রভাব পড়েছিল।’’
কালিররো আবার জীবনে ফিরে আসা প্রসঙ্গে গুলশন বলেছিলেন, ‘‘কালিররো আমার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। আমি যেন একেবারে অন্য মানুষ হয়ে গিয়েছি। এখন জীবনের এক দিকে মন দিতে গিয়ে অন্য কিছু অবহেলা করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবনে ভারসাম্য বজায় রেখে চলব।’’