NASA

ভিন গ্রহে প্রাণ? আজ ঘোষণা নাসার

নাসা সূত্রে খবর, এই যুগান্তকারী আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে গুগলের বি়জ্ঞানী, গবেষকদের।

Advertisement

সুজয় চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:২৩
Share:

কেপলার মহাকাশযান। ছবি নাসার সৌজন্যে।

তরল জল বা বরফ বা পাতলা বায়ুমণ্ডলের হদিশ আগেই মিলেছিল মহাকাশের কয়েকটি ভিন গ্রহে। এ বার হয়তো সত্যি সত্যিই আমাদের এই সৌরমণ্ডলের বাইরে কোনও ভিন গ্রহে প্রাণ সৃষ্টির গুরুত্বপূর্ণ উপাদানও খুঁজে পেল মানব সভ্যতা। সেই উপাদান খুব সম্ভবত হতে চলেছে কোনও জৈব অণু, যা জল আর বাতাস পেলে অণুজীবের জন্ম দিতে পারে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সেই যুগান্তকারী ঘোষণাই করতে চলেছে নাসা। ওয়াশিংটনের সদর দফতরে, ভারতীয় সময় রাত সাড়ে এগারোটায় সাংবাদিক সম্মেলনে। যেখানে হাজির থাকবেন নাসার সদর দফতরের অ্যাস্টোফিজিক্স ডিভিশনের জ্যোতির্বিজ্ঞানী পল হার্ৎজ, গুগলের সিনিয়র সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়র ক্রিস্টোফার শ্যালু, টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাগান পোস্ট ডক্টরাল ফেলো অ্যান্ড্রু ভ্যানডারবার্গ এবং নাসার এমস রিসার্চ সেন্টারের কেপসার প্রকল্পের বিজ্ঞানী জেসি ডটসন।

নাসা সূত্রে খবর, এই যুগান্তকারী আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে গুগলের বি়জ্ঞানী, গবেষকদের।

Advertisement

গুগলের বিজ্ঞানী, গবেষকদের কী কী ভূমিকা রয়েছে এই যুগান্তকারী আবিষ্কারে?

মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যাপক ও কেপলার মহাকাশযান প্রকল্পের অন্যতম বিজ্ঞানী ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় শিকাগো থেকে টেলিফোনে আনন্দবাজারকে জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে ভিন গ্রহ খোঁজার জন্য কেপলার মহাকাশ যানকে পাঠানো হয়েছিল মহাকাশে। তার পর থেকে গত আট বছরে কেপলার এখনও পর্যন্ত ২,৩৩৭টি ভিন গ্রহের হদিস পেয়েছে, যে গুলি হয় চেহারা বা গঠনে পৃথিবীর মতো অথবা তাদের পৃথিবীর মতোই পুরু বায়ুমণ্ডল আছে। অথবা সেই সব ভিন গ্রহে জলের এখনও তরল অবস্থায় থাকা সম্ভাবনা যথেষ্টই জোরাল। যাকে ঘিরে তারা পাক মারছে, সেই নক্ষত্রগুলি থেকে যে দূরত্বে থাকলে প্রাণের সৃষ্টি বা তার টিকে থাকা সম্ভব হয়, সেই দূরত্ব বা ‘গোল্ডিলক্স জোন’-এই রয়েছে এই ভিন গ্রহ গুলি। কেপলার মহাকাশযানে পাঠানো তথ্যাদি এই প্রথম পৃথিবীর গবেষণাগারে মেশিন লার্নিং পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ করেছেন গুগলের বিজ্ঞানী, গবেষকরা। সেখান থেকেই ভিন গ্রহে প্রাণ সৃষ্টির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যৌন অণুর হদিস মিলেছে। এটাই গুগলের বিজ্ঞানী, গবেষকদের অবদান।

আরও পড়ুন: চাঁদে ফের নভশ্চর পাঠাবে আমেরিকা

কোন ভিন গ্রহে সেই প্রাণের উপাদান মিলেছে, নাসার সরকারি ঘোষণার আগে তা স্পষ্ট জানা না গেলেও জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অনুমান ‘লিও’ নক্ষত্র মণ্ডলে থাকা ভিন গ্রহ ‘কে-টু-১৮বি’ ভিন গ্রহটিতেই এই উপাদান মিলতে পারে। এই ভিন গ্রহটি পৃথিবী থেকে ১১১ আলো‌কবর্ষ দূরে। তার মানে আলোর গতিতে ছুটলে ১১১ বছরে যতটা দূরে যাওয়া যায়, ততটা দূরত্বেই রয়েছে এই ভিন গ্রহটি। এই ভিন গ্রহটি পাক মারছে যে তারাটিকে, সেটি আসলে একটি লাল বামন নক্ষত্র ( রেড ডোয়ার্স স্টার)। ওই নক্ষত্রকে পাক মারছে আরও একটি ভিন গ্রহ। তার নাম— ‘কে-টু-১৮বি’। কিন্তু, এই ভিন গ্রহটি লাল বামন নক্ষত্রের এতই কাছে রয়েছে, যে তার প্রচণ্ড তাপে এই গ্রহে প্রাণের টিকে থাকা অসম্ভব। ফলে বিজ্ঞানীদের জোড়াল বিশ্বাস প্রাণ সৃষ্টির উপাদন জৈব অণুর হদিশ হয়তো মিলেছে, ‘কে-টু-১৮বি’ ভিন গ্রহে।

আরও পড়ুন: এই শীতে পরপর তিন পূর্ণিমা জুড়ে ‘সুপারমুন’

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আরও বক্তব্য, পৃথিবীর মতো আরও একটি বাসযোগ্য গ্রহের হদিশ মিলেছিল ২০১৫ সালে। তার নাম কেপলার-৪৫২বি। এই ভিন গ্রহটি আকারে একেবারেই পৃথিবীর মতো। এবং এটিও রয়েছে তার নক্ষত্র থেকে ‘গোল্ডিলক্স জোন’ দূরত্বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন