কত রকম শারীরিক ত্রুটি নিয়েই তো জন্মায় মানুষ!
সেই সব ত্রুটি নিয়েই তারা বেঁচে থাকতে পারেন সারা জীবন। যদি ওই ত্রুটির জন্য না কখনও বড় কোনও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বা ঘটে যায় বড়সড় কোনও মিরাকল। অনেক ক্ষেত্রে হয়তো অজানাই থেকে যায় সেই সব ত্রুটির কথা। যেমন ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত ক্রিস্টা স্কোয়াব জানতেনই না তাঁর শরীরে রয়েছে দু’টি যোনি!
মাত্র ১২ বছর বয়সে ইউটেরাস ডিডেলফিস ধরা পড়ে ক্রিস্টার। এই অবস্থায় দু’টি সার্ভিক্স ও দু’টি গর্ভ অর্থাত্ জরায়ু থাকে। সেই সময়েই চিকিত্সকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, কোনও দিন মা হতে পারবেন না ক্রিস্টা। ২০ বছর বয়সে ক্রিস্টা প্রেমে পড়েন কোর্টনির। বিয়েও করেন। সেই সময়ই ক্রিস্টা জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি কোনও দিন মা হতে পারবেন না। তাই কোনও দিনই যৌন মিলনের সময় কোনও রকম কন্ট্রাসেপটিভের সাহায্য নেননি তাঁরা। কিন্তু প্রথম থেকেই সেক্স কেমন যেন অস্বস্তিকর ছিল ক্রিস্টার কাছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি যেন একটু বেশিই স্পর্শকাতর ছিলাম। ব্যথাও লাগত। ভাবতাম সব মেয়েদেরই বোধহয় এমন অনুভূতি হয়। তখনও জানতামই না আমার শরীরে পাশাপাশি দু’টি যোনি রয়েছে।’’
ছোট থেকেই নিজেকে সন্তান ধারণে অক্ষম জানলেও কোনও দিনই হাল ছাড়তে রাজি ছিলেন না লড়াকু ক্রিস্টা। সন্তানের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন ক্রিস্টা ও তাঁর স্বামী। বার বার চিকিত্সকের কাছে গিয়েছেন, গত ১০ বছরে অন্তত হাজার বার প্রেগন্যান্সি পরীক্ষার ফল এসেছে নেগেটিভ। অবশেষে নিরাশ হয়ে আইভিএফ-এর সাহায্য নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন তাঁরা। সেই সময়ই ঘটল মিরাকল।
ক্রিস্টার কথায়, ‘‘গত ডিসেম্বরে হঠাত্ই আমার ওজন বাড়তে শুরু করে। জানতাম কোনও আশা নেই। তবুও গিয়েছিলাম পরীক্ষা করাতে। পজিটিভ রেজাল্ট দেখে চোখের জল বাধ মানেনি। অবশেষে আমি মা হতে চলেছি।’’ এখন ক্রিস্টা ৫ মাসের গর্ভাবস্থায় রয়েছেন। তাঁর বাঁ দিকের গর্ভে বেড়ে উঠছে পুত্রসন্তান। আশ্চর্যের বিষয় ক্রিস্টার বাঁ দিকের ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু উত্পাদন হয় না। তাঁর ডান দিকের ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু উত্পন্ন হয়। বাঁ দিকের ডিম্বাশয়ের সঙ্গে ডান দিকের ডিম্বাশয়ের কোনও যোগ নেই। অথচ তাঁর সন্তান বেড়ে উঠছে বাঁ দিকের জরায়ুতে।
আরও পড়ুন: মা হতে চাইছেন? আপনাকে সাহায্য করতে পারে এই অ্যাপগুলো
ইউটেরাইন ডিডেলফিসের সমস্যা থাকলে সি-সেকশনের সাহায্যেই প্রসব করানো হয়ে থাকে। কিন্তু ৩২ বছরের ক্রিস্টা এখানেও হাল ছাড়তে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘শিশুটি বাঁ দিকের গর্ভাশয়ে বেড়ে উঠছে। তাই বাঁ দিকের যোনির দিকেই নেমে আসবে ওর মাথা। চিকিত্সকরা সি-সেকশন ডেলিভারির কথাই ভাবছেন। কিন্তু আমি চাই স্বাভাবিক ভাবে সন্তানের জন্ম দিতে।’’