প্লুটোর বুকে ভেসে চলেছে বড় বড় বরফ পাহাড়! দেখুন নাসার ভিডিও

বড় বড় পাহাড় সরে সরে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে নয়। দ্রুত গতিতে। অনেকটা জলের স্রোতের মতো! সরে সরে যাচ্ছে। চলে বেড়াচ্ছে। গড়িয়ে চলেছে। এমন চলমান বড় বড় পাহাড়ের হদিশ মিলল প্লুটোয়। বেশ কিছু জায়গায় সেগুলো যেন পর্বতমালা হয়ে উঠেছে। সন্ধান মিলেছে এমন হিমবাহেরও (গ্লেসিয়ার), যেখান থেকে বেরিয়ে আসছে নাইট্রোজেনের বরফ। এই সৌরমণ্ডলের অন্যতম প্রধান ‘বামন গ্রহে’। এই প্রথম। দেখুন ভিডিও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১১:২১
Share:

প্লুটোর ভাসমান পাহাড়ের ছবি। শিল্পীর কল্পনায়।

বড় বড় পাহাড় সরে সরে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে নয়। দ্রুত গতিতে। অনেকটা জলের স্রোতের মতো!

Advertisement

সরে সরে যাচ্ছে। চলে বেড়াচ্ছে। গড়িয়ে চলেছে।

সেই জল কিন্তু তরল অবস্থায় নেই। রয়েছে একেবারে জমাট বাঁধা বরফ হয়ে।

Advertisement

অনেকটা যেন পৃথিবীর সুমেরু বা কুমেরু সাগরের তলায় লুকিয়ে থাকা হিমশৈল! যেগুলো কম করে ৩২ থেকে ৩৫ কিলোমিটার লম্বা।

এমন চলমান বা ভাসমান বড় বড় পাহাড়ের হদিশ মিলল প্লুটোয়। বেশ কিছু জায়গায় সেগুলো যেন পর্বতমালা হয়ে উঠেছে। সন্ধান মিলেছে এমন হিমবাহেরও (গ্লেসিয়ার), যেখান থেকে বেরিয়ে আসছে নাইট্রোজেনের বরফ। এই সৌরমণ্ডলের অন্যতম প্রধান ‘বামন গ্রহে’। এই প্রথম।


প্লুটোয় ভাসমান পাহাড়ের হদিশ মিলেছে যেখানে।

(মার্কিন ‘নিও হরাইজন’ মহাকাশযান থেকে তোলা সেই সব চলমান বড় বড় পাহাড়ের ছবি শুক্রবার টুইট করেছে নাসা।)

দেখুন নাসার ভিডিও- প্লুটোর ভাসমান পাহাড়।

ওই সব ছবিই বলছে, আমাদের এই সৌরমণ্ডলের একেবারে শেষ প্রান্তে, ক্যুইপার বেল্টে থাকা এক সময়ের ‘নবম গ্রহ’ প্লুটো আদ্যপান্তো নিষ্প্রাণ, নিস্তেজ, স্থবির কোনও মহাজাগতিক বস্তু নয়। তার ভূস্তরের পরিবর্তন হয়। তা হয়ে চলেছে, প্রতি মুহূর্তে। তাই বড় বড় পাহাড় সেখানে সরে সরে যাচ্ছে, দ্রুত গতিতে। হিমশৈলের মতো। পৃথিবীতে যেমন বড় বড় হিমবাহ থেকে বেরিয়ে এসেছে বড় বড় নদী, তেমনই প্লুটোয় হিমবাহগুলো থেকে বেরিয়ে আসছে নাইট্রোজেনের বরফ। সূর্যের চেয়ে অনেক অনেক দূরে থাকায় অসম্ভব ঠাণ্ডায় সেই নাইট্রোজেন আর তরল বা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকতে পারেনি। জমে পুরু ও শক্ত বরফ হযে গিয়েছে।

প্লুটোয় ভাসমান পাহাড়।

ওই বড় বড় চলমান পাহাড়গুলো রয়েছে প্লুটোর একেবারে কেন্দ্রস্থলে ‘স্পুটনিক প্লেনাম’ নামে বরফেোর সমতল ভুমিতে। যার পশ্চিম দিকে রয়েছে আরও বড় বড় আর উঁচু উঁচু পাহাড়। সেগুলোও বরফের। তবে তার সবগুলোতেই জল জমে গিয়ে বরফ হয়নি। তরল বা গ্যাসীয় অবস্থায় থাকা নাইট্রোজেন হাড়-জমানো ঠাণ্ডায় পুরোপুরি জমে গিয়ে ওই নাইট্রোজেনের বরফগুলো তৈরি করেছে। এটাও প্রমাণ করে, নিয়মিত ভাবে প্লুটোর ভূস্তরের পরিবর্তন হয়ে চলেছে। তাই তারতম্য হয়েছে ভূস্তরের ভাঁজে। ফলে কোনও পাহাড় বেশ উঁচু। কোনওটা কম। কোনও পাহাড় অনেক বেশি এলাকা জুড়ে ছড়ানো। কোনওটা রয়েছে অল্প জায়গা জুড়ে। যে পাহাড়গুলো তুলনায় কম উঁচু আর রয়েছে অল্প এলাকা জুড়ে, সেগুলোই শুধু সরে সরে যাচ্ছে। চলে বেড়াচ্ছে। যেন গড়িয়ে চলেছে। অন্তত সেই রকম ছবিই ধরা পড়েছে মহাকাশযান ‘নিও হরাইজনে’র ক্যামেরায়।

তবে নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সম্ভবত চলমান পাহাড়গুলোর বরফ তৈরি হয়েছে হাড়-জমানো ঠাণ্ডায় জল জমে গিয়েই। নাইট্রোজেনের বরফ দিয়ে যে পাহাড়গুলো তৈরি হয়েছে, সেগুলোর কিন্তু কোনও নড়ন-চড়ন নেই। কারণ, নাইট্রোজেন বরফের ঘনত্বের চেয়ে জল জমে গিয়ে হওয়া বরফের ঘনত্ব অনেকটাই কম। নাইট্রোজেনের হিমবাহগুলো ওই জল জমাট বেঁধে তৈরি হওয়া পাহাড়গুলোকে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যাচ্ছে।

ছবি সৌজন্য : নাসা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন