Science News

ওডিশায় মিলল পৃথিবার প্রাচীনতম খনিজ

পৃথিবীর বয়স প্রায় ৪৬০ কোটি বছর। আর যে-আগ্নেয় শিলার মধ্যে পৃথিবীর প্রাচীনতম খনিজ ‘জ়ারকন’-এর খোঁজ মিলেছে, তার বয়স প্রায় ৪২৪ কোটি বছর! এবং ওই আগ্নেয় শিলা রয়েছে পূর্ব ভারতের ও়ডিশায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ০৩:২০
Share:

পৃথিবীর বয়স প্রায় ৪৬০ কোটি বছর। আর যে-আগ্নেয় শিলার মধ্যে পৃথিবীর প্রাচীনতম খনিজ ‘জ়ারকন’-এর খোঁজ মিলেছে, তার বয়স প্রায় ৪২৪ কোটি বছর! এবং ওই আগ্নেয় শিলা রয়েছে পূর্ব ভারতের ওডিশায়।

Advertisement

প্রায় সাড়ে তিন দশক আগেই তার হদিস পেয়েছিলেন এক দল বাঙালি ভূতত্ত্ববিদ। কিন্তু বিলেতের বিজ্ঞানীদের বিরোধিতায় সেই তত্ত্ব জোরালো হয়নি। এ বার সেই পুরনো তত্ত্বকেই আরও জোরালো ভাবে তুলে ধরলেন দুই বাঙালি ভূবিজ্ঞানী। ‘নেচার’ পত্রিকার প্রবন্ধে তাঁরা জানালেন, জ়ারকন-সমৃদ্ধ ওডিশার ওই আগ্নেয় শিলার অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ বিশ্বে জলের আবির্ভাবের ইতিহাসে নতুন তথ্য তুলে ধরতে পারে।

এই গবেষণার অন্যতম বিজ্ঞানী, মালয়েশিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্বের শিক্ষক রজত মজুমদার জানাচ্ছেন, সব থেকে পুরনো জ়ারকন মিলেছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায়। কিন্তু সেটি আগ্নেয় শিলা নয়। ওডিশার চম্পুয়ায় পাওয়া জ়ারকন রয়েছে গ্রানাইট আগ্নেয় শিলার মধ্যে। সে-দিক থেকে এই শিলাও প্রাচীনতম। এই খনিজ তৈরি হয়েছে লাভা থেকে।

Advertisement

১৯৮১-তে তৎকালীন প্রেসিডেন্সি কলেজের ভূতত্ত্বের দুই শিক্ষক আশিসরঞ্জন বসু ও অজিতকুমার সাহা পূর্ব ভারতের এই আগ্নেয় পাথরের বয়স ৩৮০ কোটি বছর বলে দাবি করে ‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। কিন্তু অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল বিজ্ঞানী সেই দাবির বিরোধিতা করে জানান, বাঙালি গবেষকদের হিসেবে ভুল রয়েছে। ওই আগ্নেয় পাথর ৩৩০ কোটি বছরের পুরনো। সেই দাবিকে নস্যাৎ করতে পারেননি বাঙালিরা। ১৯৯৫-এ ফের একটি আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্রে অজিতবাবু এবং আরও কিছু ভারতীয় বিজ্ঞানী দাবি করেন, পাথরটি ৩৫০ কোটি বছরের পুরনো।

রজতবাবু বলছেন, ‘‘কলেজে পড়ার সময় থেকেই এই পাথর নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। পরবর্তী কালে আশুতোষ কলেজ এবং ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে প়ড়ানোর সময়েও এই নিয়ে সবিস্তার গবেষণা চালানোর চেষ্টা করেছিলাম। সেই সময়েই আমার ছাত্রী ত্রিস্রোতা চৌধুরীর সঙ্গে পরিচয়।’’ ত্রিস্রোতাই ‘নেচার’-এ প্রকাশিত প্রবন্ধের মূল লেখিকা। রয়েছেন এক চিনা বিজ্ঞানী, ইউশেং ওয়ান। রজতবাবু জানান, এই পাথর বিশ্লেষণ করার জন্য দরকার ‘সেন্সিটিভ হাই রেজলিউশন আয়ন মাইক্রোস্কোপ’। সেই যন্ত্র এ দেশে নেই। বেজিংয়ে ওই চিনা গবেষকের সঙ্গে তিনি এই বিষয়ে আলোচনা করেন এবং তাঁকে গবেষণায় যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেন। চিনা প্রতিষ্ঠানের সাহায্যেই গবেষণা সম্পূর্ণ হয়েছে।

এই বাঙালি গবেষকদের আক্ষেপ, ভূতত্ত্বের গবেষণায় খুব বেশি সরকারি সাহায্য মেলে না। সরকার তৎপর হলে অনেক নতুন তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে। প্রাচীনতম পাথর আবিষ্কারের পরে ছবিটা বদলাবে কি?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন