৫০ বছরেরও বেশি একটানা পলিটব্যুরোর চেয়ারম্যান থাকার পর মারা গেলেন বঙ্গীয় কমিউনিস্ট পার্টির সর্বময় নেতা। চোখের জলে তাঁকে আগুনের বুকে বিদায় জানালেন পলিটব্যুরোর বাকি সদস্যরা। সেই ২০১৪ সালে কিছু অর্বাচীন খুব চেঁচিয়েছিলেন, পুরো নেতৃত্ব পালটে ফেলার দাবিতে। কিন্তু তার পর থেকে পলিটব্যুরোর মেম্বাররা ছাড়া দলে আর অন্য কোনও সদস্য না থাকায়, এই রকম অন্যায্য দাবি আর ওঠেনি। তাই এই মৃত্যু অনেক দিন পরে বড় ধাক্কা। তবু, রাজনীতিতে বসে থাকার উপায় নেই। নতুন চেয়ারম্যান ঠিক করার মিটিং আজ। পোড় খাওয়া নেতা ধীমান ঘোষ কাউকে কিছু না বলে চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসতে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ এক ধাক্কায় তাঁকে সরিয়ে, নতুন করে আবির্ভূত হয়ে, চেয়ারে বসে পড়লেন পুরনো চেয়ারম্যান! কেউ কিছু বলার আগেই মিটিং চালু করে দিলেন! বাকি সকলে থতমত। ১০০ বছর বয়সের নবীন সদস্যটি ১২০ বছরের মধ্যবয়স্ককে ফিসফিস করে বললেন, ‘ওঁর গলাটা কেমন খোনা খোনা না?’ মধ্যবয়স্ক ধমকে বললেন, ‘কমিউনিস্ট পার্টিতে থেকে ভূতে বিশ্বাস করছ, তোমার লজ্জা হয় না?’ নবীন সদস্য আর কিছু না বলাই সংগত মনে করলেন। দু’ঘণ্টার বক্তৃতায় সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পার্টির স্ট্র্যাটেজি কী হবে, তা জলের মতো বুঝিয়ে দিলেন চেয়ারম্যান। সবাই অভিভূত। এক বৃদ্ধ সদস্য তো কেঁদেই ফেললেন। বললেন, ‘আমি শুধু ভাবছি, লেনিন, স্ট্যালিন, মাও’রাও যদি এ ভাবে ফিরে আসতেন!’ সদ্য ৯৮ বছরে পা দেওয়া এক নবীন বোকা খালি মিউ মিউ করে জানাল, খোনা গলার জন্য সে নাকি চেয়ারম্যানের কথা কিছুই বোঝেনি। কটমট করে তার দিকে তাকিয়ে এক সিনিয়র বললেন, ‘খোনা গলা না হলেও যেন কত বুঝতে!’ নবীন তবু মৃদু আপত্তির সুরে বলল, ‘তাই বলে এখন থেকে ভূতে পার্টি চালাবে?’ সিনিয়র মুখ বেঁকিয়ে বললেন, ‘ক্ষতি কী? পুরো পার্টিটাই তো মরে ভূত হয়ে গেছে।’
কৌশিক ভট্টাচার্য, লখনউ
লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের রিপোর্ট?
ঠিকানা: টাইম মেশিন, রবিবাসরীয়, আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০ ০০১।
অথবা pdf করে পাঠান এই মেল-ঠিকানায়: robi@abp.in