বাঁদররাও ‘রক্ষিতা’ রাখে! এ ওর ‘বান্ধবী’কে কেড়ে নেওয়ার লড়াই চালায়।
‘হারেম’ না থাকলে বাঁদরদের মন ভাল থাকে না! তাই বাঁদরদের ‘হারেম’ও ভরে থাকে প্রচুর মেয়ে বাঁদরে!
কারও ‘হারেমে’ মেয়ে বাঁদরের সংখ্যা কম। কারও অনেক বেশি।
‘হারেম’ ভরানো অত সহজ নয়! মেয়ে বাঁদরে তা ভরিয়ে রাখার জন্য পুরুষ বাঁদরদের দু’-একটা বিশেষ গুণ থাকতে হয়। যা না থাকলে মেয়ে বাঁদররা অন্য পুরুষ বাঁদরের ‘হারেমে’ চলে যায়! যে গুণ না থাকলে ‘বান্ধবী’ও হাতছুট হয়ে য়ায় পুরুষ বাঁদরদের!
বাঁদরদের সংসারে সেই গুণ দু’টি কী কী? গলার গভীর স্বর আর ছোট অণ্ডকোষ।
এই দু’টি জিনিসের মধ্যে যে কোনও একটি থাকলেই পুরুষ বাঁদরদের আর ‘রক্ষিতা’ বা ‘বান্ধবী’র অভাব হয় না।
জীবজন্তুদের তর্জন-গর্জন, গলার স্বরের বিবর্তন সংক্রান্ত সাম্প্রতিক একটি গবেষণার ফলাফলে এ কথা জানা গিয়েছে। ওই গবেষকদলটির নেতৃত্বে রয়েছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলজিস্ট জেক ডান। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান-জার্নাল ‘কারেন্ট বায়োলজি’র সাম্প্রতিক সংখ্যায়।
তবে অণ্ডকোষ বড় হল কি হল না, তার চেয়েও মেয়ে বাঁদরদের বেশি টানে পুরুষ বাঁদরদের গলার স্বর। তা যদি গভীর আর সুরেলা হয়, তা হলে সেই পুরুষ বাঁদরের ‘হারেম’ ভরে যেতে আদৌ সময় লাগে না। তার ‘গার্ল ফ্রেন্ড’ও থাকে ভুরি ভুরি।
আরও একটা মজার ঘটনা হল, মেয়েদের আকর্ষণ করার ওই দু’টি গুণাবলী কখনও একই সঙ্গে একটি পুরুষ বাঁদরের মধ্যে থাকে না। যার গলার স্বর গভীর আর সুরেলা, তার অণ্ডকোষটা খুব বড় হয়। আর যাদের গলার স্বরটা একটু ভাঙাভাঙা বা খ্যাসখ্যাসে হয়, তাদের অণ্ডকোষটা হয় খুব ছোট। ছোট অণ্ডকোষই মেয়ে বাঁদরদের বেশি পছন্দের। বড় অণ্ডকোষ বেশি শুক্রাণু বানাতে পারলেও তা মেয়ে বাঁদরদের ততটা টানে না।
গবেষণা জানাচ্ছে, বাঁদরদের মধ্যে যারা খুব বেশি তর্জন-গর্জন করে সব সময়, তাদের বলা হয় ‘হাওলার মাঙ্কি’ বা হল্লাবাজ বাঁদর। এদের গলার স্বর খুব ভারী ও গভীর হয়। হয় খুব সুরেলাও। মিউজিকাল। সেই গলার স্বরে যেমন পুরুষ বাঁদররা তাদের শত্রুদের চমকায়, তেমনই সেই স্বর মোহিত করে দেয় মেয়ে বাঁদরদের। পুরুষ বাঁদরদের ওই স্বরেই মুগ্ধ হয়ে যায় মেয়ে বাঁদররা! তাতে সেই পুরুষ বাঁদরের ‘রক্ষিতা’র সংখ্যা বেড়ে যায়। বাড়ে ‘বান্ধবী’ও।
যাদের স্বর গভীর ও সুরেলা, তাদের গলায় থাকে বিশেষ ‘হাইওয়েড হাড়’। যা সাধারণ স্বরনালীর অন্তত ১৪ গুণ বড় হয়।
আর যেটা মেয়ে বাঁদরদের তেমন পছন্দের নয়, সেই অণ্ডকোষটা সাধারণের চেয়ে হয় সাড়ে ছ’গুণ বড়।
গবেষণা এ-ও দেখিয়েছে, একটা পছন্দের জিনিস পেলে, অপছন্দের অন্য জিনিসটাকেও মেয়ে বাঁদররা মেনে নেয়।
সেই পছন্দের ‘প্রায়োরিটি’তে এগিয়ে থাকে পুরুষ বাঁদরদের গলার গভীর ও সুরেলা স্বরই।