India

করোনা-আতঙ্কের মধ্যেই ধর্মশালায় শুরু ওয়ান ডে দ্বৈরথ, বল পালিশে হয়তো নিষেধাজ্ঞা

এক দিকে বলের পালিশ ঠিক রেখে সুইং করানো। অন্য দিকে, বল পালিশ করতে গিয়ে করোনাভাইরাসের কোপে পড়ার আতঙ্ক।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২০ ০৬:১৯
Share:

লক্ষ্য: এ বার সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা। ধর্মশালায় ভারতের অনুশীলনে শিখর ধওয়ন, রবীন্দ্র জাডেজা, যশপ্রীত বুমরা, কুলদীপ যাদবেরা। বুধবার। এপি

ধর্মশালায় ক্রিকেট মানেই সুন্দর, মনোরম পরিবেশে বাইশ গজের লড়াই। কিন্তু ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজ শুরুর আগে ছবিটাই বদলে গিয়েছে। সুন্দর ধর্মশালায় এখন আতঙ্কের আঁচ। যে আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। এই করোনা-আতঙ্কের মধ্যেই, আজ, বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ান ডে দ্বৈরথ।

Advertisement

প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচের আগে দুই শিবিরেই সতর্কতার ছায়া। ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা— দু’দেশের বোর্ডের তরফেই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে ক্রিকেটারদের কাছে। পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, চিকিৎসকদের তৈরি করা নিয়মাবলি মেনে চলতে হবে ক্রিকেটারদের। যে কারণেই হয়তো এই সিরিজে দেখা যাবে না ক্রিকেট মাঠের অতিপরিচিত একটি দৃশ্য। থুতু দিয়ে বল পালিশ করা। কিন্তু কেন? মনে করা হচ্ছে থুতু দিয়ে বল পালিশ করার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে এসে এ কথাই জানিয়ে দিয়ে গেলেন ভারতীয় পেসার ভুবনেশ্বর কুমার। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেই।

এ দিন ভুবনেশ্বর বলেছেন, ‘‘থুতু দিয়ে বল পালিশ না করার ব্যাপারটা আমরা ভেবেছি। কিন্তু এখনই চূড়ান্ত কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যদি আমরা থুতু দিয়ে বলটা পালিশ না করি, তা হলে বলের পালিশ ধরে রাখব কী করে?’’ বলের পালিশ ঠিকঠাক ধরে রাখতে না পারলে যে সমস্যা হবে, তা পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে ভুবনেশ্বরের কথায়। ৩১ বছর বয়সি পেসার বলেছেন, ‘‘বলের পালিশ যদি ঠিক না থাকে, তা হলে তো আমরা মার খেয়ে যাব। তখন আপনারাই তো বলবেন, এরা ভাল বল করতে পারছে না।’’ চোট সারিয়ে বেশ কয়েক মাস পরে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন ভুবনেশ্বর। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর চিন্তাটা অনেক বেশি।

Advertisement

এক দিকে বলের পালিশ ঠিক রেখে সুইং করানো। অন্য দিকে, বল পালিশ করতে গিয়ে করোনাভাইরাসের কোপে পড়ার আতঙ্ক। এই দুইয়ের মাঝে এখন পড়েছেন ক্রিকেটাররা। ভুবনেশ্বর যেমন বলেই ফেলেছেন, ‘‘স্বাস্থ্যের দিকটাও ভাবতে হবে আমাদের। দেখা যাক টিম মিটিংয়ে কী হয়। আমাদের যে রকম নির্দেশ দেওয়া হবে বা যেটা সব চেয়ে ভাল মনে হবে, আমরা সেটাই করব। সব কিছুই নির্ভর করবে টিমের ডাক্তারের উপরে। দেখা যাক, ডাক্তার কী নির্দেশ দেন।’’

দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরেও নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেমন, ক্রিকেটাররা হয়তো করমর্দন করার রাস্তায় হাঁটবেন না। পাশাপাশি ভক্তদের সঙ্গে মেলামেশা বা নিজস্বী কি ছবি তোলার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড।

করোনাভাইরাসের আক্রমণ ঠেকানোর জন্য তাঁরা যা করার করবেন, তা জানাচ্ছেন ভুবনেশ্বর। কিন্তু করোনা-আতঙ্ক আইপিএলের উপরেও প্রভাব ফেলবে কি না, তা নিয়ে কিছু বলতে চান না এই ভারতীয় পেসার। সাংবাদিক বৈঠকে ভুবনেশ্বরকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এখনই এই নিয়ে কোনও কথা বলা সম্ভব নয়। ভারতে করোনাভাইরাসের কারণে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে আমরা সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’ ভুবনেশ্বর এ-ও বলেছেন, ‘‘আমাদের দলে একজন ডাক্তার আছেন। আমাদের কী করা উচিত আর না উচিত, তা নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন তিনি। তাই আশা করব, এখানে ওই ভাইরাস ছড়াবে না।’’

দক্ষিণ আফ্রিকাকে যেমন ভক্তদের থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে, তেমনই একই নির্দেশ এসেছে ভারতীয় দলের কাছেও। তাঁদের কী করতে বলা হয়েছে, তা নিয়ে ভুবনেশ্বরের মন্তব্য, ‘‘কিছু নির্দেশ আমরা পেয়েছি। যেমন পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে, নিয়মিত হাত ধুতে হবে আর ভক্তদের কাছাকাছি যাওয়া চলবে না, ইত্যাদি।’’ এর পরেই অবশ্য ভুবনেশ্বর বলে দিচ্ছেন, ভক্তদের থেকে দূরে থাকা মোটেই সহজ কাজ নয়। তাঁর কথায়, ‘‘ভক্তরা আমাদের ভালবাসে, আমাদের সমর্থন করে। ওদের এড়িয়ে চলা খুব কঠিন। আমরা চেষ্টা করব, ওদের খুব কাছাকাছি না যাওয়ার। দেখা যাক, কী হয়।’’ বিশ্ব জুড়ে করোনার প্রভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক প্রতিযোগিতা। কোথাও বা ফাঁকা মাঠে খেলা হচ্ছে। ক্রিকেট শেষ পর্যন্ত করোনার হাত থেকে বাঁচতে পারে কি না, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন