কিম কার্দাশিয়ান-এর আরও কিছু আকর্ষণীয় ছবি দেখতে, অ্যাপ্ল অ্যাপ স্টোর (আই ফোন) অথবা গুগ্ল প্লে স্টোর (অ্যান্ড্রয়েড) থেকে ABP AR App-টি ডাউনলোড করে এই ছবিটি স্ক্যান করুন।
ক্রিস জেনার তাঁর প্রথম বিয়েটি ভেঙে, বিয়ে করেছিলেন এক কালের অলিম্পিক মেডেলিস্ট ব্রুস জেনারকে। ক্রিসের প্রথম স্বামী রবার্ট কার্দাশিয়ান বেশ দুঁদে আইনজীবী ছিলেন, লোকে নামধাম জানত। তা তিনি এখন বছর কয়েক হল গত। প্রথম পক্ষের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ক্রিসের সম্পর্ক মন্দ নয়। এই প্রথম পক্ষের বোনেদের অর্থাৎ ক্লোয়ি, কিম ও কোর্টনি কার্দাশিয়ানের মধ্যে কিম তো বিশ্বের তাবৎ পুরুষহৃদয় তোলপাড় করা নাম। এমনিতে কিম স্টাইলিস্ট আর ফ্যাশনিস্তা। এখন তিন বোনে মিলে হাই ফ্যাশন বুটিক সামলান। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটা সম্পর্কে জড়িয়ে বারবার হেডলাইন তৈরি করেছেন। ২০০৭-এর ফেব্রুয়ারিতে, কিম ও তাঁর তখনকার প্রেমিকের একটি সেক্স ভিডিয়ো লিক হয়ে গিয়েছিল। সেটাকে একটি সংস্থা ফিল্ম বানিয়ে বেচে লাল হয়ে গেল। তখন কিম আপত্তি করলেন ঠিকই, তবে পাঁচ মিলিয়ন ডলার পেতেই চুপ করে বসে ‘সুপারস্টার’ ইমেজ উপভোগ করতে লাগলেন। এ ঘটনার ক’মাস পরই শুরু হয়ে যায় এই রিয়েলিটি শো। কার্দাশিয়ান-জেনার (ক্রিস জেনারের দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী ও ছেলেমেয়েরা) পরিবার এ বার থেকে যা করবেন, যেখানে যাবেন, যা খাবেন, যা পরবেন ও যার সঙ্গে ‘মিশবেন’ সমস্তটা ক্যামেরা রেকর্ড করে যাবে। অক্লান্ত।
শো-র আয়োজকরা জানিয়েছিলেন: সৎ বাবা-মা-ভাই-বোনে বোঝাই একটা সমস্যাজীর্ণ পরিবার, এঁদের মধ্যে চুলোচুলি, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ তো থাকবেই। সেটা বাদ দিন। আমরা দেখাতে চাই, ঠোকাঠুকি সামলেও পরিবারটি কেমন করে একে অপরকে ভালবাসেন, সাহায্য করেন। ওটাই শেখার।
কে কী শিখল জানা যায়নি, কিন্তু সকলের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল সত্যি। বোনেরা মডেলিং করছেন, অন্য শহরে ফ্যাশন স্টোর খোলার জন্য ছোটাছুটি করছেন, সে সব ক্যামেরা দেখাচ্ছে, ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা মাড-স্কিয়িংয়ে যাচ্ছেন, সোনার অঙ্গে কাদা মেখে লাগামহীন লজ্জাবিহীন খেলাধুলো করছেন, তখনও সঙ্গে ক্যামেরা! কিমের বোন ক্লোয়ি একখানা এইটুকু হট প্যান্টস পরে আয়নার সামনে নিজেকে ঘুরেফিরে দেখছেন। সেটাও ক্যামেরা শু্যট করছে! প্রেমের তো এ টু জেড হচ্ছে অন-ক্যামেরা। ক্যামেরার সামনেই নামী-অনামী ছেলেরা কার্দাশিয়ান-জেনার বোনেদের ডেট করতে চান বলে প্রোপোজাল দিচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে রোম্যান্স, এনগেজমেন্ট, বিয়ে, ডিভোর্স, প্রেগনেন্সি, বিচ্ছেদের পর কাদা ছোড়াছুড়ি, কান্নাকাটি, ডিপ্রেশন ও আবার প্রেম সর্বস্ব ঘটে চলেছে ক্যামেরার সামনে। এই পরিবারের বন্ধু-বয়ফ্রেন্ড ও সুহৃদ যাঁরা, যখনতখন ক্যামেরা ঢুকে পড়ছে তাঁদের বাড়ি। তবে সবচেয়ে বেশি টিআরপি হয়েছিল কিম কার্দাশিয়ান যখন ঘটা করে নিজের এনগেজমেন্ট ঘোষণা করলেন। বাস্কেটবল খেলোয়াড় ক্রিস হামফ্রিস-এর সঙ্গে তাঁর বাগ্দান আর বিয়ের জোগাড়যন্ত্র থেকে শুরু করে আসল অনুষ্ঠান বেশ কয়েক দিন ধরে দেখানো হল। তার পরই বিশাল চমক। বিয়ের ৭২ দিনের মধ্যে ঝুলল ডিভোর্সের নোটিস। চারদিকে ফিসফাসগুলো এই বারে গলা চড়াল। পিটিশন পড়ে গেল আদালতে। এ সব হচ্ছেটা কী? জীবন নিয়ে পাবলিসিটি স্টান্ট? একটা ফ্যামিলির ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানোর জন্য আর অন্য কিছু অনুষ্ঠানকে জনপ্রিয় করার জন্য মেয়েটা সম্পর্ক নিয়ে খেলছে? অন্য কিছু অনুষ্ঠান বলতে? আরে, নিন্দুকে যতই নাক সিঁটকোক, তত দিনে এই শো এত জনপ্রিয়, পরিবারের সদস্যদের জীবনের নানা ঘটনাকে নিয়ে শুরু হয়ে গেছে অন্য কয়েকটা রিয়েলিটি শো। যেমন কোর্টনি অ্যান্ড কিম টেক মায়ামি, ক্লোয়ি অ্যান্ড লামার! এ সব শো’তে নিজেদের ওপর প্রচারের আলো টিকিয়ে রাখতে কার্দাশিয়ানরা করছেনও উদ্ভটতম সব কাণ্ড। কখনও লাল হলুদ চকচকে লেদার প্যান্টস পরে আসছেন, কখনও মুখে কাপড় বেঁধে ডাকাত ডাকাত খেলছেন। সেগুলো প্রোগ্রামে দেখানো হচ্ছে, ফেসবুকে, ইনস্টাগ্রামেও থরে থরে সাজিয়ে রাখা হচ্ছে।
শত্তুরদের মুখে ছাই মেরে কিম আবার অন-টিভি এনগেজ্ড হয়েছেন গত অক্টোবরে। এ বার র্যাপার কানিয়ে ওয়েস্ট-এর সঙ্গে। ক্রিসের সঙ্গে বিবাহিত থাকা অবস্থাতেই নাকি এই ওয়েস্টেরই সন্তান এসেছিল তাঁর গর্ভে। এ সবই জানা গেছে এই শো মারফত। কিম ও তাঁর নিকট-সার্কিটের কাণ্ড দেখিয়ে, হাই টিআরপি ছিনিয়ে, এখনও পর্যন্ত ন’টা সিজন ধরে দৌড়চ্ছে এই শো। ছুটছে দর্শকও, ওঁদের সুপারফাস্ট ও সুপার-আকর্ষক লাইফস্টাইলের পিছু পিছু। শেষ বেলায় শুধু ছোট্ট এক পিস খবর, প্রতি সিজনের জন্য কার্দাশিয়ান পরিবার প্রায় দশ মিলিয়ন ডলার নিচ্ছেন!