মহাকাশে চাষবাস শুরুর জিন রয়েছে তামাকেই!

আমাদের পক্ষে যা ক্ষতিকর, সেই তামাকেই কি লুকিয়ে রয়েছে মহাকাশে মানুষের ঘর-সংসার পাতার স্বপ্ন ? মহাকাশে আমাদের ঘর-সংসার পাতার জন্য সবচেয়ে আগে দরকার চাষবাস।আর খুব শিগগিরই মহাকাশে সেই চাষবাস শুরু করতে চায় নাসা!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৫ ১৪:৫৮
Share:

আমাদের পক্ষে যা ক্ষতিকর, সেই তামাকেই কি লুকিয়ে রয়েছে মহাকাশে মানুষের ঘর-সংসার পাতার স্বপ্ন ?

Advertisement

মহাকাশে আমাদের ঘর-সংসার পাতার জন্য সবচেয়ে আগে দরকার চাষবাস।

আর খুব শিগগিরই মহাকাশে সেই চাষবাস শুরু করতে চায় নাসা!

Advertisement

ফুল, ফল আর শস্যের!

কিন্তু সেই শুরুটা হবে কী ভাবে ?

তার জন্য আমাদের এই গ্রহে সাড়ে সাত লক্ষ বছর ধরে টিঁকে থাকা একটি বিশেষ প্রজাতির তামাক গাছের জিনকে কাজে লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে। যে জিন খুব তাড়াতাড়ি গড়ে ও বেড়ে উঠতে পারে। আর তাই মহাকাশে চাষবাস শুরু করার জন্য বিলুপ্ত ওই গাছের জিনকেই ব্যবহার করার কথা ভাবা হচ্ছে।

সেই গাছের ঠিকুজি-কোষ্ঠী কেমন ?

যে তামাক গাছের জিন ব্যবহার করার কথা ভাবা হচ্ছে, তার বৈজ্ঞানিক নাম-'নিকোটিনা বেন্থামিয়ানা'। প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ বছর আগে এই প্রজাতির তামাক গাছের জন্ম হয় অস্ট্রেলিয়ায়। অস্ট্রেলিয়ায় কয়েকটি আদিম উপজাতি গোষ্ঠী ওই গাছটিকে 'পিটজুরি' বলে ডাকে। কয়েক দশকের লাগাতার সন্ধানের পর সম্প্রতি ওই গাছের হদিশ মিলেছে। তাদের মধ্যে একটি অদ্ভুত জিন খুঁজে পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ-জিন তত্ত্ববিদ পিটার ওয়াটারহাউস। তিনি দেখেছেন, সাড়ে সাত লক্ষ বছর আগে ওই প্রজাতির তামাক গাছের বাড়-বাড়ন্ত শুরু হয়েছিল পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া ও উত্তর অস্ট্রেলিয়ার সীমান্তে গ্রানাইট পাথরে ভরা এলাকায়। এর মানে, গ্রানাইটের মতো শক্ত পাথুরে জমি ও পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে সেখানে গড়ে ও বেড়ে ওঠার স্বাভাবিক ক্ষমতা রয়েছে ওই বিশেষ প্রজাতির তামাক গাছের। যা, অন্য প্রজাতির তামাক গাছ বা অন্যান্য গাছের মধ্যে দেখা যায় না বললেই চলে। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালানো বা নতুন প্রতিষেধক আবিষ্কারের ক্ষেত্রেও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে ওই 'পিটজুরি' গাছের জিনটি। জিন তত্ত্ববিদ ওয়াটারহাউসের মতে, “গবেষণাগারে ইঁদুরের কদর যতটা, আগামী দিনে নতুন প্রতিষেধক আবিষ্কার বা কৃত্রিম ভাবে শস্যের দ্রুত ফলনের জন্য এই জিনের কদর হবে ততটাই।”

ওই গাছের জিনের এমন কী কী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা নজর কেড়েছে নাসার বিজ্ঞানীদের ?

এক, সামান্য বৃষ্টি বা খুব অল্প জলেই এরা দ্রুত বেড়ে উঠতে পারে। বংশ-বিস্তার করে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফুল তো ফোটাতে পারেই, তবে ফল ফলাতে পারে অনেক বেশি। যা মহাকাশে চাষবাসের জন্য খুবই প্রয়োজন।

দুই, গ্রানাইট পাথুরে জমিতেও এরা গড়ে ও বেড়ে উঠতে পারে। মঙ্গল বা ভিনগ্রহের পাথুরে জমিতে চাষবাস শুরুর পক্ষে তাই একেবারেই আদর্শ।

তিন, এরা সামান্য বৃষ্টি বা খুব অল্প জলে গড়ে ও বেড়ে উঠতে পারে বলে প্রচণ্ড খরাতেও এদের বাড়-বাড়ন্ত হয়। তাই মহাকাশে জল না মিললেও, এদের দিয়ে চাষবাস শুরু করতে তেমন অসুবিধা হবে না নাসার বিজ্ঞানীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন