সাইরাজ বাহুতুলে যে বাংলার কোচ হচ্ছে, সেটা আমি মিডিয়ার ফোন থেকে জানতে পারলাম। না, সিএবি থেকে কেউ আমাকে জানায়নি।
গত দু’বছর আমি বাংলার কোচ ছিলাম। এটা ঠিক যে বাংলাকে রঞ্জি আমি দিতে পারিনি। কিন্তু সেমিফাইনালে নিয়ে গিয়েছিলাম। বিজয় হাজারে ট্রফিতেও ভাল করেছে টিম। শুনলাম নয়াদিল্লিতে গিয়ে সৌরভ (গঙ্গোপাধ্যায়) সোমবার সরকারি ঘোষণা করেছে। বলেছে, বাহুতুলে কোচ। ঠিক আছে। এটা ওর চয়েস। ওর সিদ্ধান্ত। আমার সেটা নিয়ে কিছু বলার থাকতে পারে না। কিন্তু আমাকে তো অন্তত এটা বলা যেত যে, আপনার বদলে এ বার আমরা অন্য কাউকে ভাবছি।
বেশ কয়েক দিন ধরে বাংলার কোচ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন কাগজে প্রচুর লেখালেখি দেখছিলাম। বলা হচ্ছিল, যত নামই খোঁজাখুঁজি হোক শেষ পর্যন্ত আমিই থাকব কোচ। কিন্তু আমি জানতাম, থাকব না। কারণ এত দিনে সিএবি থেকে একটাও ফোন পাইনি। বুঝে গিয়েছিলাম যে, যদি আমাকে রাখার হত ফোন করে সেটা জানানো হত। আর একটা ব্যাপার দেখে খুব রাগ হত। শুনতাম লোকে বলছে, অশোক মলহোত্র ফিট নয়। ওর কোচিং করাতে সমস্যা হয় এখন। ঠিকমতো ফিল্ডিং প্র্যাকটিস দিতে পারে না। হাস্যকর কথা। আরে, কীসের সমস্যা? অপারেশন তো হয়েছে এক বছর আগে। তার সঙ্গে এখন কী সম্পর্ক? ওই একটা অপারেশনের জন্য আমি কি সারা জীবন আনফিট থাকব নাকি?
আসলে ওরা আমাকে আর রাখতে চায়নি। তাই এ সব কথাবার্তা বলেছে। বলেছে, আমি আর পারছি না। আমি আনফিট।
বাংলা কোচের যখন নাম ঘোষণা হচ্ছে, লক্ষ্মীরতন শুক্ল তখন বল নাচাচ্ছেন। পুরনো কোচের
মতো বাংলা অধিনায়কও নাম ঘোষণা নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিলেন। ছবি: উৎপল সরকার
কেউ কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, বাংলার এমন ব্যবহারে কতটা দুঃখ পেয়েছি। লোকে মনে করিয়ে দিচ্ছে, অশোক তুমি বাংলার ক্যাপ্টেন ছিলে। বহু দিন খেলেছ। কোচ হয়েছ। দুঃখ লাগছে না? কিন্তু কার উপর দুঃখ করব আমি? রাগ দেখিয়ে বা কষ্ট পেয়ে কোনও লাভ আছে? তাতে কিছু পাল্টাবে? আমি নিজে মনে করি যে বাংলার আরও এক বছর কোচিং আমার প্রাপ্য ছিল। কিন্তু সেটা তো আমি নিজে নিজে ঠিক করে ফেলতে পারি না। সিএবি থেকে যদি বলা হত অন্য কাউকে আমরা এ বার ভাবছি, আমি তো আটকাতে যেতাম না।
আর সাইরাজ নিয়েও বা কী বলব? শুনেছি কেরলে কোচিং করিয়েছে। সেটা তো কোনও হেভিওয়েট টিম ছিল না। যা-ই হোক, ও কেমন কোচ, কী করতে পারবে না পারবে, কোনও মন্তব্যে আমি যেতে চাই না। ওকে যখন নিয়ে আসা হয়েছে, ভাল কিছু ভেবেই আনা হয়েছে নিশ্চয়ই। সিএবি এনেছে। সিএবি বুঝবে।
গুড লাক, সাইরাজ!