শাহিদ আফ্রিদির মেয়ে আনশার সঙ্গে তাঁর বাগ্দান হয়েছিল গত বছর। সেই বাগ্দানের বছরখানেকের মধ্যেই এ বার নিকাহ্ সেরে ফেললেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
শুক্রবার করাচিতে জাঁকজমকে ঠাসা অনুষ্ঠানে আনশা-শাহিনের চারহাত এক হল। তাতে যেন চাঁদের হাট বসেছিল। অতিথি হয়ে কারা জমায়েত হয়েছিলেন সে অনুষ্ঠানে?
বিয়ের আগে থেকেই নাকি আনশার প্রতি ভাললাগা ছিল শাহিনের। তবে শাহিন নাকি নিজে সে কথা পাড়তে পারেননি শ্বশুর শাহিদ আফ্রিদির কাছে।
সংবাদমাধ্যমের দাবি, পাকিস্তানের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক তথা অলরাউন্ডার শাহিদের মেয়ের সঙ্গে ছেলের বিয়ের কথাটা পেড়েছিলেন শাহিনের পরিবারের সদস্যরা। তার পর ২০২২ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি তাঁদের বাগ্দান হয়েছিল।
আনশার সঙ্গে পাকা কথা সারার পর ক্রিকেটে ব্যস্ত হয়ে পড়েন শাহিন। তবে নভেম্বরে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের পর থেকে ২২ গজে আর দেখা যায়নি এই পাক জোরে বোলারকে।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নভেম্বরের সেই ফাইনালে অবশ্য নিজের সেরাটা দিতে পারেননি চোট, আঘাতে জর্জরিত শাহিন। পায়ের চোটে কাবু থাকায় মোটে ২.১ ওভার বল করেছিলেন। সে ম্যাচে বাবর আজমদের হেসেখেলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন জস বাটলাররা।
বিশ্বকাপের পর অ্যাপেন্ডিক্সের অস্ত্রোপচারের জেরেও কিছুটা কাবু হয়ে গিয়েছিলেন ২২ বছরের শাহিন। চোট, আঘাত সারিয়ে রিহ্যাব শুরু করেছেন সম্প্রতি।
এই ক’মাসে ২২ গজে অনুপস্থিতির পর আবার শিরোনামে ভেসে উঠেছেন এই বাঁহাতি পেসার। রবিবার থেকেই সমাজমাধ্যম ছেয়ে গিয়েছে শাহিন-আনশার বিয়ের ছবিতে।
মেডিক্যাল পড়ুয়া আনশার সঙ্গে তাঁর বিয়ের কথাটা কিন্তু ঘটা করে সকলকে জানাননি শাহিন। তবে কোনও ভাবে তা সমাজমাধ্যমে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। তাতে শাহিন চটে লাল।
শাহিন-আনশার বিয়ের ছবি যাঁরা শেয়ার করেছেন, তাঁদের প্রতি শনিবার টুইট করে শাহিনের আর্জি, ‘‘বহু বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও আমাদের গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে, এটা খুবই হতাশাজনক। কোনও রকমের অনুমতি ছাড়াই লোকজন (ছবি) শেয়ার করেই চলেছেন। সকলকে বিনীত ভাবে অনুরোধ করব, দয়া করে সহযোগিতা করুন আর আমাদের স্মরণীয় দিনটি মাটি করবেন না।’’
অনুরোধ সত্ত্বেও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে রয়েছেন শাহিন-আনশা। বিয়ের অনুষ্ঠানের নানা মূহূর্তে ধরা পড়েছেন শাহিন-আনশা এবং অবশ্যই প্রাক্তন শাহিদ আফ্রিদি।
বিয়ের অনুষ্ঠান মিটে যাওয়ার পর অবশ্য সমাজমাধ্যমে মেয়েকে নিয়ে মিষ্টি বার্তা দিয়েছেন শাহিদ আফ্রিদি। টুইটারে বলেছেন, ‘‘আপনার বাগানের সবচেয়ে সুন্দর ফুল হল আপনার মেয়ে। কারণ তাঁরা দোয়ায় ফুটে ওঠা ফুল। যাঁর সঙ্গে আপনি হাসতে পারেন, স্বপ্ন বুনতে পারেন আর হৃদয়ের সমস্ত ভালবাসা দিতে পারেন, সেই মেয়ে।’’
জামাইকে ট্যাগ করে আফ্রিদি আরও লিখেছেন, ‘‘শাহিনের হাতে মেয়েকে দিলাম। দু’জনকে অভিনন্দন।’’
মেয়ের বিয়েতে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন শাহিদ আফ্রিদি। তবে কোনও কারণবশত অনুপস্থিতি সত্ত্বেও শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন শরিফ। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর উত্তরও দিয়েছেন আফ্রিদি।
পাক দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের বিয়ে আর অধিনায়ক বাবর আজম থাকবেন না, তা কি হয়? প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিলেন বাবর-সহ গোটা পাক দল।
শাহিন-আনশার বিয়েতে নিপাট সাজে ধরা পড়েছেন ফখর জামান থেকে শুরু করে সরফরাজ আহমেদ, শাদাব খানেরা।
মেয়ের বিয়েতে সেজে উঠেছিলেন আফ্রিদিও। কুর্তা, চোস্ত চুড়িদারের সঙ্গে মানানসই জ্যাকেটে তদারকিতে ব্যস্ত ছিলেন আফ্রিদি। ফাঁক বুঝে মেয়ে-জামাইয়ের পাশে ছবিও তুলেছেন।
বিয়ের পোশাকও যেন রং মিলিয়ে পরেছিলেন শাহিন-আনশা। আফ্রিদির মেয়ের পরনে গাঢ় গোলাপির আভা ছড়ানো আর শাহিনের বেজ় রঙের কুর্তা-চোস্ত। সঙ্গে গলাবন্ধ জ্যাকেট।
শাহিন-আনশার জন্য ফুলে ফুলে মণ্ডপ সেজেছিল। সে মণ্ডপে ঢুকে অপেক্ষারত আনশার কাছে এগিয়ে গিয়েছেন শাহিন। দু’তরফেই ‘কবুল হ্যায়’ বলার পালা শেষে আনশার কপালে গভীর চুম্বন এঁকে তাঁকে দু’হাতে আবদ্ধ করেছেন শাহিন।