একাধিক নায়িকার সঙ্গে প্রেম-পরকীয়া, তিনটি বিয়ে, সঙ্গিনীর সংখ্যা তিন শতাধিক! ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বরাবর চর্চায় থেকেছেন বলিউডের ‘সঞ্জু বাবা’ সঞ্জয় দত্ত। এমনকি, প্রেমে পড়ার সময় বয়সের অঙ্কেরও হিসাব রাখতেন না তিনি। বয়সে ১৫ বছরের বড় এক নায়িকার প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। সেই নায়িকা আবার ছিলেন এক বলি অভিনেতার স্ত্রী। সঞ্জয় তাঁর মায়ের সামনেই সেই নায়িকাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
দত্ত পরিবারের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল বলি অভিনেতা দিলীপ কুমারের। তাঁর স্ত্রী সায়রা বানোও সঞ্জয়কে খুব স্নেহ করতেন। সঞ্জয়ের মা নার্গিসকে দিদির মতো দেখতেন তিনি। সায়রা ছাড়াও তাঁর বাবা-মা সকলেই সঞ্জয়কে খুব ভালবাসতেন।
গত বছর সঞ্জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে সমাজমাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন সায়রা। সেই পোস্টে তাঁর প্রতি সঞ্জয়ের অগাধ ভালবাসা থাকার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। সঞ্জয় নাকি নার্গিসের সামনে সায়রাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
সঞ্জয়ের চেয়ে সায়রা ১৫ বছরের বড়। পারিবারিক সম্পর্ক থাকায় দিলীপ-সায়রার বাড়ির সকল অনুষ্ঠানেই যেতেন নার্গিস। নার্গিসকে সব অনুষ্ঠানেই সঙ্গ দিতে দেখা যেত সঞ্জয়কে।
সায়রা জানিয়েছিলেন, সঞ্জয়কে শিশুবয়স থেকে দেখেছেন তিনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সঞ্জয়ের ‘সঞ্জু বাবা’ হয়ে ওঠার যাত্রার সাক্ষী থেকেছেন সায়রা। পুত্রের মতোই সঞ্জয়কে দেখতেন অভিনেত্রী। কিন্তু একদিন সঞ্জয় তাঁর মনের কথা জানান সায়রাকে। তা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন নায়িকা।
সায়রার কথায়, ‘‘ছোটবেলায় সঞ্জয় খুব মিষ্টি দেখতে ছিল। একবার ও নার্গিসদিদির সঙ্গে আমাদের বাড়ির এক অনুষ্ঠানে এসেছিল। নার্গিসদিদি ওর হাত ধরে বার বার আমার বিষয়ে কিছু বলতে বলছিল।’’
সায়রার সামনে নার্গিস তাঁর পুত্র সঞ্জয়ের হাত ধরেছিলেন। সঞ্জয়ের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সায়রাকে নিয়ে তুমি যা বলো, তা সামনাসামনি বলে ফেলো দেখি।’’ মায়ের অনুরোধ শোনার পর এক মুহূর্তও চুপ করে থাকেননি সঞ্জয়।
সায়রার চোখের দিকে তাকিয়ে সঞ্জয় নাকি আধো আধো ভাবে বলেছিলেন, ‘‘আমি সায়রা বানোকে বিয়ে করতে চাই।’’ সঞ্জয় এতই ছোট ছিলেন যে, স্পষ্ট ভাবে সায়রার নামটুকুও উচ্চারণ করতে পারেননি।
সঞ্জয়ের মুখে বিয়ের কথা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছিলেন সায়রা। সঙ্গে সঙ্গে সঞ্জয়ের গাল ধরে আদর করে দিয়েছিলেন তিনি। শিশুমনের সরলতা থেকেই সায়রাকে বিয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন সঞ্জয়।
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, সঞ্জয়ের প্রেমিকার তালিকা দীর্ঘ। মহিলাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কেও নাকি ঘন ঘন জড়াতেন তিনি। তা ছাড়া বলিউডের একাধিক নায়িকার সঙ্গে নামও জড়িয়েছিল তাঁর। তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছিল পরকীয়ার অভিযোগও।
সঞ্জয়ের কেরিয়ারের প্রথম ছবি ‘রকি’। বলিপাড়ার গুঞ্জন, ‘রকি’ ছবির সহ-অভিনেত্রী টিনা মুনিমের সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়ে প়ড়েছিলেন নায়ক। কিন্তু সঞ্জয়ের অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্য নাকি সেই সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি।
‘খলনায়ক’ এবং ‘সাজন’-এর মতো ছবিতে সঞ্জয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করে দর্শকের মন জয় করেছিলেন বলি অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত। কিন্তু পর্দার আড়ালেও তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে কানাঘুষো চলত। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, সঞ্জয় এবং মাধুরী দীর্ঘ দিন সম্পর্কে ছিলেন।
বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায় যে, মাধুরী এবং সঞ্জয়ের মধ্যে সম্পর্ক বেশ গভীর ছিল। এক সময় নাকি বিয়ের কথাও ভেবেছিলেন তাঁরা। সঞ্জয়ের প্রথম স্ত্রী রিচা শর্মা যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন নাকি মাধুরীর সঙ্গে ক্রমশ ঘনিষ্ঠতা বেড়ে চলেছিল সঞ্জয়ের। তবে এই বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক টেকেনি। ১৯৯৩ সালে সঞ্জয়ের গ্রেফতারির পর মাধুরীর সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল।
১৯৯৬ সালে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন রিচা। প্রথম বিয়ে থেকে কন্যাসন্তান রয়েছে সঞ্জয়ের। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর দু’বছর পর ১৯৯৮ সালে রিয়া পিল্লাইকে বিয়ে করেছিলেন সঞ্জয়। বলিউডের জনশ্রুতি, সেই সময় নাকি বলি অভিনেত্রী সুস্মিতা সেনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন সঞ্জয়। নায়িকার সঙ্গে পরকীয়ার কথা জানতে পেরে গিয়েছিলেন রিয়া। সে কারণে সঞ্জয়ের সংসারে চিড়ও ধরে।
রিয়ার সঙ্গে দাম্পত্যজীবন সুখকর ছিল না সঞ্জয়ের। দু’জনের মধ্যে দূরত্ব এবং মনোমালিন্য ক্রমাগত বেড়েই চলেছিল। কানাঘুষো শোনা যায় যে, নাদিয়া দুররানি নামে এক তরুণীর সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন সঞ্জয়। তা জানাজানি হওয়ার পর রিয়ার সঙ্গে সংসারে পুরোপুরি ফাটল ধরে যায়।
২০০৮ সালে রিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায় সঞ্জয়ের। একই বছর মান্যতা দত্তকে বিয়ে করেন বলি অভিনেতা। বিয়ের দু’বছর পর ২০১০ সালে যমজ সন্তানের জন্ম দেন মান্যতা।