ক্ষিদ্দার মধ্যে টুকরো টুকরো নিজেকে খুঁজে পেয়েছি

বিহার, এরিয়ান, বাংলা, ইস্টার্ন রেল, রেলওয়েজ, ভারত ও মোহনবাগানের হয়ে তাঁর মিলিত গোল সংখ্যা একশোর অনেক বেশি। প্রদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়-এর জীবনের গোল সংখ্যা অবশ্য বৃহস্পতিবার দাঁড়াচ্ছে ৮০। জন্মদিনের আগে সল্টলেকের বাড়িতে বসে এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর দিলেন পিকে, যা শুনে গৌতম ভট্টাচার্য-এর মনে হল আগে কখনও বলেননি।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ১০:১৫
Share:

প্রশ্ন: সবার আগে একটা শপথ আছে।

Advertisement

পিকে: কী শপথ?

প্র: যাহা বলিব সত্য বলিব। সত্য ব্যতিরেক মিথ্যা বলিব না।

Advertisement

পিকে: আমি যাহা বলিব সত্য বলিব। সত্য ব্যতিরেক মিথ্যা বলিব না।

প্র: একটু আগে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি হচ্ছিল। জানতে চাইছি, আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় বাজ পড়া কোনটা?

পিকে: অবশ্যই আমার গিন্নির চলে যাওয়া। ভাবিনি আরতি এত তাড়াতাড়ি চলে যেতে পারে। বাবার চলে যাওয়াটাও খুব মর্মান্তিক। উনি যখন মরণাপন্ন অসুস্থ, তখন আমার অলিম্পিক্স খেলতে যাওয়া। আমি যাব কি যাব না, খুব দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিলাম। বাবা বললেন, তুমি যাও। আমি তোমার জন্য বেঁচে থাকব। যখন ফিরে এলাম, তখন বেঁচে ছিলেন, কিন্তু ওঁর থ্রোটটা পুরো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেটা সামনে থেকে দেখা আরও মর্মান্তিক।

প্র: জন্মদিনে স্ত্রী আর বাবার সঙ্গে কথা বলানোর ব্যবস্থা করানো গেলে কী বলতেন?

পিকে: সবার আগে বলতাম, তোমরা কেমন আছো? তোমরা কি কোনও কষ্টে আছো? তোমরা যদি কষ্টে আছো শুনি আমার খুব খারাপ লাগবে। আমাকে বলে দাও, আমি কি ঠিক কাজ করছি? আমি কি তোমাদের মনোমত কাজ করে খুশি করতে পারছি? নাকি তোমরা মনে করো কোথাও কারেকশন দরকার? জানতে পারলে সাধ্যমতো আমি সেটা ঠিক করে তোমাদের খুশি করার চেষ্টা করব।

প্র: ৮০ বছরের জন্মদিনের রেজলিউশন কী?

পিকে: আমি যত দিন বেঁচে থাকব, সমাজকে সেবা করে যেতে চাই।

প্র: মৃত্যুভয় হয় না?

পিকে: সেরিব্রাল অ্যাটাক হল ২০০৫-এ। স্ত্রী চলে গেলেন তার দু’বছর আগে। কত ঝড়ঝাপটার মধ্যে দিয়ে গেছি। কিন্তু মৃত্যুভয় কখনও হয়নি। আজও আমার মৃত্যুচিন্তা হয় না। আমার যাবতীয় মনোযোগ জীবনে। জীবনে সৎপথে বেঁচে থাকতে চাই। ঠিক স্পিরিটের সঙ্গে বেঁচে থাকতে চাই। পরিশ্রমের সঙ্গে বেঁচে থাকতে চাই।

প্র: বিবেকানন্দ বলেছিলেন, গীতা পাঠের চেয়ে ফুটবল খেললে তোমরা ঈশ্বরের অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী হইবে। অথচ এখন আপনি রোজ সকালে নাকি বিদেশি ফুটবলের বই বা সিডি না দেখে নিয়ম করে বিবেকানন্দ পড়েন। কেন?

পিকে: এটা একটা বদল আমার মধ্যে হয়েছে। একটা সময় অবধি বিশ্বাস করতাম, কর্মফল আমার নিজের হাতে। আমার ভাগ্যে যা ঘটবে সেটা আমিই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আরতি চলে যাওয়ার পর বুঝলাম, আমার সব চেষ্টাতেও জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্রোত বদলায় না। তার পর থেকে একটা আধ্যাত্মিক আরাধনার মাধ্যমে শক্তি খুঁজি। জীবনে বেঁচে থাকার উৎসাহ খুঁজি। সত্যি এই প্রবণতাটা আগে আমার মধ্যে ছিল না।

প্র: ব্যক্তিগত জীবনে বাজ পড়া শুনলাম। পেশাদার জীবনে কী কী বাজ পড়েছে?

পিকে: সবচেয়ে কঠিন বাজ পড়েছে বিরাশির এশিয়ান গেমসে সৌদি আরবের কাছে হেরে যাওয়া। কোয়ার্টার ফাইনালটায় অবিশ্বাস্য ভাবে হেরে গেলাম। ভাস্কর বলটা ক্লিয়ার করতে গিয়ে ওদের পায়ে চলে গেল। হেরে যাওয়ার পর তিন দিন খাইনি। সোনার মেডেল পাব ভেবেছিলাম। কোথা থেকে কোথায় ছিটকে গেলাম। শ্মশানের মতো হয়ে গিয়েছিল আমাদের ড্রেসিংরুম। ডেটমার, ফিফার জার্মান টেকনিক্যাল ডিরেক্টর, সে-ও কাঁদছিল।

প্র: সেই সময় সবচেয়ে বড় বিতর্ক ছিল সুদীপ চট্টোপাধ্যায়কে বসিয়ে আপনার স্টপারে পারমারকে খেলানো। আজও ফুটবল মহল বলে, আপনি কর্তাদের চাপে নতিস্বীকার করেছিলেন।

পিকে: (কিছুক্ষণ চুপ) কোনও উপায় ছিল না। ফেডারেশন ক্লিয়ার কাট বলে দিয়েছিল, পারমারকে খেলাও।

প্র: আপনি পিকে। সে সময় ভারতীয় ফুটবলের সুপারস্টার। কর্তাদের কথা শুনেছিলেন কেন?

পিকে: উপায় ছিল না। দে ওয়ার ইনসিস্টিং টু সাচ অ্যান এক্সটেন্ট আই হ্যাড টু কনসিড।

প্র: বিরাশির এশিয়াডের পরে ক্লাব লেভেলেও আপনার সাফল্য কমে যায়। কারণ কি এশিয়াডে বাজ পড়া?

পিকে: এশিয়াডে হেরে মনটা পুরো ভেঙে গিয়েছিল। সেটাই অবশ্য একমাত্র কারণ নয়। যারা ছিল, তারা বদলে নতুন সেট চলে এল। ওই সেটটার সঙ্গে আমার ভাল ভাবে অ্যাডজাস্টমেন্ট হয়নি।

প্র: কেন?

পিকে: কারণ ক্লাব লেভেলে আমার প্রতি ওদের অখণ্ড বিশ্বাসটা আর ছিল না। আগের যে ব্যাচটা পেয়েছিলাম। ধরো হাবিব-সুধীর-শ্যাম-ভৌমিক-সুরজিৎ-অশোক-প্রসুন-গৌতম-সমরেশ, এরা আমাকে কোচ হিসেবে দেখেনি। গুরু হিসেবে মানত। এরা কোথাও বিশ্বাস করত, আমি যদি বলি সেটা ওদের ভালর জন্যই বলব। পরের ব্যাচের মধ্যে সেই আনকন্ডিশনাল লয়ালটিটা আমি আর পাইনি।

প্র: অনেকেই মনে করেন, আপনার ভোকাল টনিকের স্ক্রিপ্টটা সেকেলে হয়ে গিয়েছিল। ওই যে জার্সি তোমার মা। বা দেশ তোমার মা। নতুন জমানার ফুটবলাররা এগুলো শুনে আর উদ্দীপ্ত হয়নি।

পিকে: আমি কী করব? আমি তো সত্যিই দেশের কনসেপ্টে বিশ্বাস করি। পরাধীন ভারতে জন্মেছিলাম। ছোটবেলা থেকে অসম্ভব জাতীয় চেতনার সঙ্গে বড় হয়েছি। দেশকে মা বলে জেনেছি। ওটাই আমার বরাবরের টেমপ্লেট। চে়ঞ্জ করব কী করে?

প্র: আজকের দিনে পেশাদারি দুনিয়ায় ক্লাব সবার আগে। দেশ নয়। এখন হলে কী করে কোচিং করতেন?

পিকে: আমি এগ্রি করি পুরনো ধ্যানধারণা ঝেড়ে ফেলে নতুন করে ভাবতে হত। আমি জানি না ভোকাল টনিক কোথায় গিয়ে দাঁড়াত? হয়তো আমাকে উৎকর্ষের ওপর জোর দিতে হত। বলতে হত, এক্সেলেন্স অ্যাচিভ করো। তবেই তোমার নাম বাড়বে। শ্রদ্ধা পাবে। আরও বেশি রোজগার করবে।

প্র: এশিয়াডের আগে একাশিতে সল্টলেকের জাতীয় শিবির থেকে যখন তারকা ফুটবলাররা ক্লাব খেলার জন্য বেরিয়ে যান। আনন্দবাজার হেডলাইন করেছিল, ‘দেশদ্রোহী’। আপনি একমত ছিলেন ওই হেডলাইনের সঙ্গে?

পিকে: একমত ছিলাম। আমার মনে হয়েছিল, এটা দেশের সঙ্গে বেইমানি করা হচ্ছে।

প্র: শোনা যায়, ক্যাম্প ছাড়ার আগে এক ফুটবলার নাকি বলেছিল ক্ষুদিরাম দেশের জন্য গ্যাস খেয়ে মরেছিল। আমি মরতে পারব না। আজ পঁয়ত্রিশ বছর পর তার নাম বলবেন?

পিকে: নামটা মনে করতে পারছি না। ডায়রিতে লেখা আছে। ওটা এখনও অপ্রকাশিত।

প্র: ডায়রিটা এনে একটু বলুন না। এতগুলো বছর তো চলে গেছে। সে যে বাঙালি, আমরা জানি।

পিকে: (দুঃখিত ভাবে) জন্মদিনের ইন্টারভিউয়ে আমি কারও মনে আঘাত দিতে চাই না। আমি নামটা বললে, আজও একটা লোকের জীবন ছারখার হয়ে যাবে। থাক না। কারও ক্ষতি করে কী লাভ?

প্র: আজ একই ঘটনা হলে ফুটবলারদের ‘দেশদ্রোহী’ বলবেন?

পিকে: না। আজ আর ওদের বেইমান বলতে পারব না। সমাজ বদলে গেছে। সময় বদলে গেছে।

প্র: সেই সময় কি বাড়াবাড়ি হয়েছিল?

পিকে: আমার মনে হয় না। আমি বরাবর আবেগপ্রবণ আর দেশাত্মবোধক সেন্টিমেন্টে বিশ্বাস করি। আমি মনে করি দেশের হয়ে খেলার জন্য এত হিসেবনিকেশ চলে না। এত ক্যালকুলেশন চলে না। আজ বাধ্য হয়ে আমাকে হয়তো বলতে হচ্ছে, সময় বদলে গেছে। কিন্তু সেই সমঝোতাটা করে আমি বিষণ্ণ হয়ে পড়ি যখন দেখি জার্মানি খেলছে! আ হা হা... সাধে কী ওদের এত ভালবাসি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে সেই কত বছর হল। অথচ জার্মানির ফার্স্ট রাউন্ডের ম্যাচ দেখলেও মনে হয়, ওরা বুঝি বল পায়ে বিশ্বযুদ্ধ লড়ছে।

বাষট্টির এশিয়ান গেমস ফাইনালে আমরা জিতেছিলাম সেই দেশাত্মবোধের জন্য। ফাইনালের আগের দিন ডাইরেক্টিভ এল থঙ্গরাজকে খেলাতে হবে। ফাইনাল অবধি যে খেলে এসেছে সেই প্রদ্যোৎ বর্মন নয়। আমরা ফেটে পড়েছিলাম। বলরামের সঙ্গে কথা হওয়ার পর আমি আর চুনী রাত্তির জেগে মিটিং করি যে, এর প্রতিবাদ করতে হবে ভাল খেলে। দেশকে জেতানো ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।

প্র: আপনারা সে বার রুমমেটও ছিলেন। অথচ পিকে-চুনীর মধ্যে এত বছর ধরে ঐতিহাসিক রেষারেষিটা কেন?

পিকে: আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বও ছিল। ও মনে মনে বিশ্বাস করত, আমি মাঠে ওর ক্ষতি করব না। আমারও সেই আস্থা ছিল। তবে ও কখনও কখনও ভাবত, প্রদীপটা বোধহয় আমাকে ছাড়িয়ে এগিয়ে গেল। আমি সেটা কখনও ভাবিনি।

প্র: ভারতবর্ষের গ্রেটেস্ট ফুটবলার কে? আপনি? না চুনী?

পিকে: আমি নিজের কথা কী করে বলি? এ প্রশ্নটা থাক না।

প্র: মানে, আপনাকে বাইরে রাখলে চুনী গ্রেটেস্ট?

পিকে: বলা খুব মুশকিল। জার্নেল আছে। বলরাম আছে। চুনী আছে। কাকে বলি?

প্র: একজন কাউকে বাছুন।

পিকে: তা হলে বলব চুনী নয়, জার্নেল সিংহ। ভারতবর্ষে জার্নেলের মতো পাওয়ারফুল ডিফেন্ডার আমি আর দেখিনি। অরুণ ঘোষ টেকনিক্যালি আরও ভাল ছিল। কিন্তু জার্নেল ছিল ডিফেন্সে একটা প্রাসাদের মতো। আমি খুব সত্যি কথা বলছি। সুব্রত-মনোরঞ্জন যোগ করলেও একটা জার্নেল হবে কি না সন্দেহ। এমন দাপটে খেলত যেন মনে হত, অনুচ্চারে বলছে জান লে লুঙ্গা। আমি দেখেছি কোরিয়া ম্যাচে এমন ভঙ্গিতে বল তাড়া করেছিল যেন জটাধারী শিব। কোরিয়ান প্লেয়ার বল ছেড়ে পালিয়ে যায়। আমার নিজের চোখে দেখা।

প্র: ‘কোনি’তে ক্ষিদ্দার রোলটা করেছিলেন আপনার প্রিয় বন্ধু। নিশ্চয়ই দেখেছেন।

পিকে: অবশ্যই দেখেছি। ক্ষিদ্দার মধ্যে টুকরো টুকরো নিজেকে খুঁজেও পেয়েছি।

প্র: ক্ষিদ্দার প্রিয় লাইন ছিল ‘ফাইট কোনি, ফাইট’। মাঠে প্লেয়ারদের জন্য আপনার সবচেয়ে ফেভারিট লাইন কী ছিল?

পিকে: আমি বলতাম, লড়াই শেষ হয়নি। একটা টিম এগিয়ে থাকলে আত্মতুষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে যেতে পারে। আমি তাই ঊননব্বই মিনিটেও সাইড লাইন থেকে চিৎকার করেছি, লড়াই শেষ হয়নি!

প্র: সেই ঊনআশি সালেও আপনার দিলীপ পালিতকে বসিয়ে রাখা নিয়ে এত বিতর্ক হয়েছিল। এখনকার মিডিয়া অধ্যুষিত সময়ে আপনার ক্লাব কোচিংয়ের পরীক্ষা কি আরও কঠিন হয়ে যেত না?

পিকে: অবশ্যই হত। মিডিয়া তো এখন অফিশিয়ালদেরও স্টার বানিয়ে দিয়েছে। এক এক সময় বোঝা যায় না কারা মাঠে নেমে খেলছে? কারা টিম স্ট্র্যাটেজি ঠিক করছে? আজকের দিন হলে আমার সঙ্গে বোধহয় নিয়মিত গন্ডগোল হত। সেই সময়ও, বিশেষ করে সাফল্যের মুহূর্তে এমন সব বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছি যে, রবীন্দ্রনাথের কবিতার লাইনটা মনে পড়ে গিয়েছে। ‘রথ ভাবে আমি দেব। পথ ভাবে আমি। মুর্তি ভাবে আমি দেব। হাসেন অন্তর্যামী।’

প্র: একটা ধারণা আছে যে, দেশের হয়ে কোচিং করানোর সময় কোথাও মধ্যবিত্ত মনন আপনাকে আক্রান্ত করত। আপনি যেমন ডিফেন্সে একগাদা লোক দাঁড় করিয়ে দিয়ে চাইতেন কম গোলে হারতে।

পিকে: একদম বাজে কথা। সত্তরের এশিয়ান গেমসে আমার কোচিংয়ে ব্রোঞ্জটা এসেছিল। ভাগ্য ভাল থাকলে সে বারই সোনাটা হয়ে যায়। আমি মনে করি যুদ্ধে যেতে হয় নিজের শক্তিসামর্থ চুলচেরা বিশ্লেষণ করে। হা রে রে রে করে তোকে মেরেই ফেলব— সব ডিফেন্স ছেড়ে এগিয়ে যাওয়াটা আহাম্মকী। আজও সেই বিতর্কিত কথাটা আবার বলতে চাই। যে ডাঁটা চচ্চড়ির মশলা দিয়ে ভাল ডাঁটা চচ্চড়ি হয়, বিরিয়ানি হয় না। তোমার দোকানে যথেষ্ট ভাল মাল নেই, তো তুমি বাবা চড়া দামে বিক্রি করবে কী?

প্র: কিন্তু চিরিচ মিলোভান তো ডাঁটা চচ্চড়ি দিয়েই ভাল ডিশ রান্না করতেন। তাঁর আমলে ভারত যথেষ্ট অ্যাটাকিংও খেলেছে।

পিকে: আমি মনে করি না। রেজাল্ট বইটা খুলে ভাল করে দেখে নিও।



প্র: বলা হয়ে থাকে, এই যে মিলোভান প্রতি ম্যাচে নতুন নতুন ক্যাপ্টেন বাছতেন। এটা মাঠের বাইরের একটা অসাধারণ মুভ ছিল। ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে টিমের মধ্যে অন্তর্লীন টেনশনটাই এতে দূর হয়ে যায়।

পিকে: আমি একমত নই। দেশের অধিনায়কত্ব করার জন্য লোকে সারাটা জীবন প্রাণপাত করে। কত সাধনা, কত পরিশ্রম, কত অপেক্ষা, কত প্রতিভা জড়িয়ে থাকে ওই আর্ম ব্যান্ডটার পেছনে। তাকে হরির লুটের মতো বিলিয়ে দেব কেন?

প্র: আপনার কোচিং জীবনে সেরা প্রতিদ্বন্দ্বী তা হলে মিলোভান নন?

পিকে: না। ওটা বলতে হলে অমল দত্তর কথাই বলতে হয়। আমার সবচেয়ে বেশি লড়াই অমলদার সঙ্গেই হয়েছে।

প্র: কোথাও কি হতাশ লাগে যে আপনার বাঙালি ফুটবলার তুলে আনার পরম্পরা জীবদ্দশাতেই হারিয়ে গেল?

পিকে: হতাশ তো খুব কম কথা। গভীর দুঃখিত লাগে যখন ভাবি ফুটবল থেকে বাঙালি হারিয়ে গেছে।

প্র: মানুষ আপনাকে কী ভাবে মনে রাখুক চান?

পিকে: এমন একজন মানুষ হিসেবে যে সবাইকে ভালবাসত। আর সবার ভাল চেয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন