রাশি মেনে যেমন আমাদের চারিত্রিক নানা দিক সম্বন্ধে বলে দেওয়া যায়, তেমনই আমাদের জন্মসংখ্যা দ্বারাও আমাদের সম্বন্ধে গোপন নানা তথ্য বলে দেওয়া সম্ভব। জ্যোতিষশাস্ত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সংখ্যাতত্ত্ব। এর আরও একটি ভাল দিক হল এর সহজ-সরল হিসাব।
জ্যোতিষশাস্ত্রের হিসাব সংখ্যাতত্ত্বের তুলনায় বেশ কঠিন। অন্য দিকে সংখ্যাতত্ত্ব অত্যন্ত সহজ একটি বিষয়। জ্যোতিষশাস্ত্র সম্বন্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খ জ্ঞান না থাকলেও সংখ্যাতত্ত্বের দ্বারা এক জন ব্যক্তির চরিত্রের নানা দিক সম্বন্ধে হদিস দেওয়া সম্ভব।
তবে সংখ্যাতত্ত্বের হিসাবের জন্য সঠিক জন্মতারিখ জানা বাঞ্ছনীয়। সেটি দ্বারা হিসাব করে জন্মসংখ্যা বার করলেই অনেক কিছু জানতে পারা যায়। এখন জেনে নিন কোন জন্মসংখ্যার ব্যক্তিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কেমন হয়।
১ জন্মসংখ্যার জাতক-জাতিকারা জন্মগত ভাবেই নেতৃত্বদানের ব্যাপারে পারদর্শী হন। এঁরা কখনও অপরের প্রতিনিধিত্বে থেকে নিজেকে পুরোপুরি প্রকাশ করতে পারেন না, বরং প্রতিনিধি হয়েই ভাল কাজ করেন। নিজেদের লক্ষ্যপূরণের জন্য এঁরা কঠোর পরিশ্রম করতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না।
এই সকল জাতক-জাতিকারা চাকরির থেকে ব্যবসায় বেশি সফলতা লাভ করেন। এঁরা সাধারণত গম্ভীর স্বভাবেরই হয়ে থাকেন। সফলতার পথে কাউকে আসতে দেন না। লক্ষ্যপূরণ না করে থামেন না।
যে সকল জাতক-জাতিকার জন্মসংখ্যা ২, তাঁরা একটু আবেগতাড়িত হন। তবে প্রয়োজনে দ্বিচারিতা করতে পিছপা হন না এঁরা। সেই কারণে সকলের সঙ্গে এঁদের সম্পর্ক ভাল থাকে। এঁদের এই স্বভাব সহজে কেউ ধরতে পারেন না।
তবে এই সকল ব্যক্তিরা ঝগড়া-ঝামেলা এড়িয়ে চলতে পছন্দ করেন। খামোকা বিবাদ করে নিজেদের মনমেজাজ বিগড়োনোর পক্ষপাতী নন এঁরা। সৃজনশীল কাজ করতে খুব ভালবাসেন ২ জন্মসংখ্যার মানুষেরা।
৩ জন্মসংখ্যার ব্যক্তিরা সামাজিকতার দিক থেকে অন্যদের ছাপিয়ে যান। এঁরা কথা বলতে খুব ভালবাসেন। যেখানে যান, সেখানেই সকলকে মাতিয়ে রাখেন। এঁরা অত্যন্ত মিশুকে প্রকৃতির হন। অপরের সঙ্গে সহজেই মিশে যেতে পারেন।
যে কোনও সৃজনশীল কাজকর্মে এঁরা খুব ভাল সফলতা পান। এ ছাড়া কথা বলতে হবে এমন কাজও এই জন্মসংখ্যার ব্যক্তিদের দ্বারা স্বাভাবিক ভাবেই খুব ভাল হয়। এঁদের মধ্যে কোনও অহংবোধ থাকে না।
যে সকল ব্যক্তির জন্মসংখ্যা ৪, তাঁরা একটু গম্ভীর প্রকৃতির হন। এঁরা বেশি হাসিঠাট্টা পছন্দ করেন না। সময়ের কাজ সময়ে করতে পছন্দ করেন। বেপরোয়া জীবনযাপন মোটেই পছন্দ করেন না।
ছোট থেকেই কঠোর নিয়মের বেড়াজালে জীবন কাটাতে পছন্দ করেন ৩ জন্মসংখ্যার জাতক-জাতিকারা। এঁরা অত্যন্ত কর্মঠও হন। ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাকাউন্টস প্রভৃতি কাজে এঁরা দারুণ সফলতা পান।
রহস্য উন্মোচন করতে ভালবাসেন ৫ জন্মসংখ্যার জাতক-জাতিকারা। সাদামাঠা জীবন এঁদের পছন্দ নয়। সর্বদা নতুন কিছু করার, নতুন কিছু জানার আগ্রহ মনে নিয়ে ঘুরে বেড়ান এই সকল জাতক-জাতিকারা। ঘুরতে প্রচণ্ড ভালবাসেন। তবে মামুলি দু’রাত-তিন দিনের ট্যুর নয়, বনেবাদাড়ে তাবু খাটিয়ে দিনের পর দিন কাটিয়ে দেওয়াতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এঁরা।
তবে ঘুরতে ভালবাসেন বলে যে এঁদের কাজেকর্মে মতি নেই তা কিন্তু নয়। সংবাদমাধ্যম, ট্যুর প্ল্যানার জাতীয় পেশায় এঁরা প্রচুর নাম করেন। ডেস্কে বসে একটানা আট-ন’ঘণ্টা কাজ করে চলা ৫ জন্মসংখ্যার ব্যক্তিদের জন্য নয়। বরং মাঠেঘাটে ঘুরে কাজ করতেই বেশি পছন্দ করেন এঁরা। সুখের জীবন নয়, রহস্যময় জীবনই এঁদের বেশি আকৃষ্ট করে।
৬ জন্মসংখ্যার জাতক-জাতিকারা একটু ঘরোয়া প্রকৃতির হন। বন্ধুবান্ধবের চাইতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতেই বেশি পছন্দ করেন এঁরা। তবে এঁদের যে বন্ধু হয় না তা নয়। এঁরা কাছের মানুষদের অত্যন্ত যত্নে রাখেন। তাই খুব বেশি বন্ধু না হলেও, যে ক’জন বন্ধু হয় তাঁরা কখনও এঁদের ছেড়ে যান না।
আশপাশের মানুষদের ভাল রাখার জন্য ৬ জন্মসংখ্যার ব্যক্তিরা বহু দূর যেতে রাজি আছেন। তাই শিক্ষকতা, ডাক্তারি এই প্রকার কাজ এঁদের দ্বারা খুব ভাল হয়। কারণ, অপরের ভালতেই এঁরা নিজেদের সুখ খুঁজে পান। মানুষের সেবায় এঁরা সর্বদা এগিয়ে আসেন। কখনও কারও খারাপ চান না এঁরা।
ভাবনার সাগরে ডুবে থাকতে পছন্দ করেন ৭ জন্মসংখ্যার জাতক-জাতিকারা। এঁরা সব বিষয় নিয়েই গভীরে গিয়ে ভাবেন। অপরের কাছে যেটি কেবল একটি সরলরেখা, এঁদের কাছে সেটা নানা বিন্দুর সমাহার। ভাবুক প্রকৃতির হওয়ায় এঁদের জীবনে খুব একটা বন্ধুও হয় না। কারণ সকলের পক্ষে এঁদের দার্শনিকতা সহ্য করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না।
তবে নিজের কর্মজীবনের ব্যাপারে ৭ জন্মসংখ্যার ব্যক্তিরা কিন্তু বেশ সচেতন। গবেষণা, অধ্যাপনা এ সকল কাজে এঁরা দারুণ সফলতা পান। অপরের মনে কী চলছে সেটা জানার আগ্রহও এঁদের অনেক। কাছের মানুষদের এঁরা যত্নে রাখতে চান। সেই কারণে তাঁদের মনের গহীনে চলা ভাবনাগুলি এঁরা সর্বদা বুঝে চলার চেষ্টা করেন।
৮ জন্মসংখ্যার ব্যক্তিরাও গম্ভীর প্রকৃতির হন। এঁরা ছোট থেকেই জীবনে কী করতে চান সেটা ঠিক করে নেন। লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে চলেন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া থেকে শুরু করে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, সবটাই এঁদের কাছে সময় নষ্ট করা বলে মনে হয়।
টাকার প্রতি ৮ জন্মসংখ্যার ব্যক্তিদের এক অদ্ভুত টান থাকে। নাবালক থেকে সাবালক হওয়ার পরই এঁরা আয়ের পথ খোঁজা শুরু করে দেন। জীবনে অনেক টাকা আয় করতে হবে, এটাই হয় এঁদের মূল মন্ত্র। চাকরির থেকে ব্যবসার এঁরা বেশি সফলতা পান।
৯ জন্মসংখ্যার জাতক-জাতিকারা অপরের প্রতি অত্যন্ত সহমর্মী হন। এঁরা সজ্ঞানে এমন কোনও কাজ করেন না যাতে অপর ব্যক্তি কষ্ট পাবেন। এই জন্মসংখ্যার ব্যক্তিদের পশুপ্রেমও হয় অত্যন্ত বেশি। এঁরা কখনও কাউকে কষ্ট দেন না আর সেটাই এঁদের জীবনের মূল আদর্শ।
আদর্শবাদী ৯ জন্মসংখ্যার জাতক-জাতিকারা নিজেদের আদর্শের বাইরে গিয়ে কখনও কোনও কাজ করেন না। এঁরা সমাজের জন্য এমন কিছু করার লক্ষ্য নিয়ে চলেন যাতে অপরের ভাল হয়। সে কারণে শিক্ষকতা, কাউন্সিলিং প্রভৃতি এ সকল কাজে এঁরা সফল হন।