প্রি কোয়ার্টারে হেরে স্বপ্ন শেষ।-এএফপি
দীপা কর্মকার ছাড়া আরও এক বঙ্গসন্তান কিছু করে দেখাতে পারেন, এই আশায় বরাহনগর বসাক বাগানের অতনু দাসের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা বাংলা।
তিনি পারলেন না।
শ্যুটার গগন নারাঙ্গ, চেইন সিংহ, ডিসকাস থ্রোয়ার বিকাশ গৌড়ার ব্যর্থতার মিছিলে জুড়ে গেল তিরন্দাজ অতনুর নামও। সকাল থেকে এখানে প্রবল বৃষ্টি এবং তীব্র হাওয়া চলছে। তার মধ্যে খেলতে নেমে অতনু শেষ পর্যন্ত লড়াই করলেন বটে, কিন্তু শেষ দিকে তাঁর ছোড়াটা এত খারাপ হল যে দক্ষিণ কোরিয়ার লি সাং উং-এর কাছে হেরে গেলেন কোয়ার্টার ফাইনালে।
হেরে গিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রথম বার অলিম্পিক্সে এসেছি। মেডেল পাওয়ার জায়গায় ছিলাম। পারলাম না বলে কোনও অজুহাত দেব না। সবাই তো বৃষ্টি এবং হাওয়ার মধ্যেই ছুড়েছে। আমিও। পারিনি। আমি আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পরের বার চেষ্টা করতে হবে।’’ অতনু এখানে এসে গেমস ভিলেজে থাকেননি। ছিলেন হোটেলে।
ছেলেদের ব্যক্তিগত রিকার্ভে অতনু এ দিন পাঁচ সেটের মধ্যে একটি সেটে শুধু তিনটি দশ মেরেছেন। দ্বিতীয় সেটে। তাঁর পারফরম্যান্স দেখে গ্যালারিতে ওই বৃষ্টির মধ্যেও হইচই শুরু হয়ে গিয়েছিল। তিরন্দাজি হচ্ছে মূল শহর থেকে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরে। তা সত্ত্বেও এসেছিলেন অনেক দর্শক। কিন্তু পরের সেটগুলোয় বঙ্গসন্তান তিরন্দাজ তেমন সুবিধা করতে পারেননি। তা সত্ত্বেও শেষ সেটে দু’টো তির ছোড়ার পর পয়েন্ট হয়ে গিয়েছিল ১৯-১৯। এর পরের শটটা দশ মারতে পারলেই অতনু চলে যেতেন পরের পর্বে। তিনি নয় মারেন। দক্ষিণ কোরিয়ার লি সং উং রিকার্ভের টিম ইভেন্টে সোনা জিতিয়েছিলেন কোরিয়ান টিমকে।
তিরন্দাজিতে ভারতের পদক পাওয়ার সম্ভবনা শেষ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি যত দিন যাচ্ছে ততই শ্যুটিং থেকে পদকের আশাও কমছে। অভিনব বিন্দ্রা, গগন নারাঙ্গ, জিতু রাই, হিনা সিধু বিদায় নিয়েছেন। ব্যাডমিন্টনে জ্বালা গাট্টা আর অশ্বিনী পোনাপ্পা জুটি বিদায় নিল ফের হেরে। অ্যাথলেটিক্সের ইতিহাসে সবথেকে বড় দল এ বার রিওতে পাঠিয়েছে ভারত— ৩৫ জনের।
অথচ অ্যাথলেটিক্স শুরুর প্রথম দিনই হতাশার ছবি। ডিসকাস থ্রোয়ার বিকাশ গৌড়া ৩৪ জনের মধ্যে ২৮ নম্বর হলেন। ছুড়লেন ৫৮.৯৯। যা তাঁর জীবনের সেরা সময় নয়।
অতনুর পর বাঙালির অলিম্পিক্সের সলতে জ্বলে থাকল কয়েকটা। জিমন্যাস্ট দীপা, গলফার অনির্বাণ লাহিড়ী, শিবশঙ্কর চৌরাসিয়া, মেয়েদের রিলেতে রয়ে যাওয়া দেবশ্রী মজুমদার কী করেন তার দিকে তাকিয়ে সবাই।