ননদ বলিপাড়ার নামজাদা ডাকসাইটে সুন্দরী অভিনেত্রী। রয়েছে বচ্চন পরিবারের সঙ্গে পারিবারিক যোগও। সেই সূত্রে তারকাদের কাছাকাছি থাকার সুযোগ পেয়েও তা থেকে দূরে থেকেছেন। তারকাদের সঙ্গে পরিচিতি থাকার সুবিধা নিজের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনেও ব্যবহার করেননি। রোশনাইয়ের আড়ালে থাকলেও বারংবার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের জন্য কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে রাই-পত্নী শ্রীমা রাইকে।
মেঙ্গালুরুতে জন্ম হলেও আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় বড় হয়ে ওঠা শ্রীমার। পড়াশোনা শেষ করার পর ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ দিন এই পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকার পর কেরিয়ার পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীমা। পাশাপাশি বদলে যায় তাঁর ব্যক্তিগত জীবনও।
২০০৯ সালে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হন শ্রীমা। তাঁর বয়স যখন কুড়ির গোড়ায়, তখন বিদেশ থেকে ভারতে ফিরে আসেন তিনি। বলি অভিনেত্রী ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের বাপের বাড়ির সঙ্গে আলাপ-পরিচিতি তৈরি হয় শ্রীমার।
রাই পরিবারের সঙ্গে শ্রীমার পরিবারের আলাপ হয় নৈশভোজের পার্টিতে। ঐশ্বর্যার দাদা আদিত্য রাইয়ের সঙ্গেও বন্ধুত্ব হয় শ্রীমার। সেই বন্ধুত্ব ক্রমশ গভীর হতে শুরু করে।
একে অপরকে ভাল লাগতে শুরু করে আদিত্য এবং শ্রীমার। অন্য দিকে, দুই পরিবারও চাইত, চার হাত দ্রুত এক হয়ে যাক। পরিবারের পরামর্শ মেনে বাগ্দান পর্ব সেরে ফেলেন শ্রীমা এবং আদিত্য।
এক বছর বাগ্দত্তা থাকার পর আদিত্যকে বিয়ে করেন শ্রীমা। বিদেশ থেকে ফিরে পাকাপাকি ভাবে মুম্বইয়ে থাকতে শুরু করেন তিনি। ‘রায়বাঘিনী ননদিনী’ যখন রাই-কন্যা ঐশ্বর্যা, তখন বচ্চন পরিবারের সঙ্গেও যোগসূত্র স্থাপন হয়ে যায় শ্রীমার।
আলোর রোশনাইয়ের সংস্পর্শে থাকলেও কখনও নিজে সেই জাঁকজমকের অংশ হননি শ্রীমা। বরং চাকচিক্যের আড়ালে সংসার এবং কেরিয়ার নিয়ে সাদামাঠা এক জীবন কাটাতে চেয়েছেন তিনি।
বিয়ের পর দুই সন্তানের জন্ম দেন শ্রীমা। মডেল হিসাবে কেরিয়ার শুরু করার পর ব্যাঙ্কে চাকরি করেছেন তিনি। এমনকি, বিভিন্ন সংস্থার প্রচারের পাশাপাশি পত্রিকার জন্যও ফোটোশুট করেছেন শ্রীমা।
বচ্চন পরিবারের কাছাকাছি থাকার সুবাদে অন্য খাতে কেরিয়ার বইয়ে নিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু তিনি সে সবের ধার ধারেননি। বরং, ব্যাঙ্কের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর নেটপ্রভাবী হিসাবে কেরিয়ার গড়ে তোলেন।
সমাজমাধ্যমের পাতায় কন্টেন্ট সৃষ্টি করলেও ঐশ্বর্যার সঙ্গে কোনও ছবি পোস্ট করেন না শ্রীমা। তা নিয়েই কটাক্ষের শিকার হতে হয় রাই পরিবারের পুত্রবধূকে। কারও কারও দাবি, শ্রীমা নাকি ঐশ্বর্যার খ্যাতি দেখে হিংসা করেন। সে কারণে একই পরিবারের সদস্য হয়েও নায়িকার সঙ্গে কোনও ছবি পোস্ট করেন না শ্রীমা।
শ্রীমার চরিত্র ‘জটিল’ বলেও সমালোচনা করেছেন অনেকে। তিনি অবশ্য বেশি দিন তা সহ্য করেননি। নেটপাড়ায় মন্তব্য করে তিনি লেখেন, ‘‘যাঁরা নায়িকার ছবি দেখতে চাইছেন, তাঁরা খুব সহজেই নায়িকার প্রোফাইলে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন। সেখানে নায়িকার অঢেল ছবি। আমার প্রোফাইলে তাঁর ছবি দেখতে আসার কোনও দরকারই নেই। তবে, নায়িকার প্রোফাইলে গিয়ে দেখবেন তো, আমার কোনও ছবি রয়েছে কি না।’’
শ্রীমা আরও জানান যে, তিনি চাইলে প্রতিপত্তি খাটিয়ে অন্য পেশা বেছে নিতে পারতেন। কিন্তু এ ভাবে কাজের সুযোগ খোঁজার ঘোর বিরোধী তিনি। স্বাধীন ভাবে কাজ করতে চান বলে নেটপ্রভাবী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীমা।
বলিপাড়া সূত্রে খবর, ঐশ্বর্যার ননদ শ্বেতা বচ্চন নন্দ জন্মদিন উপলক্ষে ফুল উপহার দিয়েছিলেন শ্রীমাকে। ধন্যবাদ জানিয়ে সেই ফুলের ছবি পোস্ট করেছিলেন শ্রীমা। পাশাপাশি, শ্বেতার নামও সেই পোস্টে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
ননদের ননদের সঙ্গে সখ্য সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করেন শ্রীমা। তা নিয়েও কম কথা শুনতে হয়নি শ্রীমাকে। একাংশের অনুমান, বচ্চন পরিবারের সঙ্গে ঐশ্বর্যার দূরত্ব তৈরির নেপথ্যেও নাকি ছিলেন শ্রীমা।
এক সাক্ষাৎকারে শ্রীমা বলেছিলেন, ‘‘আমি তো প্রচারে থাকি না। সবাই হঠাৎ আমার পরিচয় জানতে পারলেন। তার পর আমায় নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করতে শুরু করলেন। যেন আমি নতুন কোনও চরিত্র। সকলেই সেই নতুন চরিত্র নিয়ে মেতে রয়েছেন।’’
সমাজমাধ্যমে নিজস্ব অনুরাগী মহল তৈরি করে ফেলেছেন শ্রীমা। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় রাই পরিবারের পুত্রবধূর অনুরাগীর সংখ্যা ১ লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।