আইপিএলের শুরুতেই ব্যর্থ যুবরাজ। বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই।
দিল্লি ডেয়ারডেভিলস টিমটাকে যত দেখি, তত অবাক লাগে। আইপিএলের এটা নিয়ে আট নম্বর বছরটা চলছে, অথচ টিমটা আজও বুঝে উঠতে পারল না আইপিএলে একটা ম্যাচ জিততে গেলে ঠিক কোন কম্বিনেশনটা দরকার! প্রত্যেক বার দেখি, হারছে আর টিম পাল্টাচ্ছে। পরের বছর দেখি আবার হারছে, আর আবার টিম পুরো পাল্টে ফেলছে। টিমটার কম্বিনেশনের কোনও মাথামুণ্ডু খুঁজে পাই না আমি। না পাই টিমটা সাজানোর কোনও ইচ্ছে। প্রত্যেক বার একটা ভারি নাম নিয়ে আসবে। তার হয় চোট থাকবে, খেলতে পারবে না। আর নইলে তাকে এমন ভাবে ব্যবহার করা হবে যে, সেই তারকার থাকা-না থাকা সমান।
বৃহস্পতিবারের যুবরাজ সিংহকেই ধরুন। কোন যুক্তিতে ওকে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ছ’নম্বরে পাঠানো হয়, হাতে দেওয়া হয় সাত-আটটা ওভার, আমি ঠিক জানি না। বোধহয় দিল্লি টিম ম্যানেজমেন্ট ছাড়া কেউই জানে না। যুবরাজের সঙ্গে যতটুকু যা কথাবার্তা হয়েছে, তাতে মনে হয়েছে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ছ’ওভার না পেরোলে নামতে খুব একটা পছন্দ করে না। আজ তো ছ’ওভারের মধ্যে তিনটে উইকেট চলে গেল। তার পরেও দেখলাম যুবরাজের বদলে কেদার যাদবকে পাঠিয়ে দেওয়া হল। অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হয়। ছোট থেকে জেনে এসেছি টিমের সেরা প্লেয়ারকে সবচেয়ে বেশি ওভার খেলতে দেওয়া হয়। যুবরাজ নামল যখন, তখন তেরো ওভার চলছে। হাস্যকর। তুমি যদি তোমার সেরা ব্যাটসম্যানকে ছ’নম্বরে পাঠাও, অলরাউন্ডার জেনেও বল দেওয়ার প্রয়োজন মনে করো না, তোমার ক্যাপ্টেন যদি আসে সাতে, তা হলে এদের কোটি কোটি টাকা দিয়ে নিলামে কিনেছিলে কী করতে?
আসলে একটা ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচ এবং ক্যাপ্টেন দু’জনেই যদি বিদেশি হয়, টিমের বারোটা বাজবেই। একটা জেপি দুমিনির পক্ষে জানা সম্ভব নয়, ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে কার দাম বেশি— মনোজ তিওয়ারি, না শ্রেয়স আইয়ার? ঠিক তেমন একটা গ্যারি কার্স্টেনও বলতে পারবেন না, ডমিনিক মুথুস্বামী আদতে কতটা ভাল বোলার। আশ্চর্য সব সিদ্ধান্ত। মনোজ বসল, খেলল শ্রেয়স। শামি নেই, বল করছে মুথুস্বামী। অ্যালবি মর্কেলও বা তিন নম্বরে কেন যাবে? অনেকে বলবেন ছেলেটা ৭৩ করেছে। কপাল ভাল থাকলে ম্যাচটা দিল্লিই জিতত। ও-ই জেতাত। কিন্তু তিন নম্বরটা অ্যালবির জায়গা নয়। ওর হাতে যে বড় শট আছে, সেটা সবাই জানে। ওকে পরে রাখা যেত। ওর জায়গায় দুমিনি যেতে পারত। দেড়শো তাড়া করে একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিততে কি সত্যিই এত কালঘাম ছোটানোর দরকার পড়ে? যেখানে তোমার হাতে যুবরাজ, দুমিনিরা আছে? এক রানে হারলে না একশো রানে, সেটা কেউ দেখবে না।
আসল কথা, দিল্লি হেরেছে। এই নিয়ে টানা দশটা ম্যাচ হারল। আসলে ওরা বরাবর একটা সেট প্যাটার্ন নিয়ে খেলতে নামে। সেটা চললে জিতল, নইলে হার। টি-টোয়েন্টিতে ও সব চলে না। জানি না ওরা মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে দেখে আজ কতটা কী শিখল। জাডেজাকে ওপরে ব্যাট করতে পাঠানোর সিদ্ধান্তটা ক্লিক করেনি, কিন্তু ঠিক ছিল। কারণ ওই সময় তাহিরদের লেগ স্পিন সামলাতে একজন বাঁ-হাতিরই দরকার ছিল। আবার মর্কেল বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান বলে জাডেজাকে এক ওভারও বল দিল না ধোনি। সেই ঝুঁকিতেই গেল না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চেন্নাই ১৫০-৭ (ডোয়েন স্মিথ ৩৪, কোল্টার-নাইল ৩-৩০)
দিল্লি ১৪৯-৯ (অ্যালবি মর্কেল ৭৩, নেহরা ৩-২৫)।