মা এমিলিয়ার সঙ্গে সান্টিনো
এমিলিয়া বাননা। আর্জেন্তিনার এক পুলিশ কর্মী। সমস্ত বৈজ্ঞানিক যুক্তিকে মিথ্যে প্রমাণ করে আপাতত চিকিত্সক মহলে আলোচনার বিষয় তিনি।
মাস চারেক আগে কর্তব্যরত অবস্থাতে পথ দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন এমিলিয়া। চলে যান কোমায়। তাঁর গর্ভে তখন পাঁচ মাসের সন্তান। আইসিইউইতেই শরীরের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখলেন ছোট্ট প্রাণটিকে। সঠিক সময়ে জন্মও দিলেন সেই সন্তানের। এবং সেই সন্তানের স্পর্শেই ধীরে ধীরে কোমা থেকে বেরিয়েও এলেন।
এমনই ‘অদ্ভুত’ ঘটনার সাক্ষী থাকল আর্জেন্তিনার এক দম্পতি। ৩৪ বছরের এমিলিয়া বাননা এবং তাঁর স্বামী ক্রিস্টিয়ান এসপিনডোলা দু’জনেই পুলিশে কর্মরত। গত বছর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে উত্তর-পূর্ব আর্জেন্তিনার পোসাদাস এলাকা দিয়ে গাড়ি করে যাচ্ছিলেন এই দম্পতি। গাড়ি চালাচ্ছিলেন তাঁর স্বামী ক্রিস্টিয়ান। সঙ্গে ছিলেন আরও চার সহকর্মী। এমন সময় হঠাৎই মারাত্মক পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এমিলিয়াদের গাড়িটি। মাথায় চোট পান এমিলিয়া। মস্তিষ্কের ভিতরে রক্ত জমাট বেঁধে যায়।
কী কী কারণে কোমায় যেতে পারে মানুষ?
সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও কোমায় চলে যান এমিলিয়া। চিকিৎসকরা জানান, এমিলিয়া কোমায় চলে গেলেও তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের কোনও ক্ষতি হয়নি। এমনকী তাঁর বৃদ্ধিও স্বাভাবিক ভাবেই হচ্ছে। অবশেষে বড়দিনের কয়েক দিন আগে জন্ম হয় এমিলিয়া-ক্রিস্টিয়ানের ছেলে সান্টিনো-র।
এমিলিয়ার বোন নর্মা জানান, মায়ের স্পর্শ দিতে এর পর থেকে সান্টিনোকে প্রতিদিন এমিলিয়ার কাছে আনা হত। কিছুদিন পর থেকে সেই স্পর্শে সাড়া দিতে থাকেন এমিলিয়াও।
সান্টিনোর জন্মের চার মাস পর কোমা থেকে ফিরে আসেন এমিলিয়া
সান্টিনোর মামা সিজার বলেন, ‘‘একটু একটু করে নড়াচড়া শুরু করছিল এমিলিয়া। অবশেষে গত সপ্তাহে তাঁর জ্ঞান আসে। প্রথম যখন চোখ খুলে ও সান্টিনোকে দেখে তখন ভেবেছিল হয়তো ওঁর কোনও আত্মীয়ের ছেলে হয়েছে। তখনই আমরা সুখবরটা এমিলিয়াকে জানাই।’’
আরও পড়ুন: চিকিত্সকদের অবাক করে দুই যোনি নিয়েই মা হতে চলেছেন ক্রিস্টা!
কোমা-র কিছু সাধারণ লক্ষণ—
• বন্ধ চোখ
• উজ্জ্বল আলোতেও চোখের পাতা না পড়া
• প্রতিবর্ত ক্রিয়া ছাড়া অঙ্গ প্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক ক্রিয়া বন্ধ থাকা
• প্রতিবর্ত ক্রিয়া ছাড়া ব্যথা বেদনার অনুভূতি না থাকা
• অনিয়মিত শ্বাসক্রিয়া
কী করে সম্ভব হল এমন ঘটনা? নিউরোসার্জেন মার্সিলো ফেরেরিয়া বলেন, ‘‘এমিলিয়া সমস্ত বৈজ্ঞানিক যুক্তিকে মিথ্যে প্রমাণ করেছে। যা হয়েছে সেটা মিরাক্যাল ছাড়া আর কিছুই নয়।’’