Vashishtha Narayan Singh

মেধায় চমকে যায় বিশ্ব, দেশে ফিরে রহস্যজনক ভাবে উধাও! চার বছর পর খোঁজ মেলে গণিতজ্ঞের

বশিষ্ঠের মেধা স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে পাড়ি দিয়েছিল বিদেশেও। অঙ্কে তাঁর দক্ষতা সকলকে বিস্মিত করেছিল। কিন্তু মানসিক রোগের ছোবলে গণিতের দুনিয়া থেকে আচমকা হারিয়ে যান এই প্রতিভাধর।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৬:৪৮
Share:
০১ ১৭

বিহারের অখ্যাত গ্রাম থেকে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন বশিষ্ঠনারায়ণ সিংহ। অঙ্কে তাঁর তুখোড় মেধা। ছোটবেলা থেকেই মেধায় চমকে দিয়েছিলেন সকলকে। সাধারণ পরিবারে থেকেও হয়ে উঠেছিলেন অসাধারণ।

০২ ১৭

বশিষ্ঠের মেধা স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে পাড়ি দিয়েছিল বিদেশে। অঙ্কে তাঁর দক্ষতা সকলকে বিস্মিত করেছিল। কিন্তু মানসিক রোগের ছোবলে গণিতের দুনিয়া থেকে আচমকা হারিয়ে গিয়েছিলেন এই প্রতিভাধর।

Advertisement
০৩ ১৭

১৯৪৬ সালের ২ এপ্রিল বিহারের ভোজপুর জেলায় জন্ম বশিষ্ঠের। তাঁর বাবা লাল বাহাদুর ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল। মায়ের নাম লাহাসো দেবী। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে বশিষ্ঠই ছিলেন সবচেয়ে বড়।

০৪ ১৭

নেতারহাট স্কুল থেকে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে পটনা বিজ্ঞান কলেজে স্নাতক স্তরে ভর্তি হন বশিষ্ঠ। শোনা যায়, স্কুলে তিনি বরাবর প্রথম হতেন। তবে তাঁর মেধার চমক প্রথম প্রকাশ্যে এসেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে।

০৫ ১৭

বশিষ্ঠের মেধা দেখে পটনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে স্নাতকের পাঠ চলাকালীন স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিয়েছিলেন। ফলে মোট ৫ বছরের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর কোর্স বশিষ্ঠ সম্পন্ন করেন মাত্র দু’বছরেই।

০৬ ১৭

এর পর উচ্চশিক্ষার জন্য আমেরিকায় চলে যান বশিষ্ঠ। ক্যালোফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেন বেশ কিছু দিন।

০৭ ১৭

নাসার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন বশিষ্ঠ। ১৯৬৯ সালে চাঁদে মানুষ পাঠানোর নাসার অভিযানে শামিল হয়েছিলেন তিনি। বলা হয়, তিনিই ওই অভিযানের জটিল গাণিতিক সমস্যাগুলির সমাধান করেছিলেন।

০৮ ১৭

বলা হয়, স্বয়ং আইনস্টাইনের থিয়োরিকেও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন বশিষ্ঠ। ওই থিয়োরির ত্রুটি তিনি খুঁজে বার করেছিলেন। তবে এই তথ্যের সমর্থনে কোনও প্রমাণ মেলেনি।

০৯ ১৭

১৯৭১ সালে ভারতে ফিরে আসেন বশিষ্ঠ। খড়্গপুর আইআইটিতে অধ্যাপনা শুরু করেন। কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট এবং মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চেও কাজ করেছেন তিনি। কিন্তু কোনও কাজেই দীর্ঘ দিন স্থায়ী হতে পারেননি।

১০ ১৭

১৯৭৩ সালে বশিষ্ঠ বিয়ে করেন। তাঁর স্ত্রী বন্দনারানি সিংহ কয়েক বছর ঘর করার পর বশিষ্ঠকে ছেড়ে চলে যান। ১৯৭৬ সালেবিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের।

১১ ১৭

এই সময় থেকেই ধীরে ধীরে মানসিক রোগ বাসা বাঁধে বশিষ্ঠের শরীরে। স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া রোগ তাঁর মস্তিষ্কে ডালপালা মেলতে থাকে। নিজেকে যেন ক্রমশ হারিয়ে ফেলেন বশিষ্ঠ।

১২ ১৭

অঙ্ক এবং বশিষ্ঠের মাঝে ক্রমে দেওয়াল তুলে দেয় এই স্কিজ়োফ্রেনিয়া। জীবনের পরবর্তী ৪০ বছর বিশেষজ্ঞ মহলে তিনি আর পুরনো জনপ্রিয়তা ফিরে পাননি।

১৩ ১৭

মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য একাধিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বশিষ্ঠ। বছরের পর বছর তাঁর হাসপাতালেই কেটে গিয়েছে। কিছুটা সুস্থ হয়ে ১৯৮৭ সালে বিহারের বসন্তপুরে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন তিনি।

১৪ ১৭

১৯৮৯ সালে পুণে যাওয়ার ট্রেনে উঠেছিলেন, কিন্তু মাঝপথে নেমে যান। তার পর দীর্ঘ ৪ বছর আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। যেন কর্পূরের মতো স্রেফ উবে গিয়েছিলেন এই স্বনামধন্য গণিতজ্ঞ।

১৫ ১৭

৪ বছর পর বিহারেরই অখ্যাত এক গ্রাম থেকে হঠাৎই বশিষ্ঠের খোঁজ মেলে। গালভর্তি দাড়ি, মাথায় পাকা চুল, শতচ্ছিন্ন কাপড়ে বশিষ্ঠকে তখন চেনাই দায়। হতদরিদ্র এই গণিতজ্ঞকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।

১৬ ১৭

বেঙ্গালুরু এবং দিল্লির নামী হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছিল বশিষ্ঠের। সুস্থ হয়ে আবার কাজেও ফিরেছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে বিহারের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার কাজে যোগ দিয়েছিলেন বশিষ্ঠ। তবে মেধার চমক আর ফেরেনি।

১৭ ১৭

২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর দীর্ঘ অসুস্থতার পর পটনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বশিষ্ঠ। ২০২০ সালে ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করে।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement