‘ওয়ার্নার ঝড় দেখেও বলছি, এগিয়ে বিরাটরাই’

ডেভিড ওয়ার্নার— মন বলছে, রবিবার এই একটা নাম নিয়েই শুধু ভাবতে হবে আরসিবিকে। ফাইনালের দু’দিন আগে কোটলায় যে ওয়ার্নারকে দেখলাম, তার পর তো সানরাইজার্স ব্যাটিংয়ে আর কোনও নাম পাচ্ছি না।

Advertisement

দীপ দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৬ ০৩:৫২
Share:

সানরাইজার্সকে ফাইনালে তোলার লাফ।-বিসিসিআই

ডেভিড ওয়ার্নার— মন বলছে, রবিবার এই একটা নাম নিয়েই শুধু ভাবতে হবে আরসিবিকে।

Advertisement

ফাইনালের দু’দিন আগে কোটলায় যে ওয়ার্নারকে দেখলাম, তার পর তো সানরাইজার্স ব্যাটিংয়ে আর কোনও নাম পাচ্ছি না। স্রেফ একা সুরেশ রায়নার টিমকে হারিয়ে দিল! কেকেআরের বিরুদ্ধে দু’টো ম্যাচে সুবিধে করতে পারেনি। কিন্তু এ দিন যা খেলল, অবিশ্বাস্য।

ব্যাটিং ছেড়ে দিলাম। ওকে উত্তেজিত করেও যে লাভ হবে না, সেটাও এ দিন বুঝিয়ে গেল ওয়ার্নার। হায়দরাবাদ ইনিংসের শেষের দিকটা বলছি। সতেরো নম্বর ওভারে ওয়ার্নারের দিকে প্রবীণ কুমার যখন তেড়ে গেল। গুজরাত পেসারের একটা ইয়র্ক লেংথ ডেলিভারি ব্লক করেছিল ওয়ার্নার। প্রবীণ হঠাৎই বলটা তুলে ওর দিকে ছুড়তে চেষ্টা করল। এক বার নয়, তিন বার। ওয়ার্নার উত্তেজিত হয়েছে ঠিকই। একটা কিছু বললও মনে হল প্রবীণকে। পাল্টা প্রবীণও তেড়ে গেল। কিন্তু লাভ হল না। মাথা গরম করিয়েও আউট করা গেল না অস্ট্রেলীয় ওপেনারকে। উল্টে ম্যাচ নিয়ে বেরিয়ে গেল।

Advertisement

ম্যাচটাও যথেষ্ট নাটকীয় হয়েছে। গুজরাত প্রথমে ব্যাট করে ঠিক সেই রানটাই তুলল, যেটা কেকেআর গত ম্যাচে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে তুলেছিল। একটা খচখচানি তাই ছিল যে, শেষ পর্যন্ত ওয়ার্নাররা পারবে কি না। একে তো ওদের ব্যাটিং প্রায় পুরোটাই ওয়ার্নার আর যুবরাজের উপর দাঁড়িয়ে। তা ছাড়া গুজরাত বোলিং মোটেই খারাপ নয়। ধবল কুলকার্নি আছে। যে কি না গত ম্যাচে আরসিবি ব্যাটিংকে একা কাঁপিয়ে দিয়েছিল। ডোয়েন ব্র্যাভো আছে, যে স্লোয়ার করে-করে ব্যাটসম্যানকে তিতিবিরক্ত করে ছাড়ে। প্রবীণ কুমারের পেস নেই, কিন্তু সুইং বোলিংটা এখনও অসাধারণ করে। সানরাইজার্স ইনিংস শুরু হওয়ার সময় তাই খুব নিশ্চিত ছিলাম না যে, ম্যাচটা হায়দরাবাদই জিতছে।

আর এত চাপের ম্যাচে শুরুতেই শিখর চলে গেল। কিছুক্ষণ পরে মোজেস এনরিকে, যুবরাজ— সবাই এক-এক করে আউট। শেষ দিকে দেখলাম, তিন ওভারে ৩৪ দরকার হায়দরাবাদের। গুজরাতের জয় আর হারের মধ্যে একমাত্র দাঁড়িয়ে তখন ওয়ার্নার। ও চলে গেলেই ম্যাচটা শেষ হয়ে যেত। কিন্তু সে সব তো হলই না, উল্টে ব্র্যাভোকে দু’টো বাউন্ডারি মেরে খেলাটা নিজের দিকে নিয়ে এল। প্রবীণের সঙ্গে ঝামেলার উত্তেজনা থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ দূরে রেখে। ওপেন করতে নেমে ৯৩ নটআউট থেকে যাওয়া তা-ও মাত্র ৫৮ বলে, এক কথায় অসাধারণ।

তবে ঘটনা হল, ওয়ার্নার যদি হায়দরাবাদের শক্তি হয়, তা হলে হায়দরাবাদ অধিনায়ক টিমটার দুর্বলতাও। আসলে বেশ কয়েকটা ম্যাচ ধরে দেখছি যে, ওয়ার্নার থেকে গেলে হায়দরাবাদ ম্যাচ নিয়ে চলে যাবে। না থাকলে, পারবে না। কোহালিদের তাই ফাইনালে ওকে সবার আগে ড্রেসিংরুমে ফেরত পাঠাতে হবে। এটা ঠিক যে আমি মনে করি, আরসিবি ব্যাটিং অনেক ভাল। কোহালি-ডে’ভিলিয়ার্স যে ফর্মে আছে, যে কোনও বোলিং ধ্বংস করে দেবে। যতই হায়দরাবাদে একটা ভুবনেশ্বর কুমার থাক। যতই একটা ট্রেন্ট বোল্ট বা মুস্তাফিজুর রহমান ফাইনালে খেলুক। ওয়ার্নারের ফর্ম দেখেও এটা বলব যে, আরসিবি এগিয়ে। শুধু ওই একটা কাঁটা সরাতে হবে। ডেভিড ওয়ার্নার থেকে গেলে কিন্তু কোহালি-এবির চেয়ে কম কিছু মারাত্মক হবে না।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: গুজরাত লায়ন্স ২০ ওভারে ১৬২-৭ (ফিঞ্চ ৫০, কাটিং ২-২০), সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ১৯.২ ওভারে ১৬৩-৬ (ওয়ার্নার ৯৩ ন.আ, কৌশিক ২-২২)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন