সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই ইটিং ডিজঅর্ডারের ভয়াবহ একটি দিক।
কখনও স্লিম অ্যান্ড ট্রিম জিরো ফিগারের স্বপ্ন, তো কখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় পিকচার পারফেক্ট লাইফ তুলে ধরার তাগিদে ইটিং ডিজঅর্ডার এখন খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সৌন্দর্য ধরে রাখার দায়বদ্ধতায় মহিলারাই শিকার হয়ে থাকেন মহিলারা। সম্প্রতি বিবাহিত দম্পতিদের নিয়ে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই ইটিং ডিজঅর্ডারের ভয়াবহ একটি দিক। গবেষণা বলছে, যে মহিলাদের স্বামীরা হ্যান্ডসাম তাঁদের মধ্যে ইটিং ডিজঅর্ডারে ভোগার প্রবণতা বেশি।
আরও পড়ুন: মেকআপ থেকে সাবধান, হতে পারে কিডনির সমস্যা থেকে ক্যানসার পর্যন্ত
এই সমীক্ষা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হলেও ২০১৭ সালে এসেও ভারতীয় সংবাদপত্রে বা ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটের দিকে তাকালেও এর কারণটা যথেষ্টই স্পষ্ট। পাত্রীর তালিকায় বেশ মোটা অক্ষরেই লেখা থাকে প্রকৃত সুন্দরীর চাহিদা। ফলে সমাজের চোখে নিজেকে সুন্দরী, তন্বী হিসেবে প্রমাণ করার যে চাপিয়ে দেওয়া বাধ্যবাধকতা সেটা তারাও স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নেয়। ফলে স্বামী বেশি সুন্দর বা হ্যান্ডসাম হলে ভিতরে ভিতরে হীনমন্যতায় ভোগার প্রবণতাও তৈরি হয় এর ফল হিসেবেই। তাই হ্যান্ডসাম স্বামীর পাশে নিজেদের মানানসই করে তুলতে ইটিং ডিজঅর্ডারের মতো মানসিক সমস্যায় ভুগতে থাকে তাঁরা। এই সমীক্ষা কিন্তু বলছে, পুরুষদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা একেবারেই দেখা যায় না। অর্থাত্, স্ত্রী অধিক সুন্দরী হলেও পুরুষদের মধ্যে এই ধরনের কোনও সমস্যায় ভোগার প্রবণতা তৈরি হয় না। পুরুষদের ক্ষেত্রে যে সমাজের সেই চাপিয়ে দেওয়া দায়বদ্ধতা কাজ করে না সেই প্রমাণই উঠে এসেছে এই গবেষণার মুখ্য গবেষক তানিয়া রেনল্ডসের কথায়।
সমীক্ষার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের ২০-৩০ বছর বয়সী ১১৩ জন সদ্যবিবাহিত দম্পতিকে বেছে নেন তানিয়া নেতৃত্বাধীন গবেষকদের দুটি দল। প্রথম দলের গবেষণার বিষয় ছিল সুন্দর মুখ, দ্বিতীয় দল গবেষণা ছিল দেহ সৌষ্ঠবের সৌন্দর্য নিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার ইটিং ডিজঅর্ডার ভিক্টোরিয়া অনুযায়ী বিঞ্জ ইটিং, সেলফ ইনডিউসিং ভমিটিং, অবসেসিভ ক্যালোরি কাউন্টিং, মিসইউজিং ল্যাক্সেটিভ এগুলো সবই অ্যাবনর্ম্যাল ইটিংয়ের মধ্যে পড়ে। এই ডিজঅর্ডারড ইটিং যখন ঘন ঘন দেখা যায় এবং তার নেগেটিভ প্রভাব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর পড়ে তখন বলা যেতে পারে কেউ ইটিং ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হয়েছেন।
কী ভাবে এই সমস্যার সমাধান হবে?
রেনল্ডস বলেন, অধিকাংশ সম্পর্কের ক্ষেত্রেই মহিলারা নিজেকে গুরুত্ব না দিয়ে সঙ্গীকে বেশি গুরুত্ব দেন। সম্পর্কে নিজেদের গুরুত্ব বুঝলে, নিজেদের গুরুত্ব দিলে তবেই এই সমস্যা কাটানো সম্ভব। একই ভাবে, স্বামীদের কাছ থেকে ‘তুমি খুব সন্দর’, ‘তোমার ফিগার সুন্দর’ এই কথাগুলো মহিলাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে। অনেক সময়ই এই কথাগুলো দিয়েই তাঁরা নিজেদের সৌন্দর্যের পরিমাপ করেন। তাই স্বামীদেরও উচিত তাঁদের গুরুত্ব দিয়ে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করা।