ভয়ংকর পাহাড়

পাহাড়ে অভিযান করতে গিয়ে কখনও তাঁবু বরফে চাপা পড়েছে, কখনও ভূমিকম্পে ভয়াবহ তুষার ধস নেমেছে। মনে হয়েছে, আর ফিরতে পারব না।পাহাড়ে অভিযান করতে গিয়ে কখনও তাঁবু বরফে চাপা পড়েছে, কখনও ভূমিকম্পে ভয়াবহ তুষার ধস নেমেছে। মনে হয়েছে, আর ফিরতে পারব না।

Advertisement

সত্যরূপ সিদ্ধান্ত

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০০:৫৩
Share:

‘এভারেস্ট’ হলিউড-ছবির দৃশ্য।

সে বার মাউন্ট ডেনালি (মাউন্ট ম্যাকিনলে) অভিযানে গিয়েছি (ওটা উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ)। তাঁবুতে শুয়ে আছি। হঠাৎ মনে হল, দম বন্ধ হয়ে আসছে। বড়, লম্বা করে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছি, কিন্তু কেন জানি না, কিছুতেই যথেষ্ট অক্সিজেন পাচ্ছি না। দেখি, আমাদের দলের আরও দুজনের একই রকম শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। কী ব্যাপার? একসঙ্গে সবার একই রকম শরীর খারাপ হল, সে তো খুব উদ্ভট।

Advertisement

ভাবলাম, তাঁবুর বাইরে যাই। টেন্টের জিপটা (zip) খুলতেই বিস্ময়ে হতবাক! বাইরের প্যাসেজটার জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে বিরাট, বিশাল একটা বরফের স্তূপ। বুঝলাম, আটকা পড়েছি। বেরনোর রাস্তাটা চাঁই চাঁই বরফে বন্ধ। তাঁবুর দেওয়ালে হাত দিলাম— শক্ত, নিরেট। মনে হচ্ছিল যেন কেউ চার দিক দিয়ে তাঁবুটাকে প্রবল জোরে চাপ দিচ্ছে। তক্ষুনি বুঝতে পারলাম, শুধু বেরনোর পথটাই নয়, পুরো তাঁবুটাই পুরু বরফের তলায়! এই ভেঙে পড়ল বলে! তক্ষুনি কিছু বরফ সরিয়ে কয়েকটা গর্ত করলাম। তাঁবুর চার পাশে বরফ বলে, আমাদের অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই ওই শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল।

তুষারপাত না, আসলে তখন হচ্ছিল তুষারধস। মুহূর্তের মধ্যে পাঁচ ফুট বরফে ডুবে যাচ্ছিল তাঁবুর সব কিছু। নিজেদের খোঁড়া গর্ত দিয়ে একে একে বেরিয়ে এলাম। বেলচা খুঁজছিলাম, সেটাও ওই বরফেরই তলায়। খুঁজে পেলাম এক সময়, তার পর বরফ খুঁড়ে খুঁড়ে উদ্ধার করলাম আমাদের গোটা তাঁবুটাকে। অন্য অভিযাত্রী দলগুলোও যাতে প্রাণে বাঁচে, তাই বিপদসংকেত দিলাম ওদেরও। বরফের চাঙড়ে যদি আমাদের তাঁবু ভেঙে যেত, তা হলে স্লিপিং ব্যাগের মধ্যে থেকে বেরিয়ে, বিশাল বরফের স্তূপ খুঁড়ে, দুরমুশ হয়ে যাওয়া তাঁবুর বাইরে আসাটাই ভয়ংকর মুশকিল হত। বরফ খোঁড়ার কাজটা আমরা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছিলাম। এক জন এক ঘণ্টা করে খুঁড়ছে, অন্য ক’জন হয়তো তখন একটু ঘুমিয়ে নিচ্ছে। খুব জোর বেঁচে গেছিলাম সে বার।

Advertisement

ডেনালি সামিট হয়ে যাওয়ার পর, সামিট ক্যাম্প থেকে নামব, ফোরকাস্ট পেলাম: আগামী তিন দিন প্রচণ্ড বাজে আবহাওয়া থাকবে। ইতিমধ্যে আমাদের একটা টেন্টের টেন্ট-পোল’গুলো ভেঙে গেছে ঝোড়ো হাওয়ায়। আছে শুধু বড় একটা তাঁবু, যাতে তিন জন ধরে। তার মধ্যেই পাঁচ জন আমরা গুটিসুটি মেরে, কোনও মতে নিজেদের আঁটিয়ে নিয়েছি। ঠিক করা হল, সে দিনই নীচের ক্যাম্পে নেমে যাব। কারণ এই টেন্টটা ভেঙে গেলে মাইনাস ৩৫-৪০ ডিগ্রিতে বেঁচে থাকা অসম্ভব। সবাই মারা পড়ব। তার ওপর, আমাদের খাবারও শেষের দিকে, তিন দিনের বেশি দুর্যোগ চললে আর দেখতে হবে না। নীচের ক্যাম্পে খাবার স্টক করে রাখা আছে। একটা দুর্গম রিজ (Ridge) আছে (এই শব্দটাই ব্যবহার করি, নইলে রিজ-এর বাংলা ‘শৈলশিরা’, সে আরও ভয়ংকর), যে ভাবেই হোক, আবহাওয়া খারাপ হয়ে যাওয়ার আগে সেটা পেরোতে হবে। রিজ-টা একেবারে খাড়াই, দু’দিকে গভীর খাদ। আমরা সবাই রোপ-আপ করে নিয়েছি, মানে, একে অপরের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা। অর্ধেক পেরিয়ে গেছি, শুরু হল দুরন্ত হাওয়া। সে কী দাপট! ফেলে দেয় প্রায়। ৮০-৯০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া চলছে, আর আমরা এক-পা এক-পা করে এগিয়ে চলেছি। একসঙ্গে দুজন পড়ে গেলে, তাদের শরীরের ভারে গোটা গ্রুপ ছিটকে পড়তে পারে খাদে। কারণ ‘fall’টাকে প্রতিহত করার মতো যথেষ্ট জায়গা নেই। মোটে দেড় ফুট চওড়া রিজ। এরই মধ্যে এক জনের পা হড়কাল। দমবন্ধ, টান-টান অবস্থায় আমরা কোনও মতে পড়ে যাওয়া আটকালাম। আর রিজ-এর শেষে পৌঁছনো মাত্র শুরু হল ‘ব্লিজার্ড’, ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে তুষারপাত। এ বার আছে একটা ৭০-৭৫ ডিগ্রি হেলে-থাকা বরফের দেওয়াল। সেটা বেয়ে নামতে হবে। ওপরে যাওয়ার সময় আমরা কিছু জ্বালানি আর খাবার বরফের তলায় গর্ত করে খুঁড়ে রেখে গিয়েছিলাম। সেই ব্যাগটা বের করা হল বরফ থেকে। আমি, আর বাংলাদেশের প্রথম এভারেস্ট-আরোহণকারী মুসা ইব্রাহিম ভলান্টিয়ার করলাম, ব্যাগটাকে নীচে নামানোর কাজে। এখানে আর নিজেদের দড়িতে বাঁধার দরকার নেই, তাই টিমের বাকি তিন জনকে (ক্রিস্টোফার, সুস্মিতা আর রায়ান) তাড়াতাড়ি নেমে যেতে বললাম। আর আমরা দুজন ব্যাগটাকে নামানোর তোড়জোড় শুরু করলাম। নামানোর সময় বুঝলাম, ব্যাগটা বেশ ভারী। সামলানো শক্ত। অনেক কসরত করে নামানো শুরু হল। এর মধ্যে তুষারপাত এত বেশি শুরু হয়েছে, আমরা এ অন্যকে দেখতেই পাচ্ছি না। এমনকী কথা বললে, গলার আওয়াজও শোনা যাচ্ছে না। ব্যাগ নামাতে নামাতে একটা জায়গায় সেটা আবার আটকে গেল। ভারী ওজন, তার ওপর আমরা প্রায় দড়ির ওপর ঝুলছি। কোনও মতে টানাটানি করতে লাগলাম, কিন্তু ব্যাগটা এমন ভাবে ঝুলছে, কিছুতেই ম্যানেজ করা যাচ্ছে না। এ রকম ভাবে ওঠানামা করতে করতে জুতোটা কখন আলগা হয়ে গিয়েছে, খেয়াল করিনি। জুতোর নীচে হাঙরের দাঁতের মতো আর একটা জুতো লাগানো থাকে, তাকে আমরা বলি ‘ক্র্যাম্পন’। সেই ক্র্যাম্পন পরে সলিড বরফে হাঁটতে হয়। ওটা ছাড়া চলা বা ক্লাইম্ব করা প্রায় অসম্ভব। হঠাৎ দেখলাম, ক্র্যাম্পন-লাগানো জুতোটা দেওয়ালেই আটকে থেকে গেল, আর জুতোর ভেতরের লেয়ার-সুদ্ধ আমার পা জুতোর বাইরে। সর্বনাশ, জুতো হারালে পায়ে ফ্রস্টবাইট হয়ে যাবে, পা কাটা পড়বে! জুতোটা কোনও মতে দেওয়াল থেকে উপড়ে টেনে প্রথমে আমার ক্যারাবিনার-এর সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিলাম। তার পর জুতোটা পরার চেষ্টা করলাম, কিন্তু আধঝোলা অবস্থায় কি তা হয়!

কিছু ক্ষণ বৃথা চেষ্টার পর ঠিক করলাম, দেওয়ালের নীচে নেমে একটা জায়গা পেলে জুতোটা পরে নেওয়া যাবে। কিন্তু এক পায়ে জুতো পরে নামতে নামতে বুঝলাম, ক্র্যাম্পন-হীন পা’টা কোনও কাজেই লাগছে না নামার জন্য। বরং বেশি করে পিছলে যাচ্ছি। তত ক্ষণে বরফ পড়া আরও বেড়ে গেছে। কোনও মতে স্লাইড করতে করতে নেমে এলাম। জুতোটাতে অনেক বরফ এরই মধ্যে ঢুকে পড়েছে। বরফ ঝেড়ে যেই পরতে যাচ্ছি, তারই মধ্যে আবার বরফ ঢুকে পড়ছে। হাতে তিন লেয়ারের গ্লাভস, ভাবলাম বাইরের লেয়ারটা খুলি, ভাল গ্রিপ পাব, জুতোটা পরতে সুবিধে হবে। খুব সাবধানে খুলে জ্যাকেটের পকেটে ঢুকিয়ে রাখলাম, যাতে উড়ে না চলে যায়। তাতেও সুবিধে হল না, এ বার মিড্ল লেয়ারের গ্লাভসটা দাঁত দিয়ে চেপে রেখে জুতোটা লুজ করছি, হঠাৎ একটা দমকা হাওয়া এসে ওটা উড়িয়ে নিয়ে চলে গেল! অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকলাম কিছু ক্ষণ... অবধারিত ফ্রস্টবাইট হবে আঙুলে। ঠিক তখনই জুতোটা পায়ে ফিট করে গেল আবার। বোধহয় ঈশ্বর চান না, হাত আর পা একসঙ্গে যাক!

এ বার আমি আর মুসা নীচের দিকে কম ঢালের জায়গাটা ধরে নামতে লাগলাম। মধ্যিখানে ব্যাগ। ব্যাগটা যেন অন্য দিকে টানছে আমাদের, ব্যালান্সও নষ্ট করে দিচ্ছে। হঠাৎ একটা জোরে আওয়াজ! কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছি না। আর কোমরে লাগল হ্যাঁচকা টান! সঙ্গে সঙ্গে আইস-অ্যাক্স’টা আমূল বসিয়ে দিলাম বরফে। দিয়ে ‘অ্যাংকর’ করে নিলাম। আবছা আবছা বুঝতে পারলাম, মুসা একটা লুকনো ক্রিভাস-এ (বরফের ফাটল) প্রায় ঢুকে গেছে, কোনও মতে আটকে আছে। পিছনের ব্যাগ আর কনুইয়ের জন্য পুরোপুরি ঢুকে যায়নি। আমি মুসাকে চিৎকার করে বললাম, হাতের ওপর ভর দিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করো। কারণ আমি ওই পজিশনে অ্যাংকর ছেড়ে বেরলে, দুজনেই পড়ে যাব ক্রিভাসে। মুসা বেশ কিছু ক্ষণ চেষ্টা করার পর, বেরতে পারল। দুজনেই হাঁপাচ্ছি তখন।

ঠিক করা হল, ব্যাগটাকে দেওয়ালের দড়িতে অ্যাংকর করে দেব। পরে কোনও এক সময় এসে নিয়ে যাব। নইলে খুব ঝুঁকি হয়ে যাচ্ছে। এ বার সামনে খোলা ক্রিভাস, আমি মুসাকে ওখানে রেখে অন্য রাস্তা খুঁজতে গেলাম, কিছু দেখা যাচ্ছে না, মাঝে মাঝে একটু পরিষ্কার হচ্ছে বটে, পরমুহূর্তেই আবার ভিজিবিলিটি অলমোস্ট জিরো। তবু চলছি। হঠাৎ একটু ক্লিয়ার হল, সামনে যা দেখলাম, হাড় হিম হয়ে গেল। আর দু’পা এগোলেই আর একটা ক্রিভাস! যেন হাঁ করে অপেক্ষা করছে, কখন আমি তার ভেতরে পড়ব। পিছিয়ে এলাম। মুসা যে ক্রিভাসে পড়েছিল, ওরই পাশ দিয়ে স্নো-ব্রিজ খুঁজে বেরিয়ে এলাম।

এখনও তো অনেকটা দূর ক্যাম্প, ঠান্ডা বাড়ছে, শরীর অবসন্ন, ভাল করে কিছু দেখা যাচ্ছে না, আর হাওয়ার যা দাপট, কিছু বলতে গেলে জোরে জোরে বলতে হচ্ছে। কী করে ফিরব বোঝা যাচ্ছে না...আদৌ ফিরতে পারব তো? মুসাকে চাঙ্গা করার জন্য বললাম, তাড়াতাড়ি ব্যাক করো, শহরে পৌঁছতে হবে, আলাস্কাতে স্যামন মাছ খুব নাম করা। খেতেই হবে। মুসা বলল, তাই নাকি? তা হলে তো তাড়াতাড়ি যেতেই হয়। তবে ইলিশের ধারেকাছে কোনও মাছ নেই, ও-সব স্যামন-ট্যামন নস্যি। তুমি এক বার বাংলাদেশে এসো, খাওয়াব। তোমরা যা খাও ওটা মাছ না, মাছের জেরক্স। শুরু হল বাঙালির আড্ডা! ওই দুর্যোগের মধ্যে! কী ভাবে কোন মাছ ধরা হয়, রান্না করা হয়, এই সব গল্প করতে করতে ভুলেই গেলাম পরিস্থিতি। শুধু মনে রাখছিলাম, গোটা রাস্তায় চলতে চলতে হাত-পায়ের আঙুলগুলো অনবরত নাড়তে হবে, যাতে রক্ত-চলাচল’টা বন্ধ না হয়ে যায়। এতে ফ্রস্টবাইট হওয়ার চান্স কমবে।

ঘণ্টা দেড়েক কেটে গেছে কখন, টের পাইনি। আবহাওয়াটা যেন একটু ক্লিয়ার হল। মরীচিকার মতো দূরে দেখলাম, ছোট ছোট টেন্ট। মুসাকে জড়িয়ে ধরলাম। ক্যাম্প দেখা যাচ্ছে! তা হলে আমরা বেঁচে গেলাম! পঁয়তাল্লিশ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম, তক্ষুনি ক্রিস্টোফার দৌড়ে এসে আমাদের জন্য গরম জল, চা, গরম জামাকাপড় নিয়ে এল। তখন আমরা টলছি। আমার মোজা ভিজে গিয়েছে। ভয়ে ভয়ে জুতো খুলে দেখলাম, যাক, পায়ের আঙুলে ফ্রস্টবাইট হয়নি। গরম জলে হাত-পা ডুবিয়ে বসে পড়লাম। কিন্তু তারই মধ্যে দু’হাতের ছ’টা আঙুলে ফার্স্ট ডিগ্রি ফ্রস্টবাইট হয়েছে। উঁচু উঁচু সাদা ফোসকা পড়ে গেছে ঠান্ডায়। তাও ভাল, কালো হয়নি। তা হলে আঙুল বাঁচানো মুশকিল হয়ে যেত, যেটাকে বলে সেকেন্ড ডিগ্রি ফ্রস্টবাইট। তিন দিন আমরা ওই ক্যাম্পে আটকে পড়লাম। ওষুধপত্র আর গরম জলের দৌলতে সে যাত্রায় আমার আঙুলগুলো বেঁচে গেল। আর মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার সাক্ষী থেকে গেলাম এ-পার ও-পার দুই বাংলার দুই বাঙালি।

মৃত্যুকে আরও কাছ থেকে দেখেছিলাম এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের কাছে, আগের বছর ভূমিকম্পের সময়। সে দিন আমার বেস ক্যাম্পে যাওয়ার কথা, জাস্ট চল্লিশ মিনিটের দূরত্ব, আবার এক জন চেনা শেরপা বলে রেখেছেন, তাঁর তাঁবুতে গিয়ে লাঞ্চ করতে। আমরা একটা টেন্টে বসে বন্ধুরা মিলে গল্প করছি, কেউ কেউ স্যাটেলাইট ফোনে ভাল সিগনাল পেয়ে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলছে, আমি ভাবছি, ধুর, আর লাঞ্চ করতে যাব না, এখানেই খেয়ে নিই। হঠাৎ সাংঘাতিক দুলুনি, বিকট একটা শব্দ, আর সঙ্গে সঙ্গে একটা বরফের দেওয়াল যেন আমাদের দিকে ধেয়ে এল, নাকমুখ সব গুঁড়ো গুঁড়ো বরফে বন্ধ হয়ে গেল, শ্বাস নেওয়া দায়। কয়েক মিনিট পরে, ভুমিকম্প ও ধসের কথা শুনলাম। কাঁদতে কাঁদতে লোকজন চারিদিকে দৌড়চ্ছে, কারও পায়ের হাড় ভেঙে বেরিয়ে আছে, সেই অবস্থায় ছুটছে। কেউ বাড়িতে ফোন করে চিৎকার করছে, সারা জীবনের মতো মাউন্টেনিয়ারিং ছেড়ে দিলাম। খবর পেলাম, কেউ তাঁবুর মধ্যে চাপা পড়ে মারা গেছে, কোনও টেন্টকে ৩০-৪০ ফুট উঁচুতে তুলে আছড়ে নিয়ে ফেলেছে এই ভূমিকম্প। চারিদিকে মৃতদেহ, ছন্নছাড়া ভাবে পড়ে আছে গ্লাভস, বই, দোমড়ানো ল্যাপটপ। আমার যে তাঁবুতে লাঞ্চ করতে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে দুজন মারা গেছে। আর বেস ক্যাম্প? যেটায় স্রেফ আলিস্যি করে যাচ্ছিলাম না? সেটায় মারা গিয়েছিল একুশ জন!

satyarup.siddhanta@gmail.com

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন