ঘুমের মধ্যে কি কখনও ভয় পেয়ে জেগে উঠেছেন? কিংবা এমন কোনও ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখেছেন যা আপনার ঘাম ছুটিয়ে দিয়েছে? বা ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর নিজেও কিছু ক্ষণের জন্য বুঝতে পারেননি যে, আপনি বাস্তবে আছেন কি না!
স্বপ্ন দেখতে কার না ভাল লাগে? কিন্তু সেই স্বপ্ন যখন দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়ায়, তখন তাঁর চেয়ে ভয়ঙ্কর বোধহয় আর কিছু হতে পারে না। বেশ কিছু ক্ষণ সময় লেগে যায় চেতনায় ফিরে আসতে। এই দুঃস্বপ্ন আবার বেশ অনেক রকমের হয়।
বিশেষজ্ঞেরা বলেন, সারা দিনের ক্লান্তি, চিন্তা আমাদের উপর এমন একটা প্রভাব ফেলে, যা ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্নে প্রতিফলিত হয়ে ওঠে। এই দুঃস্বপ্নের মোকাবিলা করা মুখের কথা নয়। ভাল স্বপ্নগুলি আমাদের তেমন মনে না থাকলেও দুঃস্বপ্নগুলি যেন মনে গেঁথে যায়।
দুঃস্বপ্ন প্রায়শই আমাদের মনে ভয় বা উদ্বেগের জন্ম দেয়। চমকে উঠে ঘুমের দফারফা হয়। অনেকের দুঃস্বপ্নের রেশ আবার অনেক ক্ষণ থাকে। কিন্তু কোন দুঃস্বপ্নের কী মানে সে কথা অনেকেই জানেন না। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী কিন্তু প্রতিটি দুঃস্বপ্ন আলাদা আলাদা অর্থ বহন করে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক ১০টি সাধারণ দুঃস্বপ্নের কথা এবং জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, তাদের কী অর্থ।
হাঁটতে হাঁটতে বা দৌড়তে গিয়ে পড়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন না এমন মানুষ কমই আছেন। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, এর অর্থ কোনও জিনিসের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানো বা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা। মকর রাশির জাতকেরাই নাকি এই স্বপ্ন বেশি দেখেন। মকর রাশির জাতকদের জীবনে ব্যর্থ হওয়ার ভয় প্রতিফলিত হয় ওই দুঃস্বপ্নের মতো।
স্বপ্নে কেউ তাড়া করছে প্রতিনিয়ত? আপনিও দৌড়ে চলেছেন ভয়ে? জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী এই স্বপ্ন উদ্বেগ বা অভিভূত হওয়ার অনুভূতিকে নির্দেশ করে। মিথুন রাশির জাতকেরা বেশি দেখেন এই ধরনের স্বপ্ন। একাধিক কাজ এবং দায়িত্ব নিয়ে সেগুলি পূরণ করতে না পারলে নাকি এই ধরনের স্বপ্ন ঘুমের মধ্যে ঘুরপাক খায়।
অনেকে দাঁত পড়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। চেহারা খারাপ হতে পারে বা আত্মসম্মান বিসর্জন দিতে হতে পারে, এমন দুশ্চিন্তা যদি কারও মাথার মধ্যে সব সময় ঘোরে, তা হলে নাকি এই স্বপ্ন দেখেন তিনি। এই দুঃস্বপ্ন সিংহ রাশির জন্য বিশেষ ভাবে প্রাসঙ্গিক হতে পারে বলে মনে করছে জ্যোতিষশাস্ত্র।
জনসমক্ষে নগ্ন হওয়ার দুঃস্বপ্ন দেখেছেন? চাইলেও জামাকাপড় পরতে পারছেন না স্বপ্নের মধ্যে? জ্যোতিষশাস্ত্র বলছে, দুর্বল চিত্তের মানুষ বা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেঁসে রয়েছেন, এমন মানুষেরাই নাকি এই স্বপ্ন বেশি দেখেন। তবে কন্যা রাশির জাতক-জাতিকাদের মধ্যে এই দুঃস্বপ্ন দেখার প্রবণতা বেশি।
পরীক্ষার হলে বসে রয়েছেন অথচ কোনও উত্তর লিখতে পারছেন না? এমন দুঃস্বপ্ন দেখার অর্থ কর্মক্ষমতা বা কাজের চাপ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন আপনি। তবে কাজ নিয়ে চাপে থাকেন, এমন ধনু রাশির জাতকদের নাকি এই দুঃস্বপ্ন দেখার প্রবণতা বেশি।
বদ্ধ জায়গায় আটকে পড়েছেন বা বন্দি হয়েছেন, এমন দুঃস্বপ্ন দেখার অর্থ সেই মানুষটির জীবনে স্বাধীনতার অভাব রয়েছে। অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়ে জীবনযাপন করতে হয় তাঁকে। কুম্ভ রাশির জাতক-জাতিকারা নাকি এই স্বপ্ন বেশি দেখেন।
প্রিয়জন বিয়োগের স্বপ্ন অনেক যন্ত্রণাদায়ক। প্রিয় কোনও মানুষকে হারানোর ভয় যাঁদের মধ্যে রয়েছে তাঁরাই নাকি এই স্বপ্ন বেশি দেখেন। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী, কর্কট রাশির জাতকদের এই স্বপ্ন দেখার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
গাড়ি চালাতে চালাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার স্বপ্নও দেখেন অনেকে। সিদ্ধান্তগ্রহণ নিয়ে মনে ভয় বা দুশ্চিন্তা থাকলেই নাকি মানুষ এই স্বপ্ন দেখেন। তবে সিদ্ধান্ত নিয়ে মনের মধ্যে দ্বিধা থাকা মেষ রাশির জাতকেরাই বেশি দেখেন এই স্বপ্ন।
সব জায়গায় দেরি করে পৌঁছোনোর স্বপ্ন দেখার অর্থ মনের মধ্যে নিজের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ থাকা বা সুযোগ হারানোর ভয় থাকা। অন্তত তেমনটাই মনে করছে জ্যোতিষশাস্ত্র। তুলা রাশির জাতকদের জীবনে ভারসাম্য এবং সম্প্রীতির মূল্য বেশি। তাই এই দুঃস্বপ্নও বেশি দেখেন সেই রাশির জাতকেরা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ভূমিকম্প বা বন্যার কবলে পড়ার স্বপ্ন যাঁরা দেখেন, তাঁরা বেশি আবেগপ্রবণ হন। ভিতু এবং সংবেদনশীলও হন খানিকটা। তবে জ্যোতিষশাস্ত্র বলছে সংবেদনশীল মীন রাশির জাতক-জাতিকা বেশি দেখেন এই ধরনের স্বপ্ন।
খারাপ স্বপ্ন দেখলেই যে সেটা সত্যি হয় এমন কোনও কথা শাস্ত্রে হলফ করে বলা নেই। তবে, ব্রাহ্মমুহূর্ত, অর্থাৎ ভোরের স্বপ্ন সত্যি হওয়ার একটা প্রচলিত ধারণা আমাদের মধ্যে রয়েছে। সে ব্যাপারে শাস্ত্রেও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু সব ভোরের স্বপ্নই যে সত্যি হবে এমন কোনও মানে নেই।