ম্যাচের সেরা ভুবনেশ্বর কুমার। ছবি: এএফপি।
প্রথম টেস্ট
ভারত ১৭২ ও ৩৫২/৮ (ইনিংস ঘোষণা)
শ্রীলঙ্কা ২৯৪ ও ৭৫/৭ (খেলা শেষ)
দুরন্ত লড়াই। প্রথমে প্রকৃতির সঙ্গে, পরের প্রতিপক্ষ অবশ্যই শ্রীলঙ্কা।
সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দু’দিন কোনও রকমে বল গড়িয়েছিল ইডেনে। মেঘের ভ্রূকূটি সামলে কিছু ক্ষণের খেলা। দু’দিনই পুরো ওভার খেলা করা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টির জন্য শুরু হয়েছে দেড়িতে আবার খারাপ আলোর জন্য শেষ হয়ে গিয়েছে সময়ের আগে। সেখান থেকেই শেষ মিনিট পর্যন্ত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তাই বৃষ্টিভেজা ইডেন উদ্যানে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। আর সেখানেই দুরন্ত হয়ে উঠেছিলেন শ্রীলঙ্কার লাকমল।
উইকেট পেয়ে উল্লাস মহম্মদ শামির। ছবি: এএফপি।
বলে বলে ফেরালেন লোকেশ রাহুল (০), শিখর ধবন (৮), বিরাট কোহালি (০), ভুবনেশ্বর কুমার (১৩)। কাউকে টিকতে দিলেন না ক্রিজে। সেখানেই শেষ হয়ে যায় ভারতের প্রথম ইনিংসের খেলা। তিন নম্বরে নেমে চেতেশ্বর পূজারার হাফ সেঞ্চুরি ছাড়া বলার মতো এই ইনিংসে আর কিছুই ছিল না। মাত্র ৫৯.৩ ওভারে ১৭২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল ভারতের প্রথম ইনিংস। ভেজা পিচে দারুণ সফল লঙ্কান বোলাররা।
আরও পড়ুন
ক্যানসারে প্রয়াত প্রাক্তন উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন নোভোতনা
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ভারতকে সহজেই ছাপিয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। দুই ওপেনার থিরামানে ও ম্যাথুসের ব্যাট থেকে জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার ভিত। ৬৭ রানের ইনিংস খেলেন পেরেরা। কিন্তু শ্রীলঙ্কার হয়ে যদি লাকমল প্রথম ইনিংসে দুরন্ত হয়ে ওঠেন তা হলে ভারতের হয়ে সেই দায়িত্ব পালন করেন দু’জন। চারটি করে উইকেট নেন ভুবনেশ্বর কুমার ও মহম্মদ শামি। জোড়া উইকেট উমেশ যাদবের।
আরও পড়ুন
জামশেদপুরের হয়ে খেলতে পেরে নস্টালজিক সুব্রত
দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু ভারতের। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি মিস করলেন শিখর ধবন। লোকেশ রাহুল ও ধবনের ব্যাটে চোখে চোখ রেখেই শুরু করেছিল ভারত। লোকেশের ব্যাট থেকে আসে ৭৯ রান। ধবনকে ৯৪ রানে ফেরান শানাকা। তিন নম্বরে নেমে পূজারা ২২ রানে ফিরে গেলে হাল ধরেন স্বয়ং অধিনায়ক বিরাট কোহালি। প্রথম ইনিংসে এই বিরাটের ব্যাট শূন্যহাতে ফিরিয়েছিল ইডেনের দর্শকদের। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে সুদে-আসলে তা পূরণ করে দিলেন। শেষ দিন ১০৪ রানে অপরাজিত থাকলেন তিনি। সেই চেনা ব্যাটিং। তাঁর পর আর কেউই টিকতে পারেননি ক্রিকেট। সর্বোচ্চ শামির ১২। শ্রীলঙ্কার হয়ে তিনটি করে উইকেট নিলেন লাকমল ও শানাকা।
সেঞ্চুরির পরে বিরাট কোহালি। ছবি: এএফপি।
সেঞ্চুরি করেই বড় সিদ্ধান্তটি নিয়ে ফেললেন বিরাট কোহালি। ৩৫২/৮ এ ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেন তিনি। হাতে তখন নিয়ম মেনে বেশ খানিকটা সময় থাকলেও খারাপ আলো যে ভাবে প্রতি দিন ভুগিয়েছে সেই ভাবেই শেষ দিনও খেলা শেষ করতে বাধ্য হল আম্পায়ররা। কিন্তু শেষ বেলায় খেলা জমিয়ে দিলেন একাই ভুবনেশ্বর কুমার। এ বারও নিলেন চার উইকেট। কিন্তু শেষ করা গেল না। ৭৫/৭ এ মাত্র ২৬ ওভার ব্যাট করেই থামল শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস। অমীমাংসিত ম্যাচ শেষে কিন্তু বিরাটের মুখে চওড়া হাসি। নিজের ব্যাটে সেঞ্চুরি তো এলই সঙ্গে প্রতিপক্ষকে শেষ বেলায় চাপে রাখার খেলাটাও খেলে ফেললেন তিনি। শুধু ফল হল না।