Bollywood Gossip

পরামর্শ মানেননি দিলীপ কুমারেরও, কপূর-পত্নীকে দেওয়া ‘ভয়ঙ্কর প্রতিশ্রুতি’ রাখতে দেউলিয়া হয়ে যান বলি প্রযোজক!

মাঝপথে কী কারণে সিনেমায় নায়িকা বদল হল, সে কারণও নাকি দর্শককে জানাতে রাজি ছিলেন দিলীপ কুমার। দর্শকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করারও পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর কোনও পরামর্শেই কর্ণপাত করেননি বলিউডের ছবিনির্মাতা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ১১:৫৬
Share:
০১ ২১

বাবা ছিলেন বলিপাড়ার খ্যাতনামী ছবিনির্মাতা। চলচ্চিত্রজগতের জনপ্রিয় তারকাদের সঙ্গে ওঠাবসা ছিল তাঁর। তবুও বলি অভিনেতার স্ত্রীকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে গিয়ে কেরিয়ারের সর্বনাশ করে ফেলেছিলেন তিনি। লোকসানে আকণ্ঠ ডুবে থাকা সংসারের দায়দায়িত্ব এসে পড়েছিল পরিচালক-পুত্রের কাঁধে। বাবার কর্মের ফল ভোগ করেছিলেন সেই তারকা-সন্তান।

০২ ২১

ষাটের দশকে জনপ্রিয় ছবিনির্মাতা ছিলেন সিএল ধীর। হিন্দি ছবিতে কাজ করবেন বলে তৎকালীন পূর্ব আফ্রিকা থেকে মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এমনকি, চিত্রনাট্য লেখা থেকে পরিচালনার প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন সিএল ধীর। ‘জ়িন্দেগি’, ‘আলিঙ্গন’ এবং ‘বহু বেটি’র মতো হিন্দি ছবির পরিচালনা করেছিলেন তিনি।

Advertisement
০৩ ২১

ষাটের দশকে ‘রানো’ নামের একটি হিন্দি ছবির প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন সিএল ধীর। সেই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করছিলেন বলি অভিনেতা শম্মী কপূরের স্ত্রী তথা অভিনেত্রী গীতা বালি। গীতার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন ধর্মেন্দ্র।

০৪ ২১

বলিপাড়া সূত্রে খবর, ‘রানো’ ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি সহ-প্রযোজনাও করেছিলেন গীতা। প্রযোজক হিসাবে ছবির জন্য সিএল ধীর যে পরিমাণ টাকা ঢেলেছিলেন, সমপরিমাণ অর্থ দিয়েছিলেন গীতাও। সিনেমার শুটিও বেশ সুষ্ঠু ভাবে এগোচ্ছিল। কিন্তু শুটিংয়ের শেষ পর্বে গিয়ে পড়েছিল বাধা।

০৫ ২১

সিনেমার শুটিং শেষ হতে যখন মাত্র ছয় থেকে সাত দিন বাকি, তখনই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন গীতা। কিন্তু তাঁর জন্য ছবির কাজ থেমে থাকুক, তা চাননি অভিনেত্রী। তাই ছবির কাজ এগিয়ে রাখার জন্য সিএল ধীরকে অনুরোধ করেছিলেন গীতা।

০৬ ২১

গীতা নাকি সহ-প্রযোজককে অনুরোধ করে বলেছিলেন, ‘‘আমার যে দৃশ্যগুলি শুট করা বাকি রয়েছে, তা বাদ রেখে ছবির অন্য কাজগুলি সেরে ফেলো। আমার অংশের দৃশ্যগুলি শুট করতে তিন দিন সময় লাগার কথা। সুস্থ হয়ে ফিরে এসে সেই কাজ শেষ করে ফেলব।’’

০৭ ২১

আবার ফিরে এসে শুটিং করবেন, সে কথা দিলেও তা রাখতে পারেননি গীতা। পঞ্জাবে গিয়ে স্মলপক্স হয়ে গিয়েছিল তাঁর। পরে সেই অসুস্থতা নিয়েই পঞ্জাব থেকে মুম্বই চলে গিয়েছিলেন গীতা। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে দেখা যায়।

০৮ ২১

কানাঘুষো শোনা যেতে থাকে যে, মৃত্যুশয্যায় সিএল ধীরের কাছে প্রতিশ্রুতি দাবি করেছিলেন গীতা। তিনি নাকি বলেছিলেন, ‘‘আমি মারা গেলে তুমি এই ছবির কাজও ছেড়ে দেবে। আমায় কথা দাও।’’ নায়িকাকে সেই কথাই দিয়েছিলেন সিএল ধীর।

০৯ ২১

১৯৬৫ সালের জানুয়ারি মাসে মারা গিয়েছিলেন গীতা। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৪ বছর। ছবির নায়িকা এবং সহ-প্রযোজককে হারিয়ে ভেঙে পড়েছিলেন সিএল ধীর। ছবির কাজ নিয়েও বিন্দুমাত্র ভাবনাচিন্তা করছিলেন না তিনি।

১০ ২১

ছবির শেষ পর্বের কাজ বাকি রয়েছে দেখে সিএল ধীরকে উৎসাহদানের জন্য হাত বাড়িয়েছিলেন বলি অভিনেতা দিলীপ কুমার। গীতার মৃত্যুর পর সিএল ধীর যেন অন্য নায়িকাকে দিয়ে বাকি দৃশ্যের শুটিং শেষ করে ফেলেন, তেমনই পরামর্শ দিয়েছিলেন অভিনেতা।

১১ ২১

এমনকি, হঠাৎ নায়িকার মুখ বদলের কারণ জানিয়ে দর্শকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতেও রাজি ছিলেন দিলীপ। তিনি চেয়েছিলেন যে, ‘রানো’ ছবির বাকি থাকা দৃশ্যগুলিতে অভিনয় করুন বলি নায়িকা মীনা কুমারী। বাকি কাজটুকু শেষ হওয়ার পর ছবিটি যেন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়, সেই আশায় মন বেঁধেছিলেন দিলীপ। কিন্তু অভিনেতার সব আশায় জল ঢেলে দিয়েছিলেন সিএল ধীর।

১২ ২১

দিলীপ পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, সিনেমার যে অংশ থেকে মীনার দৃশ্য শুরু হবে, তার আগে দিলীপকে বড় পর্দায় দেখানো হবে। পর্দায় হাজির হয়ে দর্শকের কাছে নায়িকার হঠাৎ বদল হওয়ার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করবেন তিনি। গীতার মৃত্যুর পর শেষ দৃশ্যটুকু যে অন্য নায়িকাকে দিয়ে শুট করানো হয়েছে, তা-ও জানাতে রাজি ছিলেন দিলীপ।

১৩ ২১

দিলীপের প্রস্তাব শুনে বেঁকে বসেছিলেন সিএল ধীর। তিনি জানিয়েছিলেন, গীতাকে মৃত্যুশয্যায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভাঙতে রাজি নন। গীতাকে ছাড়া যে এই ছবি মুক্তি পাবে না, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রযোজক।

১৪ ২১

শেষ পর্যন্ত গীতাকে দেওয়া কথাই রেখেছিলেন সিএল ধীর। ছবিটির বাকি অংশও আর শুট করা হয়নি। ছবিটিও আর মুক্তি পায়নি। কিন্তু প্রতিশ্রুতি রাখতে গিয়ে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছিলেন প্রযোজক। ছবির জন্য ঢালা সব টাকাই ভেসে গিয়েছিল তাঁর। সংসারের খরচও চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল সিএল ধীরের।

১৫ ২১

সংসারকে অর্থাভাবের হাত থেকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছিলেন সিএল ধীরের পুত্র পঙ্কজ ধীর। কম বয়স থেকেই রোজগার করতে শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু উপার্জন করতে গিয়ে পঙ্কজকে ত্যাগ করতে হয়েছিল শৈশবের স্বপ্ন।

১৬ ২১

শৈশব থেকেই অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন ছিল পঙ্কজের। কিন্তু অর্থাভাবের কারণে দীর্ঘ দিন সেই স্বপ্ন পূরণ করার সুযোগ পাননি তিনি। কাঁধের উপর সংসার চালানোর দায়িত্ব ছিল তাঁর।

১৭ ২১

এক সাক্ষাৎকারে পঙ্কজ জানিয়েছিলেন যে, অর্থাভাবের কারণে সংসারের হাল ধরতে বলিপাড়ায় কাজ করা শুরু করেছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে ফিল্মের সেটে যেতেন পঙ্কজ। এ ভাবেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মেছিল তাঁর। ভবিষ্যতে অভিনয় নিয়ে যে কেরিয়ার গড়বেন, তা স্থির করে ফেলেছিলেন পঙ্কজ।

১৮ ২১

কিন্তু ছবি মুক্তি না পাওয়ায় সেই লোকসানের ধাক্কা সামলাতে পারেননি পঙ্কজের বাবা। অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন বুনে যিনি এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁর উপর এসে পড়েছিল সংসারের দায়দায়িত্ব।

১৯ ২১

অভিনয় নয়, পরিস্থিতির চাপে সহ-পরিচালনার মাধ্যমে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন পঙ্কজ। ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পরওয়ানা’ ছবিতে সহ-পরিচালনার মাধ্যমে কাজ শুরু করেন তিনি। পরে একাধিক হিন্দি ছবি এবং ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

২০ ২১

‘মহাভারত’-এর কর্ণের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকমনে চিরকালীন স্থান অধিকার করে নিয়েছিলেন পঙ্কজ। বলিপাড়া সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরেই ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন অভিনেতা।

২১ ২১

মাস কয়েক আগে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছিল পঙ্কজের। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করতে করতেই ৬৮ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন পঙ্কজ।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement