ভারত সিরিজে বাদ পাক আম্পায়ার

ক্রিকেট তো দূর অস্ত, এই সে দিন কবাডি বিশ্বকাপেও ওয়াঘার ও পার থেকে এ পারে আসার অনুমতি পায়নি পাকিস্তান দল। বলিউডের পাকিস্তানি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বয়কট করার প্রবল হাওয়া বইছে এ দেশের অনেক জায়গায়। ভারত-পাক রাজনৈতিক সম্পর্ক এতটাই তলানিতে ইদানীং!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:০১
Share:

আলিম দার: নিজেই ‘আউট’।

ক্রিকেট তো দূর অস্ত, এই সে দিন কবাডি বিশ্বকাপেও ওয়াঘার ও পার থেকে এ পারে আসার অনুমতি পায়নি পাকিস্তান দল। বলিউডের পাকিস্তানি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বয়কট করার প্রবল হাওয়া বইছে এ দেশের অনেক জায়গায়। ভারত-পাক রাজনৈতিক সম্পর্ক এতটাই তলানিতে ইদানীং!

Advertisement

সেখানে ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানি আম্পায়ার? আইসিসির এমন সিদ্ধান্তের যা পরিণতি অন্তত এই মুহূর্তে প্রায় ‘স্বাভাবিক’, আজ সেটাই ঘটল।

ভারতে তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যা হতে পারে— এই আশঙ্কায় পাকিস্তানের নামী আম্পায়ার আলিম দার-কে রাখা হল না আসন্ন ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে। তাঁকে পাঠানো হল অস্ট্রেলিয়ায়।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে খবর ছিল, প্রথম সারির আম্পায়ার আলিম দারকে রাখা হবে ভারতের সিরিজে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হাই প্রোফাইল সিরিজে তাঁর মতো অভিজ্ঞ আম্পায়ার থাকবেন, সেটাই তো স্বাভাবিক। রবিবারই এই সিরিজের আম্পায়ারদের তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল আইসিসি-র। তা প্রকাশ করাও হয়। কিন্তু দেখা যায় তাতে আলিম দারের নাম নেই। রয়েছে শ্রীলঙ্কার কুমার ধর্মসেনার নাম। আলিম দারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজে।

মুম্বইয়ে ২০১১ বিশ্বকাপে ভারত-শ্রীলঙ্কা ফাইনালে যিনি ছিলেন অন্যতম আম্পায়ার, পরের মাসে শুরু ভারত বনাম ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজে সেই আলিম দারের নাম দেখতে না পেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্নের ঝড় ওঠে দিওয়ালির সন্ধ্যায়। যাতে দুই দেশের সম্পর্কের প্রসঙ্গও চলে আসে বর্তমান প্রেক্ষিতে। ‘দেশভক্ত’রা যখন আলিম দারের বাদ পড়ার খবরে খুশি, সেখানে ‘ক্রিকেটপ্রেমী’রা অনেকেই আলিম দারকে আম্পায়ার হিসেবে না নেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘আনস্পোর্টিং’ আখ্যা দিচ্ছেন।

যদিও আইসিসি আলিম দারকে সরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে কোনও সরকারি বিবৃতি দেয়নি, তবে তিনি যে এই সিরিজে দায়িত্বে থাকতে পারেন, তেমন খবরই ছিল বলে জানাচ্ছে পাকিস্তানি মিডিয়া। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত দৈনিকের ওয়েবসাইট লিখছে, ভারতে তাঁর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, এমন আশঙ্কায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইসিসি। পাকিস্তানের এক ওয়েবসাইটেও তেমনই দাবি করা হয়েছে।

প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, ভারতে আলিম দারের নিরাপত্তা দেওয়া যাবে না, এমন কোনও বার্তা কি দেওয়া হয়েছিল ভারত সরকারের পক্ষ থেকে? ভারতীয় বোর্ড সূত্রে অবশ্য এ দিন সে রকম কিছু জানা যায়নি। এমনিতেই এ দিন দিওয়ালির উৎসবে ব্যস্ত ছিলেন অধিকাংশ বোর্ড কর্তা। দু-একজনকে যোগাযোগ করে পাওয়া গেলেও তাঁরা জানাচ্ছেন, বোর্ডের কাছে এমন কোনও বার্তা আসেনি আইসিসি-র পক্ষ থেকে। তা হলে আইসিসি নিজেরাই কী করে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল, এমন প্রশ্নও উঠছে টুইটার, ফেসবুকে।

প্রশ্ন শুধু আলিম দারকে নিয়েই নয়। ইংল্যান্ডের স্পিন বোলিং কোচ সাকলিন মুস্তাককে নিয়েও। প্রাক্তন পাকিস্তানি স্পিনারের ইংল্যান্ড দলের সঙ্গে ভারতে আসার কথা। কিন্তু ভারতে আসা পাকিস্তানিদের নিরাপত্তা নিয়ে যদি সত্যিই সমস্যা থাকে, তা হলে সাকলিনের নিরাপত্তাও তো বিঘ্নিত হতে পারে। সিরিজের চতুর্থ টেস্ট মুম্বইয়ে হওয়ার কথা। সেখানে সাকলিনকে ঢুকতে দেওয়া হবে কি না সেই প্রশ্নও এ দিন উঠেছে টুইটার, ফেসবুকে।

সোজা কথা, বলিউ়ের পরে এ বার ভারতীয় ক্রিকেটে পাকিস্তানিদের ‘অনুপ্রবেশ’ মেনে নেয় কি না এ দেশের কট্টরপন্থীরা, সেটাই দেখার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন