ট্রফির দৌড়ে পিছিয়েই চলেছে কলকাতা

রবিন, প্যাটারসন-দের সহজ সুযোগ নষ্ট করার মাশুল হিসেবে মেহতাব হোসেনদের  বিপক্ষে হেরেই ফিরতে হল অ্যাশলে ওয়েস্টউডের এটিকে-কে।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৮
Share:

হতাশ: হারের পরে এটিকের মার্টিন প্যাটারসন ও রবিন সিংহ। রবিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

এটিকে ০ : জামশেদপুর এফসি ১

Advertisement

দু’দলই এ বারের আইএসএল-এ পাঁচ ম্যাচে কোনও গোল খায়নি। তাই রবিবার রাতে যুবভারতীতে এটিকে বনাম জামশেদপুর এফসি-র ম্যাচটা ছিল এ বারের আইএসএল-এ রক্ষণ ভাগে সেরা দুই দলের লড়াই।

কিন্তু রক্ষণে সেরা হওয়া মানে তো এই নয়, যে গোলকিপারের সঙ্গে করমর্দনের দূরত্বে থাকা অবস্থায় সহজ সুযোগ নষ্ট করবেন এটিকে-র স্ট্রাইকার রবিন সিংহ!

Advertisement

ফলে রবিন, প্যাটারসন-দের সহজ সুযোগ নষ্ট করার মাশুল হিসেবে মেহতাব হোসেনদের বিপক্ষে হেরেই ফিরতে হল অ্যাশলে ওয়েস্টউডের এটিকে-কে। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ত্রিনদাদে গলসালভেজ-এর পেনাল্টি থেকে করা গোলে এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে ফের জয়ের সরণিতে ফিরে এল জামশেদপুর। যার অর্থ, দ্বাদশ রাউন্ডের পরে গত বারের চ্যাম্পিয়নরা ১২ পয়েন্ট নিয়ে রয়ে গেল আট নম্বরেই। অন্য দিকে, কলকাতায় এসে এটিকে-কে হারানোর পরে তেরো ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবল চতুর্থ স্থানে থাকা এফসি গোয়াকে ধরে ফেললেন সৌভিক চক্রবর্তীরা। কেবল গোলপার্থক্যে সুব্রত পালরা রয়ে গেলেন পঞ্চম স্থানে।

ম্যাচ শেষ এটিকে কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউড বলছিলেন, ‘‘প্রথম চারে থাকার রাস্তাটা কঠিন হয়ে গেল। বাকি ছয় ম্যাচের ছ’টাতেই জিততে হবে আমাদের। নিদেনপক্ষে পাঁচটা ম্যাচে জয় চাই আমাদের।’’

জামশেদপুর এফসি-র ব্রিটিশ কোচ স্টিভ কপেল-এর ফুটবল দর্শন হল সবার আগে বিপক্ষের গোল করার রাস্তা বন্ধ করতে হবে। তার পরে ঝাঁপাতে হবে গোল করে ম্যাচ জেতার জন্য। এ দিনও তিনি সেই থিওরি মেনেই এগোলেন। তবে জিতে মাঠ ছাড়ার পরেও তিনি এটিকে কোচের পাশে। বলে গেলেন, ‘‘কলকাতা খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ওদের বিদেশি ফুটবলারদের চোট। আর কে না জানে বিদেশিরাই সব দলের শক্তি।’’ তার পরেই বলে দেন, ‘‘আজ না জিতলে আমাদের অবস্থাও খারাপ হতে পারত।’’

আরও পড়ুন: আজ ফিরলেও মাঠে নামছেন না রবি কিন

এটিকে-র আগের কোচ টেডি শেরিংহ্যাম সরে যাওয়ার পরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়ে চেন্নাইয়ে অভিষেক বচ্চনের দলের কাছে হেরে ফিরেছিলেন অ্যাশলে ওয়েস্টউড। এ দিন ঘরের মাঠ যুবভারতীতে তিনি তিনটি বদল করেছিলেন। রায়ান টেলরের জায়গায় হিতেশ শর্মা, প্রবীর দাশের জায়গায় আশুতোষ মেহতা এবং শঙ্কর শাম্পিঙ্গিরাজের জায়গায় তিনি নামিয়ে দিয়েছিলেন রবিন সিংহ-কে। আর জামশেদপুর ঠিক এই তিন জায়গাতেই জাঁকিয়ে বসেছিল। আনাসদের রক্ষণ রবিন সিংহকে ডাবল কভারিংয়ে বলই ধরতে দিচ্ছিলেন না। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রবিন সিংহের গোল মিস। আর রক্ষণে গত বারের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন দল আইজল এফসি থেকে আসা ডিফেন্ডার ডিফেন্ডার আশুতোষ মেহতার দিক থেকেই বিকাশ জাইরুরা একের পর এক আক্রমণ শানাচ্ছিলেন। আর হিতেশ শর্মা দ্বিতীয়ার্ধে বক্সের মধ্যে বিপক্ষের ত্রিনদাদে-কে এমন অবৈধ ভাবে আটকালেন যে রেফারি উমেশ বরা পেনাল্টি দিতে দেরি করেননি।

ম্যাচ শেষে হতাশ মুখে ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন এটিকে কোচ অ্যাশলে ওয়েস্টউড। তাঁর কথায়, ‘‘পাঁচজন বিদেশিকেই পেলাম না। জেকিনহা, রায়ান টেলর, রবি কিন সবার চোট। ভারতীয়দের মধ্যে সেরা ফুটবলার ইউজেনসিন লিংডোও চোট পেয়ে বাইরে। এগুলোই ফ্যাক্টর হয়ে গেল।’’

শেরিংহ্যাম জমানায় জামশেদপুরে গিয়ে এই ম্যাচটা ড্র করে ফিরেছিল এটিকে। ম্যাচে এটিকের-র তরফে মনে রাখার মতো ঘটনা একটাই শেষ দিকে অ্যাশলে মাঠে নামিয়েছিলেন অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে নজর কাড়া ভারতীয় স্ট্রাইকার কোমল থাটালকে। তবে অভিষেক ম্যাচে অনূর্ধ্ব-১৭ স্তরে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে গোলদাতা একমাত্র ভারতীয় স্ট্রাইকারের তখন কিছু করার ছিল না।

এটিকে: দেবজিৎ মজুমদার, আশুতোষ মেটা, জর্ডি ফিগুয়েরাজ মন্তেল, কোনর থমাস, কিগান পেরিরা, হিতেশ শর্মা (বিপিন সিংহ), ডেভিড রিস জর্জ বেস্ট কটেরিল, রুপার্ট নোঙ্গরাম (সাইখম রোনাল্ড সিংহ), জয়েশ রানে (কোমল থাটাল), মার্টিন অ্যান্ড্রু প্যাটারসন, রবিন সিংহ।

জামশেদপুর এফসি : সুব্রত পাল, জোসে লুইস এস্পিনোজা, আনাস এডাথোডিকা, য়ুমনাম রাজু, সৌভিক চক্রবর্তী, ওয়েলিংটন প্রায়োরি, ত্রিনদাদে গনসালভেস (কারভেনস বেলফোর্ট), এমার্সন গোমেস দে মৌরা, বিকাশ জাইরু, আজুকা ইজু (আন্দ্রে বিকে), জেরি মাওয়াইমিঙ্গথাঙ্গা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন