Mali TikTok star Mariam Cisse

সেনাবাহিনীকে তথ্যপাচারের ‘শাস্তি’, লাইভ চলাকালীন টিকটক তারকাকে তুলে নিয়ে প্রকাশ্যে হত্যা! ফুঁসছে আফ্রিকার দেশ

গত ৬ নভেম্বর টোঙ্কার একটি স্থানীয় মেলা থেকে লাইভ স্ট্রিমিং করছিলেন মারিয়াম নামের ওই তরুণী। সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার অভিযোগে টিকটকারকে সন্দেহভাজন জিহাদিরা ধরে নিয়ে গিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৪০
Share:
০১ ১৫

টিকটক পোস্টের মাধ্যমে দেশের সেনাবাহিনীকে সমর্থন করেছিলেন তরুণী। সেই ‘অপরাধে’ তাঁকে প্রকাশ্যে হত্যা করল চরমপন্থী জিহাদিরা। অনলাইনে স্বাধীন ভাবে নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে জীবন বলি দিতে হল ওই তরুণীকে। তিনি পশ্চিম আফ্রিকার অষ্টম বৃহত্তম দেশ মালির বাসিন্দা।

০২ ১৫

সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার ‘অভিযোগে’ টিকটকারকে সন্দেহভাজন জিহাদিরা ধরে নিয়ে গিয়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে বলে সংবাদসংস্থা বিবিসি জানিয়েছে। হতভাগ্য সেই তরুণীর নাম মারিয়াম সিস। নভেম্বরের গোড়ার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী ছিল মালির উত্তর টিম্বাকটু অঞ্চলের শহর টোঙ্কার বাসিন্দারা।

Advertisement
০৩ ১৫

শহরে গিয়ে লাইভ স্ট্রিমিং করার সময় সন্দেহভাজন জিহাদিদের হাতে ধরা পড়ে যান মারিয়াম। তাঁকে বাইকে করে তুলে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। গত ৬ নভেম্বর টোঙ্কার একটি স্থানীয় মেলা থেকে লাইভ স্ট্রিমিং করছিলেন মারিয়াম। ঠিক তখনই হঠাৎ করে সশস্ত্র চার ব্যক্তি এসে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

০৪ ১৫

সপ্তাহান্তের সকালে তাঁকে লিবার্টি স্কোয়্যারে আনা হয়। তাঁর পরিবার ও শত শত নাগরিকের সামনে তাঁকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। গুলি করে হত্যা করা হয় ২০ বছরের মারিয়ামকে। এই হত্যাকাণ্ডে যুক্ত হয়েছে আল-কায়দা ঘনিষ্ঠ স্থানীয় সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের নাম।

০৫ ১৫

নৃশংস এই হত্যার ঘটনাটি চাক্ষুষ করেছিলেন মৃতার ভাই। তিনি সংবাদসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার জিহাদিরা তাঁর দিদিকে তুলে নিয়ে যায়। তার পর সকলের সামনে হত্যা করে। ভিড়ের মাঝে সেই ভয়াবহ দৃশ্যের সাক্ষী ছিলেন তিনিও। মারিয়ামের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে মালির সেনাবাহিনীকে তথ্য পাচার করছিলেন তিনি।

০৬ ১৫

টিকটকে ১ লক্ষেরও বেশি অনুগামী ছিল মারিয়ামের। তিনি প্রায়শই নিজের শহর টোঙ্কার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ভিডিয়ো শেয়ার করতেন। মাঝেমাঝে সামরিক পোশাক পরে ভিডিয়ো বা লাইভ স্ট্রিমিংয়ে আসতেন। তাঁর একটি ভিডিয়োর ক্যাপশন ছিল, ‘মালি দীর্ঘজীবী হোক’।

০৭ ১৫

জনপ্রিয় এই নেটমাধ্যমপ্রভাবী সরাসরি সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখেননি। তিনি তাঁর টিকটক পোস্টের মাধ্যমে কেবল তার সম্প্রদায়ের প্রচার এবং সেনাবাহিনীকে সমর্থন করতে চেয়েছিলেন। মালির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে এমনই জানিয়েছে বিবিসি।

০৮ ১৫

অন্য দিকে জিহাদিদের অভিযোগ, মারিয়াম সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করেছেন। বিদ্রোহীদের গতিবিধি ও তথ্য শেয়ার করেছেন দেশের সেনার কাছে। অথচ, মারিয়াম পোস্টের মাধ্যমে কেবল তাঁর সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। দেশের জন্য গর্ব প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন।

০৯ ১৫

প্রাণবন্ত ভিডিয়োগুলির জন্য মারিয়াম তাঁর অনুরাগীদের কাছে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। হাস্যরস, দৈনন্দিন জীবন, সামাজিক সমস্যার ভিডিয়োগুলি প্রশংসা পেয়েছিল। মালির সেনাবাহিনীর প্রতি খোলাখুলি সমর্থন ছিল অল্পবয়স্ক এই নেটপ্রভাবীর। আর তাতে দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ক্রমেই বাড়ছিল।

১০ ১৫

তাঁর মৃত্যুর পর থেকে টিকটকে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে। এই হত্যাকাণ্ড দেশ জুড়ে গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এই ভাবে প্রকাশ্যে হত্যা বাক্‌রুদ্ধ করে দিয়েছে সে দেশের জনসাধারণকে। সাধারণ মানুষ ভয়ে তাঁদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতেও আশঙ্কা অনুভব করছেন।

১১ ১৫

পশ্চিম আফ্রিকার স্থলবেষ্টিত দেশ মালিতে দীর্ঘ দিন ধরেই সক্রিয় আল কায়দা এবং আর এক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেটস (আইএস)। গত কয়েক বছর ধরে আফ্রিকার এই দেশটিতে সামরিক শাসন চলছে। সে দেশের সামরিক শাসক জেনারেল আসিমি গোয়েটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির বিস্তার বন্ধ করার আশ্বাস দিয়েই ২০২০ সালে মসনদে বসেছিলেন।

১২ ১৫

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে জঙ্গি ও জেহাদি সমস্যা নিয়ে জেরবার আফ্রিকার এই দেশটি। মালিতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরির নেপথ্যে যে সংগঠন রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, সেটির নাম ‘জামাত নুসরত আল-ইসলাম ওয়াল-মুসলিমিন’ (জেএনআইএম)। মূলত মালির উত্তরাংশে সক্রিয় রয়েছে এই সংগঠনটি। আল কায়দা মদতপুষ্ট সংগঠনটি সে দেশে জ্বালানি অবরোধের ডাক দিয়েছে।

১৩ ১৫

এই সংগঠনটির ক্রমাগত বিদ্রোহ ও হিংসাত্মক কার্যকলাপে মালিতে জ্বালানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে রাজধানী বামাকোতে। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পড়েছে একের পর এক তেলের ট্যাঙ্কার। গত কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে সে দেশে।

১৪ ১৫

জিহাদি অবরোধের ফলে দেশটির পরিস্থিতি আরও অবনতির পথে। স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কয়েক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে টের পেয়েই দেশের নাগরিকদের মালি ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে ফ্রান্স।

১৫ ১৫

এই ডামাডোলের মাঝেই মারিয়ামের মৃত্যু বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই ন্যায়বিচার এবং নাগরিকদের সুরক্ষার দাবি জানিয়েছেন। তরুণ টিকটকারের মৃত্যু ও জন নিরাপত্তার বিষয়টি আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement