বচ্চন পরিবারের আদরের কন্যা। পরিবারের প্রায় সকল সদস্যের উপর জনপ্রিয়তার আলো এসে পড়লেও তিনি সর্বদাই চেষ্টা করেছেন প্রচারের আড়ালে থাকতে। অভিনয় থেকে নিজেকে শতহস্ত দূরে রেখেছেন। স্বামী এবং দুই সন্তানের সংসার নিয়েই ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় অমিতাভ বচ্চনের কন্যা শ্বেতা বচ্চন নন্দকে।
ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুব একটা মুখ খোলেন না শ্বেতা। চুপচাপ থাকা ঘরোয়া শান্ত মেয়েটির নাকি প্রেমের প্রস্তাব পাওয়ার পর আর তর সয়নি। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বিয়ে করতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন শ্বেতা। পাত্র ছিলেন বলি অভিনেতা রাজ কপূরের নাতি।
বরাবর বাবা-মায়ের বাধ্য সন্তান ছিলেন শ্বেতা। বলিউডের নামী পরিবারের মেয়ে তিনি। তবে পরিবারের অনুশাসন মেনে আর অভিনয়ের দিকে পা বাড়াননি অমিতাভ এবং জয়ার কন্যা।
দিল্লি এবং দেহরাদূনের স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য বস্টন ইউনিভার্সিটি চলে গিয়েছিলেন শ্বেতা। পড়াশোনা শেষ করে আবার মুম্বই ফিরে যান তিনি। বলি অভিনেত্রী সিমি গারেওয়ালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করেছিলেন শ্বেতা।
শ্বেতার দাবি, বাবা-মায়ের পরামর্শেই বিয়ের চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন তিনি। ১৯৯৭ সালে শিল্পপতি নিখিল নন্দকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তবে পাত্র নাকি আগে থেকেই পছন্দ ছিল বচ্চন পরিবারের।
রাজের জ্যেষ্ঠ কন্যা রিতু নন্দের পুত্র নিখিল। তবে অভিনয়ের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। এই বিষয়ে শ্বেতার সঙ্গে নিখিলের জীবনের সামঞ্জস্য লক্ষ করা যায়। বচ্চন পরিবারের কন্যা হয়েও কখনও অভিনয় করেননি শ্বেতা।
নিখিলের পরিবারের সঙ্গে বচ্চন পরিবারের সখ্য বহু দিনের। দুই পরিবারের বন্ধুদের মধ্যেও চেনা-পরিচিতি ছিল। সেই সূত্রে নিখিলের পরিবারের সঙ্গে মেলামেশা আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছিল বচ্চন পরিবারের।
শ্বেতা সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, নিখিলের পরিবারের পাশাপাশি বচ্চন পরিবারের সদস্যেরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের বিয়ে নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। দুই পরিবারের তরফেই নিখিল এবং শ্বেতাকে আলাদা ভাবে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
কলেজের পড়াশোনার পর মুম্বইয়ে ছুটি কাটাচ্ছিলেন শ্বেতা। সেই সময় মুম্বইয়ে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন নিখিল। দুই পরিবারের মত নিয়ে নিখিলের সঙ্গে বাইরে দেখা করেছিলেন শ্বেতা।
শ্বেতা আগে থেকেই জানতেন যে, তাঁর সঙ্গে নিখিলের বিয়ে হবে। তাই সিদ্ধান্ত নিতে বেশি দেরি করেননি তিনি। শ্বেতা সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘বিয়ের আগে নিখিলের সঙ্গে আলাদা ভাবে কোনও ডেটে যাইনি। মাত্র ১০ দিনের আলাপ ছিল আমাদের।’’
অমিতাভের কন্যা জানিয়েছিলেন যে, বচ্চন এবং নন্দ পরিবারের সদস্যেরা একসঙ্গে নতুন বছর উদ্যাপন করছিলেন। সেই সময় শ্বেতাকে মনের কথা বলেছিলেন নিখিল।
নিখিল যে শ্বেতাকে বিয়ে করতে চান তা পারিবারিক অনুষ্ঠান চলাকালীন জানিয়েছিলেন। প্রেমের প্রস্তাব শুনে আর তর সইছিল না শ্বেতার। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই নিখিলের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নিখিলকে বিয়ে করেন শ্বেতা। একই বছর ডিসেম্বর মাসে কন্যা নব্যা নভেলি নন্দের জন্ম দেন তিনি। নব্যার জন্মের পর তিন বছর কেটে যায়। ২০০০ সালের নভেম্বর মাসে পুত্র অগস্ত্যের জন্ম হয়।
স্বামী এবং দুই সন্তান নিয়ে ব্যস্ততার সংসার শ্বেতার। বিয়ের পর অবশ্য প্রথম বার মডেলিং করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এক নামী পত্রিকার জন্য মডেলিং করেছিলেন তিনি।
২০০৯ সালের জুন মাসে ভাই অভিষেক বচ্চনের সঙ্গেও এক পত্রিকার জন্য মডেলিং করেছিলেন শ্বেতা। তার পাশাপাশি নিজের লেখালিখির কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
২০১৮ সালে নিজের পোশাকের ব্র্যান্ড শুরু করেন শ্বেতা। ব্যবসা সামলানোর পাশাপাশি একটি বইও লিখে ফেলেন তিনি। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে তাঁর লেখা ‘প্যারাডাইস টাওয়ার্স’ বইটি প্রকাশ পায়।