পাকিস্তানের সামনে ভারতই এখন উদাহরণ

ভারতের কাছে পরপর দু’বার বিধ্বস্ত হওয়াটা পাকিস্তানের প্রাক্তন না বর্তমান ক্রিকেটার, কাদের বেশি যন্ত্রণা দিচ্ছে, বলা কঠিন। 

Advertisement

কৌশিক দাশ

দুবাই শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩২
Share:

মরিয়া: সমালোচনার মুখে পাক অধিনায়ক সরফরাজও। ফাইল চিত্র

ভারতের কাছে পরপর দু’বার বিধ্বস্ত হওয়াটা পাকিস্তানের প্রাক্তন না বর্তমান ক্রিকেটার, কাদের বেশি যন্ত্রণা দিচ্ছে, বলা কঠিন।

Advertisement

আগের দিনই ওয়াসিম আক্রম বেশ রাগত স্বরে বলছিলেন, ‘‘পাকিস্তানের ক্রিকেট সূচি কারা ঠিক করে বলুন তো? আইসিসি না পাক ক্রিকেট বোর্ড? ক্রিকেটের সম্প্রসারণ নিয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু পিসিবিকে এটা বুঝতে হবে, জিম্বাবোয়ে বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে খেলে আমাদের ক্রিকেটের কোনও উন্নতি হবে না। যার জন্য ভারতের সামনে পড়ে আমরা হেরে যাচ্ছি।’’

শোয়েব আখতারও রীতিমতো উত্তেজিত। একটি টিভি শোয়ে পাকিস্তানের বিপর্যয় নিয়ে প্রশ্ন শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন শোয়েব। বলেন, ‘‘ঠিক করে কথা বলুন। ভুলে যাবেন না আপনার সামনে কে বসে আছে।’’ শোয়েবের এই ঘটনা আবার পাক প্রচারমাধ্যমে বড় করে দেখানো হচ্ছে।

Advertisement

শুধু যে প্রাক্তন ক্রিকেটাররাই ক্ষুব্ধ, তা অবশ্যই নয়। ভারতের কাছে এই বিপর্যয় নিয়ে পাকিস্তানে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যেও তুমুল প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। কোচ মিকি আর্থার এবং অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই অবস্থায় পাকিস্তানের সামনে রাস্তা একটাই। আজ, বুধবার বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনালে যাওয়া। তার পর শুক্রবার ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপটা জেতা।

যে মিশনে নামার আগে ভারতীয় মডেলই অনুসরণ করতে চায় পাকিস্তান। অন্তত সে রকমই ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন এই এশিয়া কাপে পাকিস্তানের সব চেয়ে সফল ব্যাটসম্যান শোয়েব মালিক।

এশিয়া কাপ খেলতে আসার আগে পাকিস্তানের বোলিং নিয়ে অনেক চর্চা হয়েছে। বিশেষ করে মহম্মদ আমির, হাসান আলিদের পেস আক্রমণ বার বার উঠে এসেছে আলোচনায়। কিন্তু মাঠে নেমে চূড়ান্ত ব্যর্থ তাঁরা। সমস্যাটা কোথায়? সানিয়া মির্জার স্বামী বলছেন, ‘‘দেখুন, এমন হওয়া তো সম্ভব নয় যে কেউ প্রতিদিন ভাল খেলবে। তবে হ্যাঁ, আমাদের সমস্যা হচ্ছে। সেটাই ঠিক করতে হবে।’’

এর পরেই মালিক যোগ করেন, ‘‘ভারতের যশপ্রীত বুমরা এবং ভুবনেশ্বর কুমার কিন্তু খুব ভাল বল করে চলেছে। আমাদের বুমরা এবং ভুবনেশ্বরের বোলিং ভাল করে লক্ষ্য করতে হবে। ওরা কোথায় বলটা ফেলছে, সেটা দেখতে হবে। সবার কাছ থেকেই শেখা যায়। এমনকী যে পাঁচটা ম্যাচ খেলেছে, তার কাছ থেকেও শিখতে পারে দুশো ম্যাচ খেলা ক্রিকেটার।’’

এ তো গেল ভারতের পেস-মডেল অনুসরণ করার ইচ্ছে। শোয়েবের কথায় পরিষ্কার, ভারতের ক্রিকেট কাঠামোতেও নজর আছে পাকিস্তানের। শোয়েব তো বলেই দিলেন, ‘‘আমাদের ভারতীয় দলটাকে দেখতে হবে। কী ভাবে ভারত তরুণ ক্রিকেটার তুলে আনে, সেটাও মাথায় রাখতে হবে।’’

কিন্তু সেটা হল সুদূর ভবিষ্যতের পরিকল্পনা। বুধবার বাংলাদেশের কাছে হেরে বিদায় নিলে পাকিস্তান ক্রিকেটারদের যে তোপের মুখে পড়তে হবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। শোয়েব বলছেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট, দেশের ক্রিকেট বোর্ড, সবাই পাশে আছে। আমাদের এখন ভুলগুলো শুধরে নিতে হবে।’’

পাক বোর্ডের চেয়ারম্যান এহসান মানি রবিবারের ভারত ম্যাচের পরে ড্রেসিংরুমে এসে ক্রিকেটারদের সাহস জুগিয়েছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘‘মাঠে গিয়ে সেরাটা দাও। আর কিছু নিয়ে ভেবো না।’’

সেই সেরাটা বাংলাদেশের বিরুদ্ধেই দিতে চান শোয়েব মালিকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন