প্রথমে ভাগীরথীর ঘাট পেরিয়ে কাটোয়ায় ঢোকা
দিব্যি ভাগীরথীতে ডুব দিয়ে উঠে মাথাটা তুলেছেন আমিনা বিবি। চোখ খুলেই জু়ড়লেন চিল চিৎকার। আশপাশে ঘাটে আড্ডা দেওয়া লোকজন ঘুরে তাকাতেই দেখা গেল, জল থেকে উঠে আসছে জলজ্যান্ত হাতি।
মুহূর্তে ঘাটে শুরু হল হুটোপাটি, ছুটোছুটি। হাতিটির অবশ্য হেলদোল নেই তাতে। দিব্যি ঘাটের সিঁড়ি বেয়ে উঠে রাস্তায় নেমে পড়ল সে। বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ কাটোয়ার হরিসভাপাড়ার ঘাটে দেখা গেল এমনই দৃশ্য। তারপর ঘণ্টা দেড়েক ধরে কখনও স্টেশন চত্বর, কখনও বাজার, কখনও বড় রাস্তায় হাঁটতে দেখা গেল হাতিটিকে। ধান, আলুর বস্তা টেনে, শশার ঝুড়ি উল্টে তার চলন দেখতে রীতিমতো ভিড় জমে গেল রাস্তায়।
হরিসভাপাড়ার ঘাট থেকে থানা রোড ধরে হাতিটি প্রথমে ঢুকে যায় বাজারে। পিছনে কৌতুহলীদের ভিড়। ঝটপট মোবাইল বের করে ছবিও তুলতে শুরু করেন অনেকে। তারপরে লেনিন সরণী ধরে কাছাড়ি রোড হয়ে হাসপাতালের মুখে পৌঁছে থমকে দাঁড়ায় হাতিটি। পাশে আলুর বস্তা দেখেই শুঁড় দিয়ে টেনে নামিয়ে দু’চারটি আলু খায়। ২-৩ মিনিট পরেই আবার হাঁটতে শুরু করে। তবে স্টেশন বাজারের রাস্তায় ফলের দোকানে শশার ঝুড়ি দেখে আবারও ব্রেক কষে যাত্রায়। ঝুড়ি উল্টে শশার দিকে মুখে বাড়াতেই পালায় দোকানি। মাঝে ধানের বস্তাতেও মুখ দেয়। তারপরে রেললাইন পেরিয়ে হাঁটা দেয় স্টেশনের দিকে। তবে কিছুটা গিয়েই পথ বদলে ফেলে।
লেভেল ক্রশিং পেরিয়ে বাসস্ট্যান্ড পিছনে ফেলে বর্ধমান রোড ধরে। উৎসাহীদের ভিড় ততক্ষণে মাত্রা ছাড়িয়েছে। এসে গিয়েছে পুলিশ, বন দফতরের কর্মীরাও। কাটোয়ার নন্দিতা বসু, সুরজিৎ দাসেরা বলেন, ‘‘জলজ্যান্ত একটা হাতিকে এ ভাবে দেখতে পাব ভাবিনি। হাতিটা বেশ শান্ত ছিল। খুব ভাল করে দেখেছি।’’
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া থেকে বেরিয়ে হাতিটি জাজিগ্রাম, শ্রীখণ্ড, মঙ্গলকোট হয়ে আউশগ্রামের দিকে গিয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে মশাল জ্বালিয়ে হুলাপার্টি সেটিকে তাড়া করে নিয়ে গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।