যে ভাবে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আমাদের ছেলেরা, মানে ভারতীয় দল খেলেছে, আমি ভীষণ গর্বিত। স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক আর জমজমাট পরিবেশের সামনে পড়ে হয়তো প্রথম ২০ মিনিট ওরা কিছুটা গুটিয়ে ছিল। তবে কিছুক্ষণ যাওয়ার পরেই ওদের বিপক্ষকে অতিরিক্ত সম্মান দেখানোর ব্যাপারটা চলে যায়।
আমার মনে হয়, বিরতি পর্যম্ত যদি ম্যাচটা গোলশূন্য রাখা যেত, তা হলে ম্যাচের ফলাফল অন্য রকম হতে পারত। পোনাল্টিতে গোলটা খাওয়ার পরেই কিন্তু আমাদের ছেলেরা খোলস ছেড়ে বেরিয়ে সেই খেলাটা খেলেছে যেটা দরকার ছিল।
আমি কোচ নই, তাই টেকনিক্যাল ব্যাপারটা আমি কোচের উপরেই ছেড়ে দিচ্ছি। তবে একজন ভক্তের চোখে আমি চেয়েছিলাম ভারতীয় দল আরও আক্রমণাত্মক খেলুক। চেয়েছিলাম ম্যাচটা যেন ওরা উপভোগ করতে পারে, আর ভয়ডরহীন থাকে। কারণ একটাই— ওদের এ ভাবে খেলার ক্ষমতা রয়েছে।
দ্বিতীয়ার্ধে কিন্তু একেবারে অন্য ছবি দেখা গিয়েছে। আমাদের ছেলেরা গোলের সুযোগ তৈরি করেছে। বল দখলে রেখে খেলার চেষ্টা করতেই কিন্তু ভারতীয় দলের চেহারাই বদলে গিয়েছিল। আবার বলছি, আমি কিন্তু স্রেফ একজন ভারতীয় দলের ভক্তের চোখে দেখে যা মনে হয়েছে সেটাই বলছি, টেকনিক্যাল দিক থেকে নয়। এই বিশ্বকাপে আমাদের লক্ষ্য হল, খোলা মনে খেলা, নিজেদের আরও ভাল করে চেনা, কোনও চাপে না পড়া।
ভারতীয় দলের হারানোর তো কিছু নেই। গোল খাওয়ার ভয় বা বিপক্ষ কত বেশি শক্তিশালী, এ সব মাথাতেই যেন তাই না আসে। ফুটবলে অপেক্ষা করতে থাকলে অনেক সময় যেটা চাইছি সেটা নাও হতে পারে। নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে সুযোগটা নিতে হয়।
এই স্টেডিয়াম, মানে জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে আমি অনেক ম্যাচই আগে খেলেছি। কিন্তু অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের উদ্বোধন ম্যাচের মতো পরিবেশ কখনও পাইনি। উৎসাহ, চিৎকার, রঙের ঝলকানি, সব মিলিয়ে অপূর্ব সব দৃশ্য দেখা গেল।
তবে একটা কথা বলতে চাই, আমাদের ভারতীয় দলের মধ্যে যে দারুণ একতা রয়েছে সেটা কিন্তু মাঠে ভাল করে বোঝা গিয়েছে। পরস্পরকে সাহায্য করার জন্য সবাই, সব সময় প্রস্তুত। এর পরের ম্যাচে ভারতের প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া কাগজে-কলমে প্রতিপক্ষের থেকে শক্তিশালী হলেও খেলাটা কিন্তু এগারো জন বনাম এগারো জনের।
গোটা দেশ ভারতীয় ছেলেদের পাশে আছে, আমরা শেষ পর্যন্ত উৎসাহ দিয়ে যাব।