আমরা এত দিন যা জানতাম, তারও অন্তত ৪০ কোটি বছর আগে উদ্ভিদের জন্ম হয়েছিল আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহে। অন্তত ১৬০ কোটি বছর আগে তো বটেই।
মধ্য ভারতে সদ্য হদিশ মেলা প্রাচীনতম শিলাই এই খবর দিয়েছে। ওই শিলার খাঁজে খাঁজেই থাকত লাল রঙের একটি বিশেষ প্রজাতির শৈবাল। দলে দলে। গোটা এলাকাটা ভরে থাকত ওই লাল রঙের প্রাটীনতম শৈবালে। যা থেকে জন্ম হয়েছে আধুনিক প্রজন্মের উদ্ভিদের। ওই শিলার বয়স মেপে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, লাল রঙের ওই বিশেষ প্রজাতির শৈবালগুলি পৃথিবীতে এসেছিল কম করে ১৬০ কোটি বছর আগে। ওই এলাকায় সমুদ্র তখনও অতটা গভীর ছিল না। এর আগে সবচেয়ে প্রাচীন যে শৈবালের জীবাশ্ম মিলেছিল বাল্টিক সাগরে, তা ছিল ১২০ কোটি বছর আগেকার। এর আগে ভারতে সবচেয়ে প্রাচীন যে উদ্ভিদের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছিল, তা ছিল ৪০ কোটি বছর আগেকার।
একেবারে সুতোর মতো প্রাচীনতম ওই শৈবালের বেশ কয়েকটি জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছেন সুইডিশ মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রির গবেষক থেরেস সল্সস্টেড। তাঁর কথায়, ‘‘এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন উদ্ভিদের জীবাশ্ম। আর সেটা ছিল বিশেষ প্রজাতির শৈবাল। যা পৃথিবীতে এসেছিল অন্তত ১৬০ কোটি বছর আগে। এটা প্রমাণ করে, ছত্রাক, গাছপালা, মানুষের মতো উন্নত জীবনের (ইউক্যারিওটস) ভিতটা তৈরি হয়েছিল আরও আরও আগে। এখনও পর্যন্ত যেটুকু জানা গিয়েছে, তাতে পৃথিবীতে প্রথম প্রাণ এসেছিল ৩৫০ কোটি বছর আগে। তবে বাল্টিক সাগরে পাওয়া প্রাচীনতম লাল শৈবালের জীবাশ্মের সঙ্গে এর কিছু কিছু মিল পাওয়া গিয়েছে।’’ গরেবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘প্লস বায়োলজি’তে।
সহযোগী গবেষক সুইডিশ মিউজিয়াম অফ ন্যাচারাল হিস্ট্রির অধ্যাপক স্টেফান বেঙ্গটসন বলেছেন, ‘‘আমরা ওই প্রাচীনতম উদ্ভিদের কোনও ডিএনএ পাইনি, ফলে তা কী ভাবে গড়ে উঠেছিল, তার শরীরের রাসায়নিক উপাদানগুলি কী ছিল, তা আমাদের পক্ষে এখনও জেনে ওঠা সম্ভব হয়নি।’’