Science News

থাম্ব বা ভিক্ট্রি সাইন দেখিয়ে সেলফি তোলেন? বিপদে পড়ে যেতে পারেন কিন্তু

সেলফি, গ্রুপফি, পাউট, ভিক্ট্রি— ফ্রন্ট ক্যামেরাপ্রেমী জেন ওয়াই প্রজন্মের কাছে এ সমস্ত শব্দ যেন জলভাত। কফি শপ থেকে কালীঘাট, বার্থ ডে পার্টি থেকে বাস স্টপ, ‘সেলফি লে লে’র যুগে নিজস্বী ছাড়া যেন সবটাই ম্যাড়ম্যাড়ে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ ১৩:৪২
Share:

সেলফি, গ্রুপফি, পাউট, ভিক্ট্রি— ফ্রন্ট ক্যামেরাপ্রেমী জেন ওয়াই প্রজন্মের কাছে এ সমস্ত শব্দ যেন জলভাত। কফি শপ থেকে কালীঘাট, বার্থ ডে পার্টি থেকে বাস স্টপ, ‘সেলফি লে লে’র যুগে নিজস্বী ছাড়া যেন সবটাই ম্যাড়ম্যাড়ে। সেলফিকে আরও প্রাণবন্ত করতে কেউ করেন পাউটি লিপস, কেউ হাতে ভিক্ট্রি চিহ্ন দেখাতে পছন্দ করেন। কিন্তু এ বার থেকে ভিক্ট্রি চিহ্ন-সহ সেলফি তোলার আগে দু’বার ভাবুন। সম্প্রতি জাপানের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেটিকস বা এনআইআই জানাচ্ছে, আপনার হাতের ভিক্ট্রি চিহ্ন থেকেই হতে পারে আপনার সর্বনাশ। এমনকী ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত করার স্বার্থে সম্প্রতি ভিক্ট্রি চিহ্ন-সহ সেলফি তোলার ব্যাপারে সাবধানীও হতে বলছে এনআইআই। কিন্তু কেন? এই নির্দিষ্ট চিহ্নের সেলফির সঙ্গে সুরক্ষার সম্পর্ক কী? একটু খোলসা করে বলা যাক।

Advertisement

নতুন ফোন কেনার আগে ফোনের সুরক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর রাখেন বেশির ভাগ ক্রেতাই। আজকাল ফোনে থাকা ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত করতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার যুক্ত ফোন কেনার দিকেও ঝুঁকছেন সচেতন ক্রেতারা। আবার এই ‘সুরক্ষিত’ ফোন দিয়েই তাঁরা তুলছেন ভিক্ট্রি সাইন দেখানো সেলফি। এনআইআই-র উচ্চ পদস্থ আধিকারিক ইসাও একিজেন জানাচ্ছেন, ‘‘ভিক্ট্রি চিহ্নের সেলফিতে আঙুলের ছাপ পরিষ্কার বোঝা যায়। ফলে হ্যাকাররা খুব সহজেই ছবি থেকে পেয়ে যাচ্ছে ব্যবহারকারীর আঙুলের ছাপ। আবার এই ফিঙ্গারপ্রিন্টই ব্যবহৃত হয়েছে ফোনকে সুরক্ষিত করতে। শুধু তাই নয়, অনেকে ফোনে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের অ্যাকসেসও করেন আঙুলের ছাপ দিয়ে। ফলে খুব সহজেই অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যাচ্ছে ফোনে রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য।’’

আরও পড়ুন: আপডেট করলেই হোয়াটসঅ্যাপের আড্ডা জমে যাবে, কেন? জেনে নিন

Advertisement

হ্যাকারদের তৈরি এই নকল ফিঙ্গারপ্রিন্ট থেকেই বাড়ছে বিপদ

জাপানের একটি প্রথম শ্রেণির সংবাদপত্রে সাম্প্রতিক দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইসাও। বলেন, ‘‘অনেকেই এই চিহ্ন সম্বলিত নিজস্বী তুলে আপলোড করে দিচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। হ্যাকাররা খুব সহজেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ওই নির্দিষ্ট ব্যক্তির আঙুলের ছাপ পেয়ে যাচ্ছে।’’

ইসাওয়ের মতে, আজকাল বেশির ভাগ ফোনেই থাকে অত্যন্ত উন্নতমানের উচ্চ রেজলিউশনযুক্ত ক্যামেরা। ফলে নয় ফুট পর্যন্ত দুরত্ব পর্যন্ত আঙুলের ছাপ বোঝা যায় স্পষ্ট। ফলে নকল ফিঙ্গারপ্রিন্ট তৈরি করতে বেশি বেগ পেতে হয় না দুষ্কৃতীদের। তবে ইসাও জানাচ্ছেন, দোষ শুধু মাত্র ভিক্ট্রি চিহ্নে নয়, থাম্বস আপ বা ক্যামেরার সামনে অন্য কোনওভাবে আঙুল দেখালেও একই বিপদ।

জাপানের একটি জনপ্রিয় টিভি ক্রাইম শো সিএসআই-তে এই ফিঙ্গার প্রিন্ট কপি করার প্রসঙ্গ আসে কিছু দিন আগে। তার পর থেকেই এ নিয়ে তুমুল চর্চা শুরু হয় সে দেশে। তবে এনআইআই-এর মতে ফিঙ্গার প্রিন্ট নকল করার ব্যাপারটি নতুন কিছু নয়। ২০১৪-র নভেম্বরে জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ভন দের লয়েন-এর আঙুলের ছাপ হুবহু নকল করেছিল হ্যাকাররা। এক আততায়ীর ফোন আনলক করার জন্য মিশিগান পুলিশও তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নকল করেছিল।

বহু দিন ধরেই নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের দাবি ছিল, ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাসওয়ার্ডের থেকে অনেকবেশি সুরক্ষিত। কিন্তু জাপানি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের নয়া আবিষ্কারে ধাক্কা খেল সেই বিশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন