নারী শরীর নিয়ে জন্মালেও জরায়ুটাই অনুপস্থিত ছিল তাঁর শরীরে। এ ভাবেই কেটে গিয়েছিল জীবনের ২১টা বছর। শৈশব থেকে কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন জরায়ু ছাড়াই। কিন্তু মা হওয়ার ইচ্ছা থাকে সব মেয়েদেরই। নিজের মেয়ের স্বপ্নপূরণ করতে তাই নিজের জরায়ুটাই মেয়েকে দিয়ে দিলেন মা। সেই সঙ্গেই লেখা হয়ে গেল ইতিহাস। ভারতের প্রথম সফল জরায়ু প্রতিস্থাপনের সাক্ষী হয়ে থাকল পুণে।
মঙ্গলবার চিকিত্সক শৈলেশ পুনটামবেকরের নেতৃত্বে ১২ জন চিকিত্সকের একটি দল এই অস্ত্রোপচার করেন। দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে চলে জরায়ু প্রতিস্থাপনের জটিল প্রক্রিয়া। অস্ত্রোপচারের পর পুন্টামবেকর বলেন, “জরায়ু ছাড়াই জন্ম হয়েছিল ওই মহিলার। উনি মা হতে চাইছিলেন। কিন্তু সারোগেসি বা দত্তক নেওয়া পছন্দ ছিল না। তাই জরায়ু প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওঁর মা সুস্থ দাতা হওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে বেশি দেরি হয়নি।”
২০১৩ সালে সুইডেনে প্রথম সফল জরায়ু প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচার করা হয়। মোট ৯ জন মহিলার জরায়ু প্রতিস্থাপন করা হয়। সেই প্রতিস্থাপিত জরায়ুর মাধ্যমে ৪ শিশুর জন্ম হয়। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লেভল্যান্ড ক্লিনিকে শুরু হয় গবেষণা। মোট ১০টি জরায়ু প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচার করা হয়। যদিও, প্রথম যে অস্ত্রোপচারটি করা হয়েছিল জটিলতার কারণে পরে সেই প্রতিস্থাপিত জরায়ু সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হন চিকিত্সকরা।
আরও পড়ুন: থ্রি-ডি প্রিন্টেড ডিম্বাশয়ের সাহায্যে এ বার ক্যানসার আক্রান্তরাও মা হতে পারবেন
জরায়ু প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক ভাবে সন্তান ধারণে অক্ষম মহিলাদের আশার আলো দেখাবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। যদিও, এই প্রক্রিয়ার সব রকম ঝুঁকি ও জটিলতা সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নন তাঁরা।